ঢাকা, মঙ্গলবার, ৫ আগস্ট ২০২৫
Sharenews24

হাসিনার পালানোর ব্রেকিং নিউজের নেপথ্য গল্প

২০২৫ আগস্ট ০৫ ১৪:৫৪:১০
হাসিনার পালানোর ব্রেকিং নিউজের নেপথ্য গল্প

নিজস্ব প্রতিবেদক: ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট—গণঅভ্যুত্থানের উত্তাল দিনে শেখ হাসিনার দেশত্যাগের খবর ছড়িয়ে পড়ে দুপুরের আগেই। প্রথমে কেউ কেউ গুজব মনে করলেও, দুপুরে টেলিভিশনের স্ক্রলে সেনাপ্রধানের জাতির উদ্দেশে ভাষণের ঘোষণা আসতেই পরিস্থিতি বদলে যায়। আর ঠিক সেই সময়েই আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা এএফপি (AFP) নিশ্চিত করে, শেখ হাসিনা ভারত পালিয়ে গেছেন।

এই ব্রেকিং নিউজটি প্রথম দেন তখনকার এএফপি ঢাকা ব্যুরো প্রধান শফিকুল আলম, যিনি বর্তমানে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

এই দিনটির স্মরণে ৫ আগস্ট, নিজের ফেসবুক পোস্টে তিনি ভাগ করে নিয়েছেন কিছু ছবি এবং স্মৃতিচারণ। একটি ছবিতে দেখা যায়, তার স্ত্রী ও সন্তান এএফপি অফিসে এসে তাকে জড়িয়ে ধরছেন। ক্যাপশনে তিনি লেখেন:"বিজয়ের মুহূর্ত। আমি যখন এএফপিতে কাজ করছিলাম, তখন আমার পরিবার অফিসে আসে। কারণ, আমি সেই সংবাদটি দিয়েছিলাম—শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। আল্লাহ আমাকে সব দিয়েছেন। আলহামদুলিল্লাহ।"

সেই দিনটির অভিজ্ঞতা জানিয়ে শফিকুল লেখেন:“দুপুর ২টার দিকে একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, দেশের ১৫ বছরের একনায়ক (শেখ হাসিনা) একটি ভাষণ রেকর্ড করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু তার নিরাপত্তা কর্মকর্তারা জানিয়ে দেন, আর একটি প্রোপাগান্ডা ভাষণের সময় নেই। এরপর তাকেসহ তার বোনকে তেজগাঁওয়ের পুরোনো বিমানবন্দরে নিয়ে যাওয়া হয় এবং একটি সামরিক হেলিকপ্টারে উঠিয়ে দেশত্যাগ করানো হয়।”

তিনি আরও বলেন, “সংবাদটি সহজ ছিল, শিরোনামও: ‘গণঅভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী দেশ ছেড়ে পালালেন।’ কিন্তু চ্যালেঞ্জ ছিল সূত্রের বিশ্বাসযোগ্যতা। কারণ অনামা সূত্রের ওপর ভিত্তি করে বড় সংবাদ দেওয়া অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।”

ছোট মূলধনী কোম্পানির বড় চমক

শফিকুল জানান, তিনি নিজের সূত্রের নাম, পদবি সব পাঠিয়েছিলেন দক্ষিণ এশিয়ার সম্পাদককে (পরিচয় গোপন রাখার শর্তে)। সম্পাদক তাকে জিজ্ঞেস করেন, তিনি কতটা আস্থা রাখেন সেই তথ্যের ওপর। শফিকুল আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলেন, “পুরোপুরি।” এরপর হংকং অফিস থেকে এক লাইনের “রেড লেটারড গ্লোবাল অ্যালার্ট” পাঠানো হয়, এবং খবরটি বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে।

এই সাহসী ও তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্তের জন্য শফিকুল আলম পরে আন্তর্জাতিক পুরস্কারও অর্জন করেন। তাঁর সঠিক সংবাদ বিশ্লেষণ ও সাংবাদিকতা এখনো প্রশংসিত হয়।

শফিকুল আলমের ফেসবুক থেকে নেওয়া ছবিতে দেখা যায়, তার স্ত্রী ও সন্তান উচ্ছ্বসিতভাবে এএফপি অফিসে এসে তাকে আলিঙ্গন করছেন। যা সেই ঐতিহাসিক মুহূর্তের একটি আবেগঘন স্মারক হয়ে আছে।

মুসআব/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে