ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫
Sharenews24

হাদি হত্যার প্রতিবাদ শাহবাগে শিক্ষার্থী-জনতার ঢল

২০২৫ ডিসেম্বর ১৯ ১৬:৪৩:০৬
হাদি হত্যার প্রতিবাদ শাহবাগে শিক্ষার্থী-জনতার ঢল

নিজস্ব প্রতিবেদক: ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি হত্যার প্রতিবাদ এবং দ্রুত বিচার দাবিতে রাজধানীর শাহবাগ এলাকায় শিক্ষার্থী ও সর্বস্তরের মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত সমাগম ঘটেছে।

শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) ভোর থেকেই শাহবাগ মোড়ে জড়ো হতে শুরু করেন আন্দোলনকারীরা। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, সাংস্কৃতিক সংগঠনের কর্মী ও সাধারণ মানুষের উপস্থিতি বাড়তে থাকে। দুপুর নাগাদ পুরো এলাকা জনসমুদ্রে পরিণত হয়।

বিক্ষোভ চলাকালেই শাহবাগ মোড়েই জুমার নামাজ আদায় করা হয়। নামাজ শেষে আন্দোলনকারীরা প্রতীকীভাবে শাহবাগ মোড়ের নাম পরিবর্তন করে ‘শহীদ ওসমান হাদি চত্বর’ ঘোষণা করেন। চলমান অবস্থান কর্মসূচির কারণে শাহবাগ মোড়ে সব ধরনের গণপরিবহন চলাচল বন্ধ রয়েছে।

বিকেল ৩টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সহ-সভাপতি (ভিপি) সাদিক কায়েমের ঘোষণার মধ্য দিয়ে শাহবাগে শুরু হয় আধিপত্যবাদবিরোধী সমাবেশ। এ সময় মৎস্য ভবনমুখী সড়কে ডাকসু সদস্যরা একটি ট্রাকের ওপর দাঁড়িয়ে বিভিন্ন প্রতিবাদী স্লোগান দেন। একই সঙ্গে জুলাই ভাস্কর্যের পাদদেশে জুলাই আন্দোলনে যুক্ত বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মের নেতাকর্মীদের বড় অবস্থান লক্ষ্য করা যায়।

সমাবেশে অংশ নেওয়া আন্দোলনকারীরা ‘আর নয় প্রতিরোধ, এবার হবে প্রতিশোধ’, ‘এক হাদি লোকান্তরে, লক্ষ হাদি ঘরে ঘরে’, ‘এক হাদি লোকান্তরে, লক্ষ হাদি লড়াই করে’—এমন নানা স্লোগানে শাহবাগ প্রকম্পিত করে তোলেন।

এই বিক্ষোভে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাকর্মী এবং সাধারণ মানুষ অংশ নেন। বক্তারা হাদি হত্যার দৃষ্টান্তমূলক বিচার নিশ্চিত করার পাশাপাশি ফ্যাসিবাদ ও আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের ডাক দেন।

আন্দোলনকারীদের প্রধান দাবির মধ্যে রয়েছে হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের দ্রুত শনাক্ত করে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করা এবং স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ। তারা ঘোষণা দেন, ওসমান হাদির মরদেহ ঢাকায় পৌঁছানো পর্যন্ত শাহবাগ মোড়ে অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।

সমাবেশে বক্তব্য দিতে গিয়ে ডাকসু ভিপি সাদিক কায়েম বলেন, হাদির হত্যার বিচার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলনকারীরা শাহবাগ ছাড়বেন না। তিনি হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারে ব্যর্থতার অভিযোগ তুলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি করেন।

ডাকসু নেতা এবি জুবায়ের বলেন, শহীদ শরিফ ওসমান হাদি কখনো সহিংসতার রাজনীতিতে বিশ্বাস করতেন না। জ্ঞান, মনন ও বুদ্ধিবৃত্তিক সংগ্রামের মাধ্যমেই ফ্যাসিবাদী ও আধিপত্যবাদী শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করাই ছিল তার আদর্শ। তিনি আন্দোলনের নামে উসকানি বা সহিংসতা পরিহার করে শান্তিপূর্ণ ও সংগঠিত প্রতিবাদ চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান।

এর আগে জুমার নামাজ শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে শহীদ হাদির রুহের মাগফিরাত কামনায় বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হয়। দোয়া শেষে শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে শাহবাগে এসে অবস্থান কর্মসূচিতে যোগ দেন।

উল্লেখ্য, গত ১২ ডিসেম্বর রিকশায় থাকা অবস্থায় মোটরসাইকেলে আসা দুর্বৃত্তদের গুলিতে আহত হন শরিফ ওসমান হাদি। প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয় তাকে। পরে ওই দিন রাতেই এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে ১৫ ডিসেম্বর তাকে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে তিনি মারা যান। তার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে তাৎক্ষণিকভাবে শাহবাগে বিক্ষোভ শুরু হয়।

এমজে/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে