ঢাকা, সোমবার, ১৮ আগস্ট ২০২৫
Sharenews24

খেলাপি ঋণ পুনঃ তফসিলের জন্য ১২৫৩ আবেদন

২০২৫ আগস্ট ১৮ ০৬:২৯:০২
খেলাপি ঋণ পুনঃ তফসিলের জন্য ১২৫৩ আবেদন

নিজস্ব প্রতিবেদক: সরকারি ব্যাংকের বিশেষ সুবিধায় ঋণ পুনঃ তফসিলের জন্য মোট ১২৫৩টি আবেদন জমা পড়েছে। এর মধ্যে প্রাথমিকভাবে প্রায় ৩০০ আবেদন বাছাই করা হয়েছে। আগস্ট মাসেই এসব আবেদন যাচাই-বাছাই শেষে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোর কাছে পাঠানো হবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানায়, সুদ মওকুফের জন্যও বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে প্রায় আড়াই হাজার আবেদন জমা পড়েছে। এসব আবেদন ব্যাংকগুলো তাদের নিজস্ব নীতি অনুসারে নিষ্পত্তি করবে বলে জানা গেছে। করোনাকালীন ক্ষতি, রাজনৈতিক অস্থিরতা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে তৈরি পোশাক, ভোগ্যপণ্য আমদানি, চামড়া ও অন্যান্য বৃহৎ শিল্প খাতের উদ্যোক্তাদের এই বিশেষ সুযোগ দেওয়া হয়েছে।

সূত্র জানায়, দেশের বৃহৎ করপোরেট ঋণখেলাপিদের মধ্যে ৩০০ প্রতিষ্ঠানকে পুনঃ তফসিলের সুযোগ দিতে সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ ক্ষেত্রে মাত্র ১ শতাংশ এককালীন অর্থ প্রদান করে সর্বোচ্চ তিন বছরের গ্রেস পিরিয়ডে ১৫ বছর পর্যন্ত ঋণ পরিশোধ করা যাবে। তবে নীতিগতভাবে ইচ্ছাকৃত খেলাপিরা এ সুবিধা থেকে বঞ্চিত থাকবেন।

ব্যাংক সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, এমন সুবিধা ঋণখেলাপি কমানোর বদলে উল্টো বাড়াতে পারে। এতে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর নগদ প্রবাহ বা ক্যাশ-ম্যানেজমেন্টে জটিলতা দেখা দিতে পারে। তবে উদ্যোক্তাদের মতে, ডলার সংকট, উচ্চ সুদহার ও রাজনৈতিক ক্ষতির কারণে অনেক প্রতিষ্ঠান অচল হয়ে পড়েছে। এই সুযোগে তারা আবার ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম হবে, যা অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

বাছাই কমিটির এক সদস্য জানান, প্রতিটি আবেদনের প্রেক্ষাপট আলাদা। অনেকেই ইচ্ছাকৃত খেলাপি হয়েও আবেদন করেছেন, আবার অনেক ক্ষেত্রে ব্যাংক নিজ উদ্যোগে পুনঃ তফসিল করতে পারে। পাশাপাশি কিছু আবেদন শুধু সুদ মওকুফের, যা কমিটির এখতিয়ারের বাইরে। সব দিক বিবেচনা করে যৌক্তিক সিদ্ধান্ত নেওয়াই বড় চ্যালেঞ্জ।

মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক অডিট প্রতিষ্ঠানের প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে অনুমোদন দিয়েছে। এখন ব্যাংকগুলোই চূড়ান্ত করবে কার ঋণ পুনঃ তফসিল হবে আর কারটি হবে না। তবে এতে ব্যাংকের নগদ প্রবাহে চাপ সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

ক্ষতিগ্রস্ত একজন উদ্যোক্তা জানান, শত শত ব্যবসায়ী নিজ আবেদনের পক্ষে তদবির করছেন। তাঁর আবেদন কমিটির বাছাইয়ে উঠলেও সব ব্যাংকের সমন্বয় না হওয়ায় এখনও খেলাপি অবস্থার অবসান ঘটেনি। দ্রুত সিদ্ধান্ত না এলে পুনর্গঠনের সুযোগ বাস্তবে কোনো কাজে আসবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর জানিয়েছেন, ১ হাজার ২৫০ আবেদনের মধ্যে ২৫০টি ইতোমধ্যে প্রাথমিকভাবে বাছাই করা হয়েছে। তবে চূড়ান্ত কাজ করবে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোই।

এদিকে সূত্র জানায়, সুদ মওকুফের আড়াই হাজার আবেদন জমা পড়েছে ব্যাংকগুলোতে, যা তাদের পরিচালনা পর্ষদ চাইলে মঞ্জুর করতে পারে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিশেষ নির্দেশনার প্রয়োজন নেই।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান বলেন, ১ হাজার ২৫০ আবেদনের মধ্যে যাচাই-বাছাই শেষে ২৫০টি আবেদন প্রাথমিকভাবে বাছাই করা হয়েছে। তবে পুনঃ তফসিলের বিষয়টি সম্পূর্ণরূপে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোর ওপর নির্ভর করছে। সুদ মওকুফও তাদের নিজস্ব নীতির বিষয়।

মিজান/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে