ঢাকা, শুক্রবার, ২১ নভেম্বর ২০২৫
Sharenews24

যেভাবে অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্ট তৈরি হয়

২০২৫ আগস্ট ২২ ১১:৩০:২৩
যেভাবে অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্ট তৈরি হয়

নিজস্ব প্রতিবেদক: অ্যান্টিবায়োটিক এখন আর শুধু ডাক্তারের প্রেসক্রিপশনের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। হাতুড়ে ডাক্তার থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ পর্যন্ত সহজলভ্য হয়ে উঠেছে এই ওষুধ। একটু অসুস্থ বোধ করলেই চিকিৎসকের পরামর্শ না নিয়ে অনেকে গোগ্রাসে অ্যান্টিবায়োটিক খেতে শুরু করেন। এমনকি শিশুদের ক্ষেত্রেও অবস্থা কম নয়। সামান্য জ্বর হলে অনেক অভিভাবক তাদের সন্তানকে বোতল বোতল অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ান।

বাংলাদেশসহ অনেক তৃতীয় বিশ্বের দেশে মানুষের অজ্ঞতা ও দায়িত্বহীনতার কারণে অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স (প্রতিরোধ ক্ষমতা) তৈরি হচ্ছে।

ব্যাকটেরিয়া তাদের জেনেটিক মিউটেশনের মাধ্যমে অ্যান্টিবায়োটিকের বিরুদ্ধে রেজিস্ট্যান্ট বা প্রতিরোধী হয়ে ওঠে। একবার কোনো ব্যাকটেরিয়া রেজিস্ট্যান্ট হলে, তা বিভিন্ন উপায়ে অন্য ব্যাকটেরিয়াকেও রেজিস্ট্যান্ট করে দিতে পারে—যেমন প্লাসমিড বা জাম্পিং জিনের মাধ্যমে।

এমন ঘটনা ঘটে মূলত অ্যান্টিবায়োটিকের ভুল ব্যবহার থেকে। যেমন- ভুল ডোজ নেওয়া, পর্যাপ্ত সময় ওষুধ সেবন না করা, বা সঠিক অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার না করা। প্রথম দুটি ভুল আমরা নিজে সংশোধন করতে পারি, তবে সঠিক ওষুধ ব্যবহারের জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ ও প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা অপরিহার্য।

বিভিন্ন দেশে অ্যান্টিবায়োটিক চিকিৎসকের অনুমতি ছাড়া বিক্রি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। কিন্তু আমাদের দেশে আইন মেনে চলা কঠিন। উদাহরণস্বরূপ, টাইফয়েড জ্বরের জন্য এক সময় বেশ কার্যকর সিপ্রোফ্লক্সাসিন এখন আর কাজ করছে না, কারণ অনুমানের ভিত্তিতে ওষুধের অতিরিক্ত ও ভুল ব্যবহার এই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। এখন টাইফয়েডের চিকিৎসায় তৃতীয় প্রজন্মের সেফালোস্পোরিন গ্রুপের অ্যান্টিবায়োটিক দরকার হয়।

কখনো মুখে খাওয়ার ওষুধ কার্যকর না হলে শিরাপথেও ওষুধ দিতে হয়। এছাড়া, কম দামের অনেক অ্যান্টিবায়োটিক যেমন কোট্রাইমোক্সাজল, টেট্রাসাইক্লিন ইত্যাদির বিরুদ্ধে রেজিস্ট্যান্স দেখা গেছে। টিবি রোগীরাও ব্যাপকভাবে অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্সের শিকার হচ্ছেন।

করোনার চিকিৎসায় ব্যবহৃত অ্যাজিথ্রোমাইসিনের মতো শক্তিশালী অ্যান্টিবায়োটিকও অনিয়ন্ত্রিতভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে, যা উদ্বেগজনক।

কখনোই কম্পাউন্ডার বা সেলসম্যানের পরামর্শে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করবেন না। উদাহরণস্বরূপ, ডায়রিয়ায় মেট্রোনিডাজল, কফ-কাশিতে সেফ্রাডিন ইত্যাদি ওষুধ নিজের মতো খাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ এবং ভুল।

মনে রাখতে হবে, অ্যান্টিবায়োটিক রোগ নিরাময়ে বহু গবেষণা ও ট্রায়ালের পরই ব্যবহৃত হয়। সুতরাং, এগুলো যেন ‘মামুলি’ ওষুধের মতো ব্যবহৃত না হয়, সেদিকে সবার দৃষ্টি থাকা জরুরি।

জাহিদ/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

লাইফ স্টাইল এর সর্বশেষ খবর

লাইফ স্টাইল - এর সব খবর



রে