ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
Sharenews24

পলাতক অবস্থায়ও ‘ল্যাং মারামারি’ করছেন আ’লীগ নেতারা

২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৪ ১৭:০৯:৩৮
পলাতক অবস্থায়ও ‘ল্যাং মারামারি’ করছেন আ’লীগ নেতারা

নিজস্ব প্রতিবেদক : ২০২৪ সাল বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে এক নাটকীয় ও ঘটনাবহুল মোড় নেয়। ৫ আগস্ট ২০২৪—এই দিনটিই ছিল আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন দীর্ঘদিনের সরকার পতনের দিন। দীর্ঘ সময় রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যান এবং এর মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীদের রক্তক্ষয়ী আন্দোলন ও দলীয় ভাঙনের সম্মিলিত চাপে সরকারের পতন ঘটে।

আন্তর্জাতিক চক্রান্ত না ভেতরের বিশ্বাসঘাতকতা?

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম নর্থইস্ট নিউজ ইন্ডিয়া তাদের এক প্রতিবেদনে এই পতনের পেছনে বহুমাত্রিক কারণ তুলে ধরেছে। প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, শেখ হাসিনার সরকার পতনের পেছনে সক্রিয়ভাবে কাজ করেছে মার্কিন ‘ডিপ স্টেট’। তারা আওয়ামী লীগের তিন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিকে প্রভাবিত করে বলে দাবি করা হয়। এই তিনজন হলেন—প্রধানমন্ত্রীর সাবেক বাণিজ্য উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, এবং সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী ড. মোহাম্মদ এ আরাফাত।

এই তিনজনই আন্দোলন দমনে বিশেষ ভূমিকা পালন করছিলেন, কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাদের ভূমিকা ছিল উল্টো—তারা সরকারের ভিতকে নাড়িয়ে দেয় বলে অভিযোগ ওঠে।

দল ভাঙলেও বেড়েছে অন্তর্দ্বন্দ্ব

সরকার পতনের পর আওয়ামী লীগ কার্যত ভেঙে পড়ে। এক সময় যারা হাসিনার আশেপাশে ছিলেন, তারাই একে অপরকে ‘বিশ্বাসঘাতক’ আখ্যা দিয়ে নিজেদের অবস্থান পাকাপোক্ত করতে মরিয়া হয়ে ওঠেন। দলের অভ্যন্তরে কোন্দল, প্রতিদ্বন্দ্বিতা এবং নেতৃত্বহীনতা আরও প্রকট হয়ে ওঠে।

বর্তমানে জানা গেছে, সালমান এফ রহমান ও আনিসুল হক কারাগারে আছেন, আর মোহাম্মদ এ আরাফাত ভারতে আত্মগোপনে রয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার অপব্যবহার ও আন্দোলন দমনে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগও রয়েছে।

শেখ হাসিনার একাকীত্ব ও পতনের পূর্বাভাস

প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, শেখ হাসিনা ২০২৩ সালের শেষ দিক থেকেই আন্তর্জাতিক চাপে নিঃসঙ্গ হয়ে পড়েছিলেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে কোয়াডে যোগদান, সামরিক চুক্তি, গ্যাস-তেল ব্লক মার্কিন কোম্পানিকে প্রদান ও মিয়ানমার সীমান্ত ইস্যুতে চাপে পড়ে তিনি কূটনৈতিকভাবে কোণঠাসা হয়ে পড়েন।

চীনের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করতে গিয়েও ব্যর্থ হন। তার একাকীত্ব ও আন্তর্জাতিক মিত্রদের থেকে দূরত্ব রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে তার পতনের প্রধান কারণগুলোর একটি।

কলকাতায় আশ্রিত নেত্রী ও দলীয় বিশৃঙ্খলা

বর্তমানে শেখ হাসিনা ভারতের কলকাতায় অবস্থান করছেন বলে গুঞ্জন রয়েছে। সেখান থেকে তিনি দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার চেষ্টা করলেও বিভাজন, অসন্তোষ ও ক্ষমতা লাভের অসুস্থ প্রতিযোগিতা দলকে আরও দুর্বল করে তুলেছে।

এমনকি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের নাকি নেত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেওয়ার নাম করে নেতাকর্মীদের কাছ থেকে অর্থ আদায় করছেন।

মিডিয়া ব্যবহারের অভিযোগ

অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষক মনে করেন, দলের একটি অংশ ভেতরে থেকেই ভাঙন ও বিভাজনকে ত্বরান্বিত করছে। তারা নিজেদের পক্ষে জনমত গঠনের জন্য অখ্যাত বা আঞ্চলিক সংবাদমাধ্যম ব্যবহার করে গোপন তথ্য ও প্রপাগান্ডা ছড়াচ্ছে। নর্থইস্ট নিউজ ইন্ডিয়া–এর মতো মাধ্যমকে সেই উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হচ্ছে বলেও সন্দেহ রয়েছে।

কেএইচ/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে