ঢাকা, শনিবার, ৯ আগস্ট ২০২৫
Sharenews24

যুক্তরাজ্যে সাইফুজ্জামানের ৩ কোম্পানি দেউলিয়া  হওয়ার পথে

২০২৫ আগস্ট ০৯ ২০:১৫:৫১
যুক্তরাজ্যে সাইফুজ্জামানের ৩ কোম্পানি দেউলিয়া  হওয়ার পথে

নিজস্ব প্রতিবেদক: যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর তিনটি আবাসিক সম্পত্তি কোম্পানির নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান গ্রান্ট থর্নটনের সহযোগী একটি সংস্থা। ২৯ জুলাই প্রতিষ্ঠানটিকে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। বিষয়টি শুক্রবার (০৯ আগস্ট) নোয়াহ নিউজ ও বিসনাউ নিউজের প্রতিবেদনে প্রকাশিত হয়েছে।

প্রশাসনের আওতায় আসা তিনটি কোম্পানি হলো— জেডটিএস প্রপার্টিজ লিমিটেড, রুখমিলা প্রপার্টিজ লিমিটেড এবং নিউ ভেঞ্চারস (লন্ডন) লিমিটেড। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, এই তিন প্রতিষ্ঠানের সম্মিলিত সম্পদের পরিমাণ প্রায় ১৪২ মিলিয়ন পাউন্ড, যার মধ্যে জেডটিএস একাই প্রায় ৭৭ মিলিয়ন পাউন্ডের মালিক। তবে ঋণদাতাদের কাছে তাদের মোট বকেয়া প্রায় ৭৮ মিলিয়ন পাউন্ড।

প্রতিবেদনে বলা হয়, সিঙ্গাপুরের ডিবিএস ব্যাংকের কাছে জেডটিএস মালিকানাধীন একাধিক সম্পত্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ নথিভুক্ত রয়েছে। এসব ঋণ সাধারণত লন্ডনের বিলাসবহুল ফ্ল্যাটের বিপরীতে সুরক্ষিত। উক্ত কোম্পানিগুলো সাইফুজ্জামান চৌধুরীর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বৃহত্তর ব্যবসায়িক গোষ্ঠীর অংশ। দীর্ঘদিন ধরেই বিদেশে সম্পত্তি কেনার অর্থের উৎস নিয়ে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। তিনি বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশনের তালিকাভুক্ত অভিযুক্ত ২৫ জনের একজন। ২০২৪ সালে আল জাজিরার এক অনুসন্ধানেও অভিযোগ করা হয়, তিনি লন্ডন, দুবাই ও নিউ ইয়র্কে ৫০০ মিলিয়ন ডলারের বেশি সম্পত্তি অর্জন করেছেন। যুক্তরাজ্যের জাতীয় অপরাধ সংস্থা (এনসিএ) তার সম্পত্তি জব্দের আদেশও পেয়েছে, যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ১৭০ মিলিয়ন পাউন্ড।

পাবলিক রেকর্ড অনুযায়ী, কোম্পানিজ হাউসে জমা দেওয়া নথিতে জেডটিএস ও রুখমিলার দেউলিয়া কার্যক্রম, রিসিভার ও ম্যানেজার নিয়োগ এবং নিবন্ধিত চার্জের তথ্য রয়েছে। নিউ ভেঞ্চারস (লন্ডন) লিমিটেডের বাণিজ্যিক প্রোফাইলে ব্যবসার উদ্দেশ্য, পরিচালকের নাম এবং চার্জ ইতিহাস উল্লেখ আছে।

গ্রান্ট থর্নটনের এই পদক্ষেপ একই গোষ্ঠীর অন্যান্য কোম্পানির প্রশাসনের ধারাবাহিকতা। এর আগে প্রায় ২৯ মিলিয়ন পাউন্ড সম্পদবিশিষ্ট তিনটি সম্পর্কিত সংস্থা প্রশাসনে গিয়েছিল, যেগুলোর সম্পত্তি বিক্রির প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। প্রশাসনের প্রথম দফার প্রতিবেদনে প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছিল, তারা এনসিএর আদেশ মেনে চলবে এবং বিক্রির অর্থ অনুমোদিত ব্যক্তি ছাড়া অন্য কারো মধ্যে বিতরণ করা হবে না। প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ ছিল, বাংলাদেশের ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক চৌধুরীর কাছ থেকে প্রায় ২৬০ মিলিয়ন পাউন্ড পাওনা দাবি করেছে।

বর্তমানে যুক্তরাজ্যে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও আন্তঃসীমান্ত তদন্ত চলমান থাকায় এই বিশাল আবাসিক সম্পত্তি পোর্টফোলিও দেউলিয়া প্রক্রিয়ার অধীনে বাজারে তোলা হতে পারে। নিবন্ধিত চার্জধারী ঋণদাতারা, যেমন ডিবিএস ব্যাংক, পৃথক ফ্ল্যাটের নিরাপত্তা জোরদার করবে। আর এনসিএর জব্দ আদেশ নির্ধারণ করবে কোন সম্পত্তি বিক্রি হতে পারবে এবং বিক্রির অর্থ কীভাবে ব্যবস্থাপিত হবে।

পরবর্তীতে ঋণদাতা ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করে প্রশাসকরা ধাপে ধাপে সম্পত্তি নিষ্পত্তি করবেন। ক্রেতা ও বিনিয়োগকারীদের জন্য এ ক্ষেত্রে মালিকানা বিরোধ, তদন্ত প্রক্রিয়া ও নিয়ন্ত্রক বিধিনিষেধ বড় বিবেচ্য বিষয় হবে। আপাতত প্রশাসকদের লক্ষ্য থাকবে এনসিএর নির্দেশনা মেনে ঋণদাতাদের সর্বোচ্চ পাওনা আদায় নিশ্চিত করা, আর দুর্নীতি ও তহবিলের উৎস নিয়ে অভিযোগের নিষ্পত্তি হবে চলমান তদন্ত ও সম্ভাব্য আদালতের রায়ের মাধ্যমে।

মিজান/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে