ঢাকা, শনিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৪
Sharenews24

এক মাসে ভারতের শেয়ারবাজারে ৩৮ হাজার কোটির বিদেশি বিনিয়োগ

২০২৪ মার্চ ২৭ ১২:২৮:২১
এক মাসে ভারতের শেয়ারবাজারে ৩৮ হাজার কোটির বিদেশি বিনিয়োগ

নিজস্ব প্রতিবেদক : ভারতের শেয়ারবাজারে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বাড়ছে। ফেব্রুয়ারিতে মাত্র ১ হাজার ৫৩৯ কোটি রূপি বিদেশী বিনিয়োগ আসলেও মার্চে সেই বিনিয়োগ ৩৮ হাজার কোটি রূপি ছাড়িয়ে গেছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ভারতের শেয়ারবাজারে দীর্ঘমেয়াদে চাঙ্গাভাব বিরাজ করছে। এই কারণে ভারতের শেয়ারবাজারে বেদিশে বিনিয়োগকারীদের বাড়তি আগ্রহ দেখা যাচ্ছে।

বিজনেস টাইমসের সংবাদে বলা হয়েছে, মার্চ মাসে ভারতের শেয়ারবাজারে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা এখন পর্যন্ত ৩৮ হাজার কোটি রুপির বেশি বিনিয়োগ করেছেন। গত মাস অর্থাৎ ফেব্রুয়ারিতে ভারতের শেয়ারবাজারে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগ করেছিল মাত্র ১ হাজার ৫৩৯ কোটি রুপি। জানুয়ারি মাসে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা ২৫ হাজার ৭৪৩ কোটি রুপির শেয়ার বিক্রি করেছিলেন। ফলে চলতি বছর এ পর্যন্ত ভারতের বাজারে নিট বিদেশি বিনিয়োগ হয়েছে ১৩ হাজার ৮৯৩ কোটি রুপি আর ঋণপত্রের বাজারে ৫৫ হাজার ৪৮০ কোটি রুপি।

এই বিষেয়ে মর্নিং স্টার ইনভেস্টমেন্ট রিসার্চ ইন্ডিয়ার ম্যানেজার হিমাংশু শ্রীবাস্তব বলছেন, বিশ্ব অর্থনীতির উন্নতি এবং ভারতীয় অর্থনীতির ইতিবাচক ভাবমূর্তি—এই দুটি কারণে ভারতের বাজার সম্পর্কে আগ্রহী হচ্ছেন বিদেশি বিনিয়োগকারীরা। তবে অতি সম্প্রতি বাজার কিছুটা পড়ে যাওয়ায় নতুন বিনিয়োগের সুযোগ তৈরি হয়েছে।

বিশেষজ্ঞ মহল মনে করছে, গত তিনটি ত্রৈমাসিকে ৮ শতাংশের বেশি হারে জিডিপির প্রবৃদ্ধি ও রিজার্ভ ব্যাংকের নীতি সুদহার কমানোর সম্ভাবনাও নতুন ইন্ধন জোগাচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, আগামী মাস থেকে শুরু হতে যাওয়া নতুন অর্থবছরের দ্বিতীয় ভাগে ২৫ থেকে ৫০ ভিত্তি পয়েন্ট নীতি সুদহার কমাবে আরবিআই।

গত বছর বিশ্বের উন্নত অর্থনীতির দেশগুলো মন্দা এড়াতে পেরেছে। যদিও ধারণা করা হচ্ছিল, বিশ্বজুড়ে নীতি সুদহার বৃদ্ধির জেরে অর্থনীতির গতি অনেকটা কমে যাবে। সেই সঙ্গে ভারতের অর্থনীতির গতিও বেড়েছে। বিশেষজ্ঞদের দাবি, মূলত এ দুই কারণে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা ভারতের শেয়ারবাজারের প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছেন।

গত সপ্তাহে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা মূলত শেয়ার বিক্রি করেছেন। বিশেষজ্ঞদের দাবি, কিছুটা সতর্কতা থেকেই তাঁরা প্রায় ৩১ দশমিক ৪০ কোটি ডলারের শেয়ার বিক্রি করেছেন।

চলতি বছর ভারতের সাধারণ নির্বাচন। সে কারণে বিনিয়োগকারীরা কিছুটা সতর্ক অবস্থানে আছেন বলেও বিশ্লেষকেরা মনে করছেন। জে পি মর্গ্যান চেজ অ্যান্ড কোম্পানি মনে করছে, সাধারণ নির্বাচনের পর ভারতের শেয়ারবাজারে আরও বিদেশি বিনিয়োগ আসবে। ভারতের উচ্চ প্রবৃদ্ধি ও ফেডারেল রিজার্ভের নীতি সুদহার হ্রাসের সম্ভাবনা—এ দুটি কারণে বিনিয়োগকারীরা ভারতের প্রতি আকৃষ্ট হবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ভারতের স্টক এক্সচেঞ্জের বাজার মূলধন গত বছর চার ট্রিলিয়ন বা চার লাখ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যায়। এখন তা ৪ লাখ ৩০ হাজার কোটি ডলার। বর্তমানে বিশ্বের যেসব স্টক এক্সচেঞ্জের বাজারমূল্য ভারতের চেয়ে বেশি, সেগুলো হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক স্টক এক্সচেঞ্জ ও নাসডাক, চীনের সাংহাই এক্সচেঞ্জ, ইউরোনেক্সট, জাপান স্টক এক্সচেঞ্জ ও সেনজেন স্টক এক্সচেঞ্জ।

ব্রোকারেজ সংস্থা সিএলএসএ মনে করে, ভারত আগামী কয়েক বছরের মধ্যে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি হয়ে উঠবে। আগামী ২০২৭ সালের মধ্যে ভারত জাপানকে টপকে যাবে। তারপর আগামী ২০৪৭ সালের মধ্যে ভারতের অর্থনীতি ২৯ ট্রিলিয়ন বা ২৯ লাখ কোটি ডলারে পৌঁছাবে।

সিএলএসএ আরও বলেছে, ২০২৭ সালের মধ্যে ভারত হবে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি। শুধু চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি ভারতের তুলনায় এগিয়ে থাকবে। বড় ধরনের সংস্কার হলে ২০৫২ সালের মধ্যে ভারতের অর্থনীতি যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়িয়ে যেতে পারে। ভারতের জিডিপি প্রবৃদ্ধির সঙ্গে তাল রেখে শেয়ারবাজারের সম্মিলিত মূল্য সেই অনুপাতে বা তার চেয়ে বেশি হারে বাড়বে।

শেয়ারনিউজ, ২৭ মার্চ ২০২৪

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে