ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৯ আগস্ট ২০২৫
Sharenews24

সাইপ্রাসে অভিযান চলাকালে ৫ তলা থেকে লাফিয়ে বাংলাদেশির মৃত্যু

২০২৪ এপ্রিল ১৩ ১০:৩৩:২৭
সাইপ্রাসে অভিযান চলাকালে ৫ তলা থেকে লাফিয়ে বাংলাদেশির মৃত্যু

প্রবাস ডেস্ক : সাইপ্রাসে অনিয়মিত অভিবাসনের বিরুদ্ধে পুলিশের অভিযান চলাকালীন সময়ে পাঁচতলা থেকে লাফিয়ে পড়ে এক বাংলাদেশি প্রবাসী নিহত হয়েছে। বুধবার (১০ এপ্রিল) সাইপ্রাস স্থানীয় সময় সকাল ৭টায় এ ঘটনা ঘটে।

এসময় পুলিশের হাত থেকে বাঁচতে বাসায় থাকা তিন বাংলাদেশি ৫ তলা থেকে বিল্ডিংয়ের পাইপ বেয়ে নিচে নেমে যাওয়ার চেষ্টা করেন। প্রথমজন সফল হলেও পরের দুইজন পাইপ থেকে ছিঁটকে নিচে পড়ে যান। একজন সাথে সাথেই মারা যান, অন্যজন আহত হন।

মারা যাওয়া ব্যক্তির নাম মোহাম্মদ আনিস। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বাঞ্ছারামপুর থানার বিষ্ণুরামপুর গ্রামের আবদুল আওয়াল মিয়ার সন্তান। আবদুল আওয়াল মিয়ার দুই সন্তানের মধ্যে মোহাম্মদ আনিস বড়। সাইপ্রাসে তিনি একটি রেস্টুরেন্টে কাজ করতেন।

মোহাম্মদ আনিসের একই গ্রামের আরেক সাইপ্রাস প্রবাসী হাসিবুল হাসান জানান, ২০২২ সালে নর্থ সাইপ্রাস আসেন আনিস। সেখানে আসার পর কোনো কাজ না থাকায় আনিস অবৈধভাবে সাইপ্রাসে ঢুকে পড়ে। গ্রীক সাইপ্রাস আসার পর মোটামুটি ভালোই চলছিল দিনকাল। কিন্তু রিফিউজি আবেদন করার পর বারবার তা রিজেক্ট করে দেয় সরকার। এরপর অবৈধ হয়ে যায় আনিস। এর আগেও কয়েকবার পুলিশি তল্লাশিতে পড়লেও বেঁচে যায় সে। কিন্তু এবার শেষ রক্ষা হয়নি।

নর্থ সাইপ্রাসে আসা বাংলাদেশিরা দালালদের লোভনীয় ফাঁদে পড়ে। নর্থ সাইপ্রাসের দালালরা লাখ লাখ টাকা ইনকামের স্বপ্ন দেখিয়ে বাংলাদেশ থেকে লোক নিয়ে আসে। এখানে আসার পর তারা জানতে পারে বাস্তবতার সাথে দালালদের কথার কোনো মিল নেই। এখানে আসার পর বেকার জীবন পার করতে হয়। পরে তারা রিফিউজি হওয়ার আশায় অবৈধভাবে গ্রীক সাইপ্রাসে ঢুকে পড়ে। কিন্তু ২০২০ সালে করোনার পর থেকে গ্রীক সাইপ্রাস সরকার অনেক কঠোর হয়ে যায়।

তারা আগে শরণার্থীদের সাইপ্রাসে থাকার সুযোগ দিলেও ২০২০ সালের পর থেকে আর কাউকে সুযোগ দিচ্ছে না দেশটি। সাইপ্রাসে দক্ষিণ এশিয়া থেকে আগত যত শরণার্থী আছে, কারোর ফাইলই আর গ্রহণ করছে না সরকার। নর্থ সাইপ্রাস থেকে আসা সবাই অবৈধভাবেই বসবাস করছে গ্রীক সাইপ্রাসে। ধরলেই দেশে পাঠিয়ে দিচ্ছে তাদের। ইতোমধ্যে ৫ শতাধিক বাংলাদেশি অবৈধ শরণার্থীকে দেশে পাঠিয়ে দিয়েছে সাইপ্রাস সরকার।

সাইপ্রাসে বাংলাদেশি দূতাবাস না থাকায় কোনো বাংলাদেশি মারা গেলে তার মরদেহ দেশে পাঠাতেও অনেক ঝামেলার সম্মুখীন হতে হয়। সাইপ্রাসে থাকা বাংলাদেশিরা সাহায্য সহযোগিতা করে দেশে মরদেহ পাঠানোর ব্যবস্থা করলেও অনেক সময় আর্থিক সংকটের কারণে তা সম্ভব হয়না।

সাইপ্রাস থেকে একটা মরদেহ দেশে পাঠাতে যে পরিমাণ অর্থ লাগে তা জোগাড় করতে অনেক সময় লেগে যায়। মৃত ব্যক্তির পরিবার থেকে টাকা দিতে না পারলে মরদেহ দেশে পাঠানো অনেক কঠিন হয়ে পড়ে।

এমন সংকটাপন্ন থেকে পরিত্রাণ পেতে সাইপ্রাসে থাকা বাংলাদেশিরা লেবাননে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের কাছে সরাসরি হস্তক্ষেপ চায়। যেন দূতাবাস থেকে সরকারি খরচে লাশ দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করে।

শেয়ারনিউজ, ১৩ এপ্রিল ২০২৪

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

প্রবাস এর সর্বশেষ খবর

প্রবাস - এর সব খবর



রে