ঢাকা, শুক্রবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
Sharenews24

ওয়ারিশ সম্পত্তির রেকর্ড সহ নামজারি বাতিল

২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৫ ১৮:১০:০৭
ওয়ারিশ সম্পত্তির রেকর্ড সহ নামজারি বাতিল

নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশে উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া জমি-জমা ও সম্পত্তির মালিকানা নিয়ে জটিলতা ক্রমেই বাড়ছে। অনেকেই ধারণা করেন, পরিবারের কারো মৃত্যুর পর তার জমির দাগে নাম থাকলেই সম্পত্তির মালিক হওয়া যায়। তবে ভূমি বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন—সঠিক আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ না করলে শত বছরেও সেই জমির উপর প্রকৃত মালিকানা প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়।

বিশেষজ্ঞরা জানান, কোনো ব্যক্তি মারা গেলে তার রেখে যাওয়া সম্পত্তিতে উত্তরাধিকারীরা স্বাভাবিকভাবেই অধিকার পান। কিন্তু সেই অধিকারকে আইনি বৈধতা দিতে হলে নামজারির (mutation) মাধ্যমে সম্পত্তি নিজেদের নামে রেকর্ড করাতে হয়। ভূমি অফিসে সম্পত্তির মালিকানার তথ্য হালনাগাদ না করলে, ভবিষ্যতে বিক্রি, হস্তান্তর, এমনকি দখল বজায় রাখাও কঠিন হয়ে পড়ে।

এ প্রসঙ্গে বলা হয়, উত্তরাধিকার সূত্রে জমি পাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে অনেক সময় পারিবারিক বণ্টন বা ভাগাভাগির লিখিত চুক্তি হয় না। এতে এক বা একাধিক ওয়ারিশ নিজের নামে জমি রেকর্ড করে অন্যদের বঞ্চিত করেন। আবার বিদেশে থাকা অনেক ব্যক্তি টাকা পাঠিয়ে জমি কিনলেও, সেটি বাবা, ভাই বা শ্বশুরের নামে রেকর্ড হয়ে পড়ে, যা পরবর্তীতে বড় ধরণের আইনি জটিলতা সৃষ্টি করে।

সরকার ২০০৪ সাল থেকে আপোষ বন্টননামা দলিল বাধ্যতামূলক করেছে। এই দলিল ছাড়া জমি নামজারি করা যাবে না এবং সম্পত্তি কেনাবেচাও বৈধ নয়। এটি মূলত পরিবারভিত্তিক জমি বিভাজন বা বণ্টনের লিখিত প্রমাণ। এছাড়া ভুল বা মিথ্যা তথ্য দিয়ে করা নামজারি বাতিল করার বিধানও রয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা আরও জানান, উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া জমির ক্ষেত্রে তামাদি আইন (Limitation Act) প্রযোজ্য নয়। ফলে কেউ যদি ৫০ বা ১০০ বছর পরও প্রমাণ করতে পারেন যে তিনি জমির বৈধ উত্তরাধিকারী, তাহলে আদালতের মাধ্যমে তিনি তার জমির মালিকানা ফিরে পেতে পারেন।

এছাড়া, জমি কেনার সময় খতিয়ান, দাগ ও দলিল ভালোভাবে যাচাই না করলে ভবিষ্যতে জমির ওপর মালিকানা হারানোর ঝুঁকি থাকে। বিক্রেতার প্রকৃত মালিকানা না থাকলে, কেনা জমি নিয়ে ক্রেতাকেও মামলার সম্মুখীন হতে হতে পারে।

অবশেষে, আইন বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিয়েছেন, উত্তরাধিকার সম্পত্তির ক্ষেত্রে যথাযথভাবে আপোষ বণ্টননামা দলিল প্রস্তুত করে এবং নামজারি সম্পন্ন করেই জমির মালিকানা নিশ্চিত করা উচিত। অন্যথায় পরিবারের মধ্যে বিবাদ, সম্পত্তি হারানো কিংবা দীর্ঘদিনের আইনি ঝামেলার মুখে পড়ার আশঙ্কা থাকে।

কেএইচ/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে