ঢাকা, সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫
Sharenews24

শীতের শুরুতেই ঢাকার বাতাস বিপজ্জনক পর্যায়ে

২০২৫ ডিসেম্বর ১৫ ১০:২৮:১৮
শীতের শুরুতেই ঢাকার বাতাস বিপজ্জনক পর্যায়ে

নিজস্ব প্রতিবেদক: অগ্রহায়ণের শেষ দিনে শীতের হালকা আমেজ থাকলেও ঢাকার বাতাসে স্বস্তি নেই। শুষ্ক মৌসুম শুরু হতেই রাজধানীতে বেড়েছে বায়ুদূষণের মাত্রা। বায়ুমান পর্যবেক্ষণকারী সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ার–এর তালিকায় বিশ্বের ১২৭টি দেশের দূষিত শহরের মধ্যে আজ সোমবার ঢাকার অবস্থান ৮ম।

সকাল ৮টা ৪৩ মিনিটে নেওয়া পরিমাপ অনুযায়ী ঢাকার বায়ুমান সূচক (একিউআই) দাঁড়িয়েছে ১৫৮, যা ‘সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে চিহ্নিত। এই মাত্রার দূষণ দীর্ঘ সময় স্থায়ী হলে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর জন্য মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করতে পারে।

আইকিউএয়ার নিয়মিতভাবে বাতাসের গুণমান সূচকের মাধ্যমে বিভিন্ন শহরের দূষণ পরিস্থিতি প্রকাশ করে। সংস্থাটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকার বাতাসে অতিক্ষুদ্র ধূলিকণাই দূষণের প্রধান উৎস। এসব কণা শ্বাসতন্ত্রের রোগ, হৃদ্‌রোগ এবং দীর্ঘমেয়াদে ক্যানসারের মতো জটিল সমস্যার ঝুঁকি বাড়ায়।

এদিকে টানা কয়েক দিনের মতো আজও দূষণের শীর্ষে রয়েছে ভারতের রাজধানী দিল্লি। শহরটির একিউআই স্কোর ৩৪৬, যা ‘দুর্যোগপূর্ণ’ বাতাসের নির্দেশক।

দূষণের শীর্ষ পাঁচ শহরের তালিকায় আরও রয়েছে পাকিস্তানের করাচি, কুয়েতের কুয়েত সিটি, মিশরের কায়রো এবং পাকিস্তানের লাহোর। শহরগুলোর একিউআই স্কোর যথাক্রমে ২০১, ১৮৯, ১৮৯ ও ১৮১।

বৈশ্বিক মানদণ্ড অনুযায়ী, একিউআই ৫০-এর নিচে থাকলে বাতাস ভালো হিসেবে বিবেচিত হয়। ৫১ থেকে ১০০ পর্যন্ত সহনীয়, ১০১ থেকে ১৫০ সংবেদনশীল মানুষের জন্য অস্বাস্থ্যকর, ১৫১ থেকে ২০০ সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর, ২০১ থেকে ৩০০ খুব অস্বাস্থ্যকর এবং ৩০০ ছাড়ালে বাতাসকে দুর্যোগপূর্ণ বলা হয়।

বায়ুদূষণের ভয়াবহ প্রভাব উঠে এসেছে বিভিন্ন গবেষণায়। ২০২৩ সালের নভেম্বরে ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নাল–এ প্রকাশিত এক গবেষণায় বলা হয়েছে, জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে সৃষ্ট বায়ুদূষণের কারণে প্রতিবছর বিশ্বজুড়ে প্রায় ৫২ লাখ মানুষের মৃত্যু ঘটে।

এ ছাড়া বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, গৃহস্থালি ও পারিপার্শ্বিক বায়ুদূষণের সম্মিলিত প্রভাবে প্রতিবছর বিশ্বে প্রায় ৬৭ লাখ মানুষের প্রাণহানি হয়।

দীর্ঘদিন ধরে ঢাকার বাতাস অতিমাত্রায় দূষিত থাকায় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় বাইরে বের হলে সবাইকে মাস্ক ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছে। বিশেষ করে শিশু, বয়স্ক এবং শ্বাসকষ্টে ভোগা ব্যক্তিদের অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে।

একই সঙ্গে ইটভাটা ও শিল্পকারখানার মালিকদের দূষণ নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া, নির্মাণস্থলে ছাউনি ও বেষ্টনী ব্যবহার, বালু ও নির্মাণসামগ্রী ঢেকে রাখা, পরিবহনকালে ট্রাক ও লরি ঢেকে নেওয়া এবং দিনে অন্তত দুইবার পানি ছিটানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি পুরোনো ও ধোঁয়া নির্গত করা যানবাহন সড়কে চলাচল সীমিত করার কথাও বলা হয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বর্তমান বায়ু পরিস্থিতিতে শিশু, বয়স্ক ও হৃদ্‌রোগ বা শ্বাসতন্ত্রের রোগীদের বাইরে যাওয়া এড়িয়ে চলাই নিরাপদ। সুস্থ ব্যক্তিদেরও বাইরে থাকার সময় কমানো এবং ভারী শারীরিক পরিশ্রম থেকে বিরত থাকা উচিত। প্রয়োজনে বাইরে গেলে মানসম্মত মাস্ক ব্যবহার এবং ঘরের ভেতরে বিশুদ্ধ বাতাস নিশ্চিত করতে এয়ার পিউরিফায়ার ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

এমজে/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে