ঢাকা, বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
Sharenews24

ডাকসু নির্বাচনের জালিয়াতির তদন্তে নয়া মোড়!

২০২৫ সেপ্টেম্বর ১৭ ০৮:৫০:৪১
ডাকসু নির্বাচনের জালিয়াতির তদন্তে নয়া মোড়!

নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের আগে এমফিল প্রোগ্রামে জালিয়াতির মাধ্যমে ভর্তি হয়েছিলেন ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী—এমন প্রমাণ পাওয়ার পর তার ভর্তি বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। একইসঙ্গে ২০১৯ সালের ডাকসু নির্বাচনে তার জেনারেল সেক্রেটারি (জিএস) পদে নির্বাচিত হওয়াটিও ‘অবৈধ’ ঘোষণা করার সুপারিশ করেছে তদন্ত কমিটি।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ক্রিমিনোলজি বিভাগের গোলাম রাব্বানী, মেহজাবিন হক ও ফাহমিদা তাসনিম অনি যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে জালিয়াতির মাধ্যমে এমফিলে ভর্তি হয়েছিলেন। এ বিষয়ে গঠিত তদন্ত কমিটি নিশ্চিত হয়েছে, তারা ভর্তির নীতিমালা ভেঙে বেআইনিভাবে ভর্তি হয়েছেন।

এর ফলে তাদের এমফিল ভর্তি সাময়িকভাবে বাতিল করা হয়েছে এবং বিষয়টি একাডেমিক কাউন্সিলে উপস্থাপনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

২০১৯ সালের ১১ মার্চ অনুষ্ঠিত ডাকসু নির্বাচনে গোলাম রাব্বানী জিএস নির্বাচিত হয়েছিলেন। তবে বৈধ ছাত্রত্ব না থাকায় তার প্রার্থিতাই অবৈধ ছিল বলে মন্তব্য করেছে তদন্ত কমিটি। তাই তার জিএস হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার বিষয়টিকে 'অবৈধ' ঘোষণা করার জোর সুপারিশ করা হয়েছে।

তদন্ত প্রতিবেদনে উঠে এসেছে ভোট কারচুপি, অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের ভোটাধিকার হরণ, ভোট কেন্দ্রে প্রবেশে বাধা, জাল ব্যালট, কৃত্রিম লাইন তৈরি, ভয়ভীতি প্রদর্শন ও কেন্দ্র দখলের মতো একাধিক অনিয়মের অভিযোগ। যদিও প্রতিবেদনটি প্রাথমিক পর্যায়ে, এরপরও অধিকতর তদন্তের প্রয়োজনীয়তার কথা বলা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান ৫ ফেব্রুয়ারি একটি সাত সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেন। এতে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীকে আহ্বায়ক করা হয়। কমিটি তাদের প্রতিবেদনে বিস্তারিত তথ্য উপস্থাপন করে যা ৪ সেপ্টেম্বর সিন্ডিকেট সভায় এজেন্ডাভুক্ত হয় এবং তা গৃহীত হয়।

কমিটির প্রাথমিক অনুসন্ধানে গোলাম রাব্বানী ছাড়াও দুই শিক্ষার্থী—মেহজাবিন হক ও ফাহমিদা তাসনিম অনি–র বিরুদ্ধেও একই অভিযোগ উঠেছে। তাদের বিরুদ্ধেও একই ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

এই তদন্তের সূত্রপাত ঘটে গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও ২০১৯ সালের ডাকসু নির্বাচনে জিএস প্রার্থী রাশেদ খানের স্মারকলিপির মাধ্যমে। তিনি উপাচার্যের কাছে ভোট কারচুপি, অনিয়ম এবং জালিয়াতির অভিযোগ তুলে ধরেন, যার পরিপ্রেক্ষিতেই গঠিত হয় তদন্ত কমিটি।

ঢাবির ইতিহাসে আলোচিত ২০১৯ সালের ডাকসু নির্বাচন নিয়ে এতদিন পর এভাবে আনুষ্ঠানিক তদন্তে জালিয়াতি ও অবৈধ প্রার্থিতা প্রমাণিত হওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। গোলাম রাব্বানীর মতো প্রভাবশালী সাবেক ছাত্রনেতার বিরুদ্ধে এই ব্যবস্থা ভবিষ্যতের জন্য একটি নজির স্থাপন করবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

জাহিদ/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে