ঢাকা, মঙ্গলবার, ৭ অক্টোবর ২০২৫
Sharenews24

“প্রতারকরা আর পার পাবে না”— আইন একীভূত করে কঠোর হচ্ছে বিএসইসি

২০২৫ অক্টোবর ০৭ ১৯:০৭:৪৩
“প্রতারকরা আর পার পাবে না”— আইন একীভূত করে কঠোর হচ্ছে বিএসইসি

নিজস্ব প্রতিবেদক: দীর্ঘদিনের জটিলতা ও বিশৃঙ্খলা দূর করে শেয়ারবাজারে সুশাসন ও স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে বড় সংস্কার উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। সংস্থার চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ ঘোষণা দিয়েছেন, বাজারের সব সিকিউরিটিজ আইন ও বিধিমালা একীভূত করে একটি সমন্বিত আইনি কাঠামো গঠন করা হচ্ছে।

‘বিশ্ব বিনিয়োগকারী সপ্তাহ’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “বাজারের শৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা ও বিনিয়োগকারীর স্বার্থরক্ষায় এই পদক্ষেপ হবে যুগান্তকারী।”

বিএসইসি চেয়ারম্যান জানান, বাজারে আইন ও বিধির ছড়াছড়ি বিনিয়োগকারীদের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি করছে। তাই কমিশন ১৯৬৯ সালের সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অর্ডিন্যান্স এবং ১৯৯৩ সালের বিএসইসি আইন—দুটি মূল আইন একত্র করার কাজ শুরু করেছে।এছাড়া সিকিউরিটিজ-সংক্রান্ত সব বিধিমালা ও নির্দেশিকা একত্র করে এক জায়গায় আনা হচ্ছে, যাতে বাজারে একটি স্বচ্ছ ও কার্যকর নিয়ন্ত্রক কাঠামো তৈরি হয়। এর ফলে বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়বে এবং বাজারের ভিত্তি আরও মজবুত হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

খন্দকার রাশেদ মাকসুদ জানান, দায়িত্ব নেওয়ার পর কমিশন অতীতের সব অনিয়ম ও কেলেঙ্কারির তদন্তে বিশেষ কমিটি গঠন করেছে। ইতোমধ্যে ওই কমিটির ১২টি প্রতিবেদনের মধ্যে ৭টি মামলায় জড়িতদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, “আমরা প্রমাণ করেছি—কারসাজি বা অনিয়ম করে আর পার পাওয়া যাবে না।” বাজার বিশ্লেষকদের মতে, এই কঠোর অবস্থান বিনিয়োগকারীদের কাছে একটি আস্থার বার্তা হিসেবে কাজ করছে।

তবে বিএসইসি চেয়ারম্যান স্বীকার করেন, কিছু শাস্তিমূলক ব্যবস্থা আদালতের রিট ও নিষেধাজ্ঞার কারণে কার্যকর করা যাচ্ছে না। উদাহরণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন বেস্ট হোল্ডিংস ও কোয়েস্ট বিডিসি সংক্রান্ত মামলাগুলোর কথা।

তিনি বলেন, “ন্যায়বিচার দ্রুত নিশ্চিত না হলে বাজারে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা কঠিন। তাই আমরা বিচার বিভাগ ও সরকারের সক্রিয় সহযোগিতা প্রত্যাশা করছি।”

বাজারে শুধু আইনি নয়, প্রযুক্তিগত সংস্কারেও জোর দিচ্ছে বিএসইসি। চেয়ারম্যান জানান, সমস্ত ব্রোকারেজ হাউসকে একটি সমন্বিত ট্যাম্পার-প্রুফ ব্যাক-অফিস সফটওয়্যার সিস্টেমে আনা হয়েছে, যা গ্রাহকের তহবিলকে করবে আরও নিরাপদ।

একই সঙ্গে মিউচুয়াল ফান্ড খাতে ট্রাস্টি, কাস্টোডিয়ান ও অ্যাসেট ম্যানেজারদের জবাবদিহিতা বৃদ্ধি, এবং তালিকাভুক্ত কোম্পানিতে স্বতন্ত্র পরিচালকদের ভূমিকা জোরদার করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

খন্দকার রাশেদ মাকসুদ বলেন, “আমরা যদি প্রতারণা রোধ ও বিনিয়োগ সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পারি, তবে এই বাজারের সম্ভাবনা হবে সীমাহীন।”

বিএসইসির সর্বশেষ উদ্যোগগুলো ইঙ্গিত দিচ্ছে—বাজার এখন একটি নতুন স্বচ্ছতা ও শৃঙ্খলার যুগে প্রবেশ করছে। বিনিয়োগকারীরা বলছেন, এই সংস্কারগুলো বাস্তবায়িত হলে শেয়ারবাজার হবে আরও নির্ভরযোগ্য, টেকসই এবং আস্থার স্থান।

সালাউদ্দিন/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে