ঢাকা, শনিবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২৫
Sharenews24

২০২৬ সালে বৈশ্বিক বাজারে স্থিতিশীলতা ও চ্যালেঞ্জের পূর্বাভাস

২০২৫ ডিসেম্বর ২০ ১৯:২৫:৩৩
২০২৬ সালে বৈশ্বিক বাজারে স্থিতিশীলতা ও চ্যালেঞ্জের পূর্বাভাস

নিউজ ডেস্ক: ২০২০ সালের পর থেকে বৈশ্বিক পণ্যবাজারে নানা ধরনের উত্থান-পতন দেখা গেছে। করোনাকালীন সরবরাহ বিঘ্ন, যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কনীতি, আন্তর্জাতিক সংঘাত ও নিষেধাজ্ঞার কারণে চাহিদা ও সরবরাহে বড় দোলাচল হয়েছে। তবে ২০২৬ সালে বাজারে কিছুটা স্থিতিশীলতা ফিরে আসতে পারে। বিশ্লেষকরা বলছেন, পণ্যের ভবিষ্যৎ তিনটি প্রধান ভাগে বিভক্ত হবে।

প্রথম ভাগে থাকবে জ্বালানি ও খাদ্যপণ্য। যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপ এবং চীনের অর্থনৈতিক মন্দা চাহিদা কমিয়ে রাখলেও সরবরাহ তুলনামূলকভাবে বেশি থাকবে। নতুন প্রকল্পের কারণে প্রাকৃতিক গ্যাস উৎপাদন রেকর্ড মাত্রায় পৌঁছেছে। উষ্ণ জলবায়ু ও ২০২৫ সালের ভালো ফলনের কারণে গম, ভুট্টা ও সয়াবিনের বৈশ্বিক মজুতও বেড়েছে।

এই বিভাগে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উদাহরণ হলো অপরিশোধিত তেল। রাশিয়ার তেলের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের সম্পূর্ণ অবরোধের আশঙ্কা কম। মধ্যবর্তী নির্বাচনের আগে জ্বালানির দাম কম রাখার চেষ্টা হতে পারে। উপসাগরীয় দেশগুলো উৎপাদন বাড়ালে বাজারে তেলের যোগান আরও বাড়বে এবং দাম কমে চাহিদা পুনরায় বাড়ার সুযোগ তৈরি হতে পারে।

দ্বিতীয় ভাগে রয়েছে উচ্চ চাহিদাসম্পন্ন পণ্য, বিশেষত সোনা। রাজনৈতিক অস্থিরতা, ভূরাজনৈতিক সংকট এবং যুক্তরাষ্ট্রে সুদের হারের সম্ভাব্য হ্রাস বিনিয়োগকারীদের নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে সোনার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। ২০২৫ সালে আউন্সপ্রতি সোনার দাম চার হাজার ডলার ছাড়ালেও ২০২৬ সালে তা সাড়ে চার হাজার ডলার স্পর্শ করতে পারে। রুপার চাহিদাও একই সঙ্গে বাড়তে থাকবে।

তৃতীয় ভাগে রয়েছে শিল্পধাতু, যার ভবিষ্যৎ পুরো পণ্যবাজারের স্থিতিশীলতা বা দরপতনের ওপর নির্ভর করবে। এই বিভাগের প্রধান সূচক হলো তামা, যা বৈশ্বিক অর্থনীতির স্বাস্থ্য নির্ধারণে ব্যবহৃত হয়। জুলাই ২০২৫-এ যুক্তরাষ্ট্রে তামার ওপর শুল্ক ঘোষণার পর দাম রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছিল। শুল্ক কাঁচা তামার নয়, কেবল তামাজাত পণ্যের ওপর প্রযোজ্য হওয়ায় দাম কিছুটা কমলেও আবার বেড়েছে। ২০২৬ সালে তামার বাজার কিছুটা অস্থির থাকতে পারে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, শুল্কনীতি এবং অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা মার্কিন ডলারকে শক্তিশালী করতে পারে, যা অন্যান্য মুদ্রায় লেনদেনকারীর ক্রয়ক্ষমতা কমিয়ে দিতে পারে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুদের হার কমালে বিপরীত প্রভাব দেখা যেতে পারে। বৈদ্যুতিক গাড়ির বিক্রি দ্রুত বাড়লে ব্যাটারি, তার ও মোটরে ব্যবহৃত তামার চাহিদাও হঠাৎ বেড়ে যাবে। সরবরাহ বিঘ্ন বা প্রকল্প বিলম্ব বাজারে নতুন প্রভাব ফেলতে পারে।

সব মিলিয়ে, ২০২৬ সালে পণ্যবাজারে উত্তেজনার পরিবর্তে বাস্তবতার কঠিন পরীক্ষা অপেক্ষা করছে। বিনিয়োগকারীরা তামাসহ শিল্পধাতু এবং জ্বালানি ও খাদ্যপণ্যের ওপর নজর রাখবেন, যাতে নতুন চাহিদা ও দরপতনের ধাক্কা সঠিকভাবে মাপা যায়।

এমজে/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

অর্থনীতি এর সর্বশেষ খবর

অর্থনীতি - এর সব খবর



রে