ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৩ জুলাই ২০২৫
Sharenews24

শিরোনাম

জাপানের সহযোগিতা বাড়াতে আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশে বিনিয়োগ, যুব উন্নয়ন, রোহিঙ্গা সংকট ও সামুদ্রিক অর্থনীতি খাতে সহযোগিতা জোরদারে জাপানের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বৃহস্পতিবার (০৩ জুলাই) ঢাকার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় জাইকার নির্বাহী সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মিয়াজাকি কাতসুরার সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি এই আহ্বান জানান। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, "জাপান সব সময় বাংলাদেশের একজন বিশ্বস্ত বন্ধু। সম্প্রতি জাপান সফরে গিয়ে আমরা আন্তরিক আতিথেয়তায় মুগ্ধ হয়েছি। জাপানের সঙ্গে আমাদের সহযোগিতা আরও গভীর করা এখন সময়ের দাবি।" বৈঠকে মিয়াজাকি কাতসুরা বলেন, “বাংলাদেশ আমাদের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। আমরা এ দেশের উন্নয়ন যাত্রায় সব সময় পাশে আছি।” তিনি জুলাই আন্দোলনে নিহত ও আহতদের প্রতি গভীর শোকও জানান। অধ্যাপক ইউনূস বৈঠকে মাতারবাড়ি প্রকল্পের গুরুত্ব তুলে ধরে একে বাংলাদেশের ভবিষ্যতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল বলে মন্তব্য করেন। তিনি জানান, বাংলাদেশ একটি সমুদ্রভিত্তিক অর্থনীতিতে রূপ নিতে চায়, যা বাস্তবায়নে জাপানের সহায়তা গুরুত্বপূর্ণ। শিক্ষা ও কর্মসংস্থানে তরুণদের সুযোগ বৃদ্ধির আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “অনেক তরুণ জাপানে কাজ করতে চায়, কিন্তু ভাষাগত প্রতিবন্ধকতা বড় সমস্যা। আমরা প্রস্তাব দিয়েছি, জাপানি শিক্ষকরা এখানে এসে কিংবা অনলাইনের মাধ্যমে ভাষা ও সংস্কৃতিগত প্রস্তুতি দিতে পারেন।” রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “হাজার হাজার তরুণ শরণার্থী শিবিরে বেড়ে উঠছে—আশাহীন, হতাশাগ্রস্ত ও ক্ষুব্ধ হয়ে। এই পরিস্থিতির স্থায়ী সমাধানে জাপানের মানবিক সহায়তা আরও প্রয়োজন।” বৈঠকে মিয়াজাকি জানান, ২০২৬ সালে এলডিসি থেকে উত্তরণের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে জাইকা বাংলাদেশের বিচার বিভাগ, প্রশাসন, স্থানীয় সরকার ও স্বাস্থ্য খাতে সংস্কারে সহায়তা দিচ্ছে। এছাড়া, আইসিটি খাতে মানবসম্পদ উন্নয়নে একটি নতুন প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে, যা দুই দেশের সরকার, বিশ্ববিদ্যালয় ও বেসরকারি খাত যৌথভাবে বাস্তবায়ন করবে। বৈঠকে ড. ইউনূস রেলপথ নির্মাণ, অর্থনৈতিক সংস্কার ও মানবসম্পদ উন্নয়নে জাপানের ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ঋণ ও অনুদানের জন্য ধন্যবাদ জানান। সেইসঙ্গে ওডিএ সীমা ৩০০ বিলিয়ন ইয়েন থেকে ৪৫০ বিলিয়ন ইয়েনে উন্নীত করার প্রস্তাব দেন। তিনি বলেন, “বাংলাদেশ জাপানের বন্ধুত্ব ও অবদান চিরকাল স্মরণে রাখবে।” মিরাজ/*** ব্যাংক খাতে ফিরছে বিনিয়োকারীরা, ৩০ ব্যাংকের ইউটার্ন*** সূচক ইতিবাচক রাখতে যেসব কোম্পানি অবদান রেখেছে*** সাবেক মন্ত্রীর পালানোর ছবি ঘিরে ভাইরাল পিনাকীর স্ট্যাটাস*** যে কারণে প্রধানমন্ত্রী  এখন সংস্কৃতিমন্ত্রী *** পদত্যাগ করলেন মম: উঠে এলো চাঞ্চল্যকর তথ্য*** বাংলাদেশকে দারুণ খবর দিল সুইডেন***

স্বামী-স্ত্রীর দ্বন্দ্ব কোরআনের আলোকে নিরসনের উপায়

২০২৫ এপ্রিল ২২ ১১:২৫:৩৩
স্বামী-স্ত্রীর দ্বন্দ্ব কোরআনের আলোকে নিরসনের উপায়

নিজস্ব প্রতিবেদক: স্বামী-স্ত্রীর দ্বন্দ্ব মহান আল্লাহর কাছে অতি জঘন্য আর শয়তানের অতি পছন্দের বিষয়। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সর্বদা ভালোবাসা, সম্প্রীতি ও সমঝোতা একান্ত কাম্য। অপরদিকে বিবাহবিচ্ছেদ বা তালাক-হালাল কাজগুলোর মধ্যে সবচেয়ে নিকৃষ্ট। স্বামী-স্ত্রীর পরস্পরে ভুল বুঝা-বুঝি বা একে অপরকে অসম্মান করার চূড়ান্ত পর্যায়ে বিবাহবিচ্ছেদ বা তালাকের ঘটনা ঘটে। এছাড়া পরকীয়া, স্ত্রীর উচ্চ বিলাসিতা ও স্বামীর আচরণেও অনেক সময় বিবাহ-বিচ্ছেদ হয়।

এ জন্য স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কখনো কোনো দ্বন্দ্ব তৈরি হলে প্রথমেই তা মিটিয়ে ফেলা উচিত। স্ত্রীদের পক্ষ থেকে স্বামীর অবাধ্যতা বা স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের ঝামেলা হলে সংশোধনের জন্য চারটি ধাপ রয়েছে। কোনটিতেই কাজ না হলে পঞ্চম ধাপে বিবাহ-বিচ্ছেদ বা তালাকের প্রসঙ্গ আসে। সেটি ঘৃণিত কাজ। আন্তরিক হলে প্রথম চারটি ধাপেই সমাধান হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।

স্বামী-স্ত্রীর দ্বন্দ্ব শয়তানের অতি পছন্দের : স্বামী-স্ত্রীর দ্বন্দ্ব শয়তানের অতি পছন্দের। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটলে তার আনন্দের সীমা থাকে না। জাবির (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, 'ইবলিস শয়তান সমুদ্রের পানির ওপর তার সিংহাসন স্থাপন করে। অতঃপর মানুষের মধ্যে ফিতনা-ফ্যাসাদ সৃষ্টি করার জন্য সেখান থেকে তার বাহিনী চারদিকে প্রেরণ করে। এদের মধ্যে সে শয়তানই তার কাছে সর্বাধিক সম্মানিত যে মানুষকে সবচেয়ে বেশি ফিতনায় নিপতিত করতে পারে। তাদের মধ্যে একজন ফিরে এসে বলে, আমি এরূপ এরূপ ফিতনা মানুষের মধ্যে সৃষ্টি করেছি। তখন সে (ইবলিস) প্রত্যুত্তরে বলে, তুমি কিছুই করনি। তিনি (সা.) বলেন, অতঃপর এদের অপর একজন এসে বলে, আমি মানব সন্তানকে ছেড়ে দিইনি, এমনকি দম্পতির মধ্যে সম্পর্কচ্ছেদ করে দিয়েছি। তিনি (সা.) বলেন, শয়তান এ কথা শুনে তাকে কাছে বসায় আর বলে∏তুমিই উত্তম কাজ করেছো। বর্ণনাকারী বলেন, আমার মনে হয় জাবির (রা.) এটাও বলেছেন যে, 'অতঃপর ইবলিস তার সাথে আলিঙ্গন করে'। (মুসলিম, হাদিস : ৭২৮৪)

স্বামী-স্ত্রীর দ্বন্দ্ব নিরসনের চারটি ধাপ : স্বামীর অবাধ্যতা বা স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের টানাপোড়েনের ক্ষেত্রে সংশোধনের চারটি ধাপ রয়েছে।

প্রথম ধাপ- তাদের নরমভাবে বোঝাতে হবে। স্বাভাবিক ভুল বোঝাবুঝি বা সামান্য ঝামেলা হলে নরমভাবে বোঝালে স্বামী-স্ত্রীর ভালোবাসায় তা কেটে যাবে।

দ্বিতীয় ধাপ- তাদের বিছানা নিজের থেকে পৃথক করে দেওয়া। এই পৃথকতার মাধ্যমে সে স্বামীর অসন্তুষ্টি উপলব্ধি করে নিজের কৃতকর্মের জন্য অনুতপ্ত হতে পারে।

তৃতীয় ধাপ- তাতেও সংশোধন না হলে মৃদু শাসন করা যাবে। তবে মারপিট রাসুলুল্লাহ (সা.)-আরে পছন্দ নয়। [ইবন হিব্বান, হাদিস : ৪১৮৯, আবু দাউদ, হাদিস : ২১৪৬, ইবন মাজাহ, হাদিস : ১৯৮৫]

চতুর্থ ধাপ- উল্লিখিত তিনটি ব্যবস্থার কোনোটিই ফলপ্রসূ না হলে উভয় পক্ষের মুরুব্বি-অভিভাবক অথবা মুসলিমদের কোনো শক্তিশালী সংস্থা তাদের (অর্থাৎ স্বামী-স্ত্রীর) মধ্যে আপস করিয়ে দেওয়ার জন্য (স্বামীর পরিবার থেকে একজন এবং স্ত্রীর পরিবার থেকে একজন) দুজন বিজ্ঞ, বিশ্বস্ত ও দ্বীনদার সালিশ নির্ধারণ করে দেবে। তারা তাদের মধ্যে মীমাংসা করার ব্যবস্থা করবে।

এসব বিষয়গুলো কোরআনে বিস্তারিতভাবে বর্ণিত হয়েছে। আল্লাহ বলেন, 'আর স্ত্রীদের মধ্যে যাদের অবাধ্যতার আশংকা কর তাদের সদুপদেশ দাও, তারপর তাদের শয্যা বর্জন করো এবং তাদের মৃদু প্রহার কর। যদি তারা তোমাদের অনুগত হয় তবে তাদের বিরুদ্ধে কোনো পথ অন্বেষণ করো না। নিশ্চয় আল্লাহ শ্রেষ্ঠ, মহান। আর তাদের উভয়ের মধ্যে বিরোধ আশংকা করলে তোমরা স্বামীর পরিবার থেকে একজন এবং স্ত্রীর পরিবার থেকে একজন সালিশ নিযুক্ত করো; তারা উভয়ে নিষ্পত্তি চাইলে আল্লাহ তাদের মধ্যে মীমাংসার অনুকূল অবস্থা সৃষ্টি করবেন। নিশ্চয় আল্লাহ সর্বজ্ঞ, সবিশেষ অবহিত।' (সুরা নিসা, আয়াত : ৩৪-৩৫)

বিবাহ-বিচ্ছেদ বা তালাক এড়িয়ে চলা : বিবাহ-বিচ্ছেদ মানব জীবনের সবচেয়ে নিকৃষ্টতম হালাল কাজ। স্বামী-স্ত্রীর বিচ্ছেদ ইসলামে কোনভাবেই কাম্য নয়। সর্বাবস্থায় নর-নারী প্রত্যেকেরই তা পরিহার করাই সর্বোত্তম পন্থা। ইবনু ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেন, 'আল্লাহ তাআলার কাছে সর্বাপেক্ষা নিকৃষ্ট হালাল কাজ হলো তালাক।' (আবু দাউদ, হাদিস : ২১৭৮)

পরিশেষে বলা যায়, স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক পবিত্র, পরিচ্ছন্ন এবং সৃষ্টিগত। এ সম্পর্ক দুনিয়াতে শুরু হলেও দ্বীনদার হলে জান্নাতে অনন্ত কালের জন্য আবার মিলিত হওয়া যায়। এ সম্পর্কের ভেতর যেন কোনোভাবেই ভাঙ্গন না ধরে এ ব্যাপারে খুব সচেতন হওয়া উচিত।

মুসআব/

পাঠকের মতামত:

লাইফ স্টাইল এর সর্বশেষ খবর

লাইফ স্টাইল - এর সব খবর



রে