ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২ অক্টোবর ২০২৫
Sharenews24

পূর্ণাঙ্গ ইসলামী ব্যাংকিংয়ে যাচ্ছে শেয়ারবাজারের আরেক ব্যাংক

২০২৫ অক্টোবর ০২ ১৫:৩৮:০২
পূর্ণাঙ্গ ইসলামী ব্যাংকিংয়ে যাচ্ছে শেয়ারবাজারের আরেক ব্যাংক

নিজস্ব প্রতিবেদক: শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত বেসরকারি খাতের প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল ক্রেডিট অ্যান্ড কমার্স (এনসিসি) ব্যাংক এখন প্রচলিত ব্যাংকিং ব্যবস্থা থেকে বেরিয়ে এসে সম্পূর্ণ নতুন ধারায় যুক্ত হওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে। ব্যাংকটি নিজেদেরকে একটি পূর্ণাঙ্গ ইসলামিক ব্যাংকে রূপান্তরের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে একটি বিস্তারিত পরিকল্পনা জমা দিয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকও প্রাথমিকভাবে এই প্রস্তাবে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে। বর্তমানে এনসিসি ব্যাংক তাদের এই রূপান্তরের সম্ভাব্যতা যাচাই (ফিজিবিলিটি রিপোর্ট) তৈরির কাজ করছে, যা দ্রুতই বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে জমা দেওয়া হবে বলে জানা গেছে।

সবশেষ ২০২১ সালে স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক এবং এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক পূর্ণাঙ্গ ইসলামিক ব্যাংকিংয়ে রূপান্তরিত হয়েছিল। এরপরে অন্য কোনো প্রচলিত ব্যাংক পুরোপুরি এই ধারায় আসেনি। এমন সময়ে এনসিসি ব্যাংকের এই আগ্রহ বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ, যখন দেশের বেশ কিছু পুরোনো ইসলামিক ব্যাংক আর্থিক সংকটের কারণে একীভূত হওয়ার মতো পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। যদিও গত সরকারের সময় ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ ও আল-আরাফাহ্ ইসলামি ব্যাংক বাদে বেশিরভাগ ব্যাংক অনিয়ম ও সংকটে জড়িয়ে পড়েছিল, বর্তমানে এই দুটি ব্যাংক ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, এনসিসি ব্যাংক ছাড়াও নন-রেসিডেন্ট বাংলাদেশি ব্যাংক (এনআরবি) এবং বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংকও ইসলামিক ব্যাংকিংয়ে রূপান্তরের জন্য আগ্রহ দেখিয়েছে। তবে তারা এখনও পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো পরিকল্পনা জমা দেয়নি।

অন্যদিকে, পূবালী ব্যাংক এবং ব্যাংক অব সিলন পূর্ণাঙ্গ রূপান্তরের আবেদন না করে কেবল ইসলামিক শাখা বা উপশাখা খোলার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে আবেদন করেছে। বর্তমানে দেশে মোট ১০টি পূর্ণাঙ্গ ইসলামিক ব্যাংক কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা জানান, অনিয়ম ও অস্থিরতার কারণে একসময় ইসলামিক ব্যাংকিং খাতের ওপর মানুষের আস্থা কিছুটা কমে গিয়েছিল। তবে অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের পর ব্যাংক খাতে শৃঙ্খলা ফিরতে শুরু করায় মানুষের আগ্রহ আবার বাড়ছে। এই সুযোগকে কাজে লাগাতে প্রচলিত ধারার ব্যাংকগুলো আগ্রহ দেখাচ্ছে। বাজারে ভালো সুনাম আছে এমন প্রতিষ্ঠানগুলোর বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি রাখছে।

এনসিসি ব্যাংকের পক্ষ থেকে একজন কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন যে, বোর্ডের অনুমোদন নিয়ে তারা বাংলাদেশ ব্যাংকে আবেদন ও পরিকল্পনা জমা দিয়েছেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের দেওয়া শর্তগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো ফিজিবিলিটি রিপোর্ট তৈরি করা। এই রিপোর্ট তৈরির মাধ্যমে ব্যাংকের সম্পদ এবং টেকসই অবস্থান যাচাই করা হবে, যা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে জমা দেওয়া হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে প্রচলিত ব্যাংকগুলো মোট ৪৬টি ইসলামিক শাখা এবং ৯১৯টি ইসলামিক উইন্ডো পরিচালনা করছে। এর মধ্যে এনসিসি ব্যাংকের দুটি শাখা ও ৩২টি উইন্ডো রয়েছে। পূবালী ব্যাংকের আটটি শাখা ও ২২টি উইন্ডো আছে এবং তারা সম্প্রতি আরও ৮৭টি শাখার জন্য আবেদন করেছে, যার মধ্যে আটটির অনুমোদন মিলেছে। এছাড়া এনআরবি ব্যাংকের একটি ইসলামিক শাখা ও ২৭টি উইন্ডো এবং বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংকের দুটি ইসলামিক শাখা রয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, জুলাই মাস শেষে ইসলামিক ব্যাংকগুলোর মোট আমানতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ৫৪ হাজার ৭ কোটি টাকা এবং বিনিয়োগের পরিমাণ ৫ লাখ ৬৮ হাজার ২০৯ কোটি টাকা। বর্তমানে দেশে ইসলামিক ব্যাংকের মোট শাখা সংখ্যা ১ হাজার ৭৩৯টি।

সালাউদ্দিন/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে