ঢাকা, সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫
Sharenews24

নতুন যুগের সূচনা করে রেনাটা'র প্রেফারেন্স শেয়ারের লেনদেন শুরু

২০২৫ ডিসেম্বর ১৫ ১৭:৩৪:৪০
নতুন যুগের সূচনা করে রেনাটা'র প্রেফারেন্স শেয়ারের লেনদেন শুরু

নিজস্ব প্রতিবেদক: ঐতিহাসিক এক মুহূর্তের সাক্ষী হলো দেশের পুঁজিবাজার। আজ সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫ তারিখ দুপুর ১২টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) অল্টারনেটিভ ট্রেডিং বোর্ডে (এটিবি) প্রথমবারের মতো ফার্মাসিউটিক্যাল জায়ান্ট রেনাটা পিএলসি কর্তৃক ইস্যুকৃত প্রেফারেন্স শেয়ারের আনুষ্ঠানিক লেনদেন শুরু হয়েছে। এই লেনদেন শুরুর মাধ্যমে ডিএসই’তে একটি নতুন হাইব্রিড আর্থিক উপকরণের যুগ শুরু হলো।

এ উপলক্ষে ডিএসই’র ট্রেনিং একাডেমী, নিকুঞ্জে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। যেখানে ডিএসই’র চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম এবং রেনাটা পিএলসি’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও সৈয়দ এস কায়সার কবির উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠান চলাকালে ডিএসই ও রেনাটা পিএলসি’র মধ্যে তালিকাভুক্তিকরণ সংক্রান্ত একটি চুক্তিও স্বাক্ষরিত হয়। ডিএসই’র পক্ষে প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা ও ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আসাদুর রহমান, এফসিএস এবং রেনাটার পক্ষে ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও সৈয়দ এস কায়সার কবির চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।

এসময় উপস্থিত ছিলেন রেনাটা পিএলসি’র প্রধান অর্থ কর্মকর্তা মোস্তফা আলিম আওলাদ, কোম্পানি সেক্রেটারী মোঃ জুবায়ের আলম, ইস্যু ম্যানেজার সিটি ব্যাংক ক্যাপিটাল-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মোঃ সোহেল হক।

অনুষ্ঠানে ডিএসই’র প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা ও ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আসাদুর রহমান বলেন, রেনাটা পিএলসি’র প্রেফারেন্স শেয়ার তালিকাভুক্তির মাধ্যমে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে একটি নতুন প্রোডাক্টে লেনদেনের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এ উদ্যোগের জন্য তিনি রেনাটা পিএলসি কে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। তিনি উল্লেখ করেন, এই প্রথম প্রেফারেন্স শেয়ারকে ইক্যুইটি সিকিউরিটিজ হিসেবে ডিএসই’র অল্টারনেটিভ ট্রেডিং বোর্ডে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে, যা বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে একটি গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।

তিনি বলেন, প্রেফারেন্স শেয়ার এমন একটি সিকিউরিটিজ যেখানে ইক্যুইটি ও ডেট-উভয় সিকিউরিটিজের বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান থাকায় একে হাইব্রিড সিকিউরিটিজ বলা হয়। ডিএসই’র অল্টারনেটিভ ট্রেডিং বোর্ড গঠনের ফলে সাধারণ শেয়ারের বাইরে এ ধরনের হাইব্রিড ইন্সট্রুমেন্ট তালিকাভুক্তির সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে, যার মাধ্যমে পুঁজি উত্তোলনের ক্ষেত্রে একটি নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, রেনাটা তাদের লেভারেজ রেশিও বজায় রাখার লক্ষ্যে কৌশলগতভাবে এই হাইব্রিড ইন্সট্রুমেন্ট ইস্যু করেছে, যার মাধ্যমে কোম্পানি ইক্যুইটি ও ডেটের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখতে পারছে। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, রেনাটার প্রেফারেন্স শেয়ার তালিকাভুক্তির এই দৃষ্টান্ত অন্যান্য ইস্যুয়ার কোম্পানিকেও প্রেফারেন্স শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে প্রয়োজনীয় পুঁজি উত্তোলনে উত্সাহিত করবে। এর ফলে ইস্যুয়ার ও বিনিয়োগকারী উভয়ই উপকৃত হবে এবং সামগ্রিকভাবে দেশের পুঁজিবাজারের সম্প্রসারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

রেনাটা পিএলসি’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ এস কায়সার কবির বলেন, প্রেফারেন্স শেয়ার ইস্যুর পেছনে একটি জটিল ও চ্যালেঞ্জপূর্ণ প্রক্রিয়া কাজ করে, যা মোটেও সহজ নয়। রেনাটার ক্ষেত্রে মুদ্রার আকস্মিক ও বড় ধরনের অবমূল্যায়নের ফলে কোম্পানির পরিকল্পিত বিনিয়োগ ব্যয় উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যায়। যেখানে প্রাথমিকভাবে বিনিয়োগের পরিমাণ প্রায় ১,০০০ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল, সেখানে তা বেড়ে দাঁড়ায় প্রায় ১,৫০০ কোটি টাকায়, যা ছিল সম্পূর্ণ অনাকাঙ্ক্ষিত।

তিনি বলেন, খুব অল্প সময়ের মধ্যেই এই অবমূল্যায়ন ঘটায় রেনাটাকে বাধ্য হয়ে ঋণের ওপর নির্ভর করতে হয়, যদিও প্রতিষ্ঠানটি দীর্ঘদিন ধরে কার্যত ঋণমুক্ত অবস্থায় ছিল। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য রেনাটা সচেতনভাবে একটি বিকল্প অর্থায়ন কাঠামোর সিদ্ধান্ত নেয়। রাইট শেয়ার ইস্যু করলে সংখ্যাগরিষ্ঠ শেয়ারহোল্ডারের মালিকানা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেত বিধায় প্রেফারেন্স শেয়ার ইস্যুকে উপযুক্ত সমাধান হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কারণ, প্রেফারেন্স শেয়ার ভোটাধিকারবিহীন এবং এতে অংশগ্রহণ সত্ত্বেও মালিকানায় বড় ধরনের ডাইলিউশন ঘটে না।

সৈয়দ এস কায়সার কবির আরও বলেন, প্রেফারেন্স শেয়ারের লভ্যাংশ হার ট্রেজারি বন্ডের রেফারেন্স রেটের ভিত্তিতে নির্ধারণ করা হয়েছে, যা সাধারণভাবে ঝুঁকিমুক্ত বিনিয়োগ হিসেবে বিবেচিত। তবে এটি একটি নতুন ধরনের আর্থিক উপকরণ হওয়ায় এর বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ায় প্রায় নয় মাস সময় লেগেছে। এ সময়ের মধ্যে ট্রেজারি বন্ডের সুদের হার কমে গেলেও প্রেফারেন্স শেয়ারের কার্যকর রিটার্ন প্রায় ১৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছে, যা বিনিয়োগকারীদের জন্য অত্যন্ত আকর্ষণীয় হয়েছে।

তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, আগামী এক থেকে দুই বছরের মধ্যে রেনাটার আর্থিক অবস্থান দৃশ্যমানভাবে উন্নত হবে। একসময় রেনাটার পরিচয় ছিল ঋণমুক্ত অবস্থান ও শক্তিশালী নেট মার্জিন, এবং সেই অবস্থানে ফিরে যাওয়ার পূর্বশর্তই ছিল ঋণের চাপ কমানো।

তিনি বলেন, প্রেফারেন্স শেয়ার মূলত ঝুঁকি ভাগাভাগির একটি কার্যকর উপায়—লাভ না হলে লভ্যাংশ প্রদানের কোনো বাধ্যবাধকতা থাকে না। ক্যাপিটাল মার্কেটে তাই আইপিও বা রাইট শেয়ারই একমাত্র অর্থায়নের পথ হতে পারে না। মূলধন কাঠামোকে বৈচিত্র্যময় করতে বিকল্প ও উদ্ভাবনী আর্থিক উপকরণ থাকা জরুরি। তিনি আশা প্রকাশ করেন, ভবিষ্যতে আরও ইনোভেটিভ ফাইন্যান্সিয়াল ইনস্ট্রুমেন্ট বাজারে আসবে, যা কোম্পানিগুলোর সুস্থ ও টেকসই ব্যালেন্স শীট গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম বলেন, ক্যাপিটাল মার্কেটে স্টক এক্সচেঞ্জের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হলেও এখনো প্রতিষ্ঠান ও বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে কাঙ্ক্ষিত আস্থাভিত্তিক ও কাস্টমার-সেন্ট্রিক সম্পর্ক পুরোপুরি গড়ে ওঠেনি। তবে বিদ্যমান সংস্কৃতি ভেঙে আরও কার্যকর, স্বচ্ছ ও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের লক্ষ্যে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, রেনাটা পিএলসি’র প্রেফারেন্স শেয়ার ইস্যুর ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানের দীর্ঘ কমপ্লায়েন্স ইতিহাস, শক্তিশালী করপোরেট গভর্নেন্স এবং সুসংগঠিত শেয়ারহোল্ডিং কাঠামোর কারণে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হয়েছিল। তা সত্ত্বেও বিএসইসি ও ডিএসই’র সম্মিলিত অনুমোদন প্রক্রিয়ায় কিছুটা সময় লেগেছে। ভবিষ্যতে নতুন রেগুলেশন প্রণয়ন, প্রক্রিয়াগত সংস্কার এবং ডিজিটালাইজেশনের মাধ্যমে এ ধরনের অনুমোদন আরও দ্রুত, সহজ ও কার্যকর করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

ডিএসই চেয়ারম্যান আরও বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কোভিড-১৯ পরবর্তী অভিঘাত, ভূরাজনৈতিক অস্থিরতা, ম্যাক্রোইকোনমিক চাপ, মুদ্রার অবমূল্যায়ন ও সুদের হার বৃদ্ধির কারণে অনেক সুপরিচালিত প্রতিষ্ঠানের আর্থিক ভিত্তি দুর্বল হয়েছে এবং ঋণের চাপ বেড়েছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে ব্যাংকনির্ভরতা কমিয়ে ক্যাপিটাল মার্কেটকে আরও সক্রিয়ভাবে ব্যবহার করা জরুরি। এক্ষেত্রে অর্ডিনারি শেয়ার, প্রেফারেন্স শেয়ার ও দীর্ঘমেয়াদি ডেট ইনস্ট্রুমেন্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। রেনাটার এই উদ্যোগ একটি ইতিবাচক উদাহরণ, যা অন্য কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধাপে ধাপে ঋণের চাপ কমিয়ে আর্থিক স্থিতিশীলতায় ফিরে আসতে উত্সাহিত করবে।

তিনি উল্লেখ করেন, বড় কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য প্রেফারেন্স শেয়ার ও বন্ড নিয়মিত ও পুনরাবৃত্তিমূলক অর্থায়নের একটি কার্যকর মাধ্যম। ভবিষ্যতে এ ধরনের ইন্সট্রুমেন্ট ইস্যুর ক্ষেত্রে বাজার প্রতিষ্ঠানগুলোর রিপেমেন্ট কমপ্লায়েন্স দায়বদ্ধতা মূল্যায়ন করবে, যার ফলে এসব ইন্সট্রুমেন্টের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা আরও বৃদ্ধি পাবে। ডিএসই’র লক্ষ্য হলো ব্যাংকিং সেক্টরের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা কমিয়ে পুঁজিবাজারভিত্তিক অর্থায়ন জোরদার করা, যা বেসরকারি ও রাষ্ট্রায়ত্ত—উভয় ধরনের প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য।

তিনি আরও জানান, এ লক্ষ্য বাস্তবায়নে ডিএসই, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি), বাংলাদেশ সরকার, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং মার্চেন্ট ব্যাংক, ব্রোকারেজ হাউস ও ব্যাংকসহ অন্যান্য ইন্টারমিডিয়ারির সঙ্গে ধারাবাহিক আলোচনা চলছে। একই সঙ্গে ইস্যুকারী কোম্পানি ও শিল্পভিত্তিক অ্যাসোসিয়েশনগুলোর সঙ্গে সরাসরি সংলাপের মাধ্যমে বিদ্যমান নীতিগত ও প্রক্রিয়াগত জটিলতা চিহ্নিত করে সমাধানে একযোগে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।

ডিএসই চেয়ারম্যান বলেন, পুঁজিবাজারের মূল বোর্ডের পাশাপাশি অল্টারনেটিভ ট্রেডিং বোর্ড (এটিবি) একটি কার্যকর প্ল্যাটফর্ম, যেখানে ফাস্ট-ট্র্যাক লিস্টিং সুবিধা ও বিশেষায়িত বিনিয়োগকারীদের জন্য অনুকূল কাঠামো রয়েছে। কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোকে এটিবিতে তালিকাভুক্ত করতে উত্সাহিত করার লক্ষ্যে বাজারে সচেতনতা বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, রেনাটা পিএলসি প্রাইভেট প্লেসমেন্টের মাধ্যমে প্রেফারেন্স শেয়ার ইস্যু করে মোট ৩২৫ কোটি টাকা উত্তোলন করেছে। এই প্রেফারেন্স শেয়ার একটি নন-কিউমুলেটিভ, নন-পার্টিসিপেটিভ এবং সম্পূর্ণরূপে সাধারণ শেয়ারে রূপান্তরযোগ্য শেয়ার। প্রতিটি প্রেফারেন্স শেয়ারের মূল্য ১,৯০০ টাকা।

এই প্রেফারেন্স শেয়ারের মেয়াদ সংশ্লিষ্ট সাবস্ক্রিপশন সমাপ্তির তারিখ, অর্থাৎ ১৯ অক্টোবর ২০২৫ থেকে ৬ বছর পর্যন্ত (২০২৫–২০৩১)। তৃতীয় বছরের শেষ থেকে শুরু করে প্রতি বছর ১টি করে মোট ৪টি ধাপে প্রেফারেন্স শেয়ারগুলো নির্ধারিত ৪৭৫ টাকা শেয়ার রূপান্তর মূল্যে সাধারণ শেয়ারে রূপান্তরিত হবে। ফলে তৃতীয় বছরের শেষ থেকে প্রতি বছর এটিবিতে তালিকাভুক্ত এই প্রেফারেন্স শেয়ারের মূল্য ১,৯০০ টাকা থেকে ধাপে ধাপে ৪৭৫ টাকা করে হ্রাস পাবে।সাধারণ শেয়ারে রূপান্তরিত না হওয়া বিনিয়োগের অংশের বিপরীতে প্রেফারেন্স শেয়ার হোল্ডারগণ প্রতি বছর নির্দিষ্ট ১৫ শতাংশ হারে (পর্যাপ্ত কর-পরবর্তী নিট মুনাফা বিদ্যমান থাকলে) লভ্যাংশ প্রাপ্ত হবেন।

রেনাটা পিএলসি’র প্রেফারেন্স শেয়ারসহ ডিএসই এটিবি প্লাটফর্মে এখন পর্যন্ত ২টি ইক্যুইটি এবং ৭টি বন্ড তালিকাভুক্ত রয়েছে।

এমজে/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে