ঢাকা, রবিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫
Sharenews24

‘সিনিয়রকে ধরো, বাকিদের শেষ করো’

২০২৫ মে ২১ ১৭:৪৯:১৯
‘সিনিয়রকে ধরো, বাকিদের শেষ করো’

নিজস্ব প্রতিবেদক: রেডিওর শব্দে ঝিঁঝিঁ ধরা গেলেও আদেশটি ছিল স্পষ্ট, ‘কমান্ডারকে ধরে ফেলো, বাকিদের মেরে ফেলো।’ এই ভয়ঙ্কর বার্তাটি ছিল একাধিক রেডিও যোগাযোগের অংশ। ইউক্রেনীয় কর্মকর্তাদের দাবি অনুযায়ী, এই অডিও প্রমাণ করে রুশ সেনাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আত্মসমর্পণকারী ইউক্রেনীয় সৈন্যদের হত্যা করার নির্দেশ দিচ্ছেন।

এই রেডিও বার্তাগুলো ইউক্রেনের গোয়েন্দা বিভাগ কর্তৃক রেকর্ড হয়েছে এবং সিএনএন তা একটি ইউক্রেনীয় গোয়েন্দা কর্মকর্তার মাধ্যমে পেয়েছে। এই বার্তাগুলোর সময় ও তথ্য জাপোরিঝিয়া অঞ্চলে গত নভেম্বরে সংঘটিত এক গণহত্যার ড্রোন ফুটেজের সঙ্গে মিল পাওয়া গেছে।

ভিডিওতে দেখা যায়, ছয়জন ইউক্রেনীয় সৈন্য মাটিতে উপুড় হয়ে শুয়ে আছেন, যাদের মধ্যে অন্তত দুজনকে খুব কাছ থেকে গুলি করা হয় এবং একজনকে আলাদা করে নিয়ে যাওয়া হয়।

ইউক্রেনের প্রসিকিউটররা এই হত্যাকাণ্ডের তদন্ত করছে। সেই তদন্তে এই রেডিও বার্তাগুলোকে গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হচ্ছে।

সিএনএন যদিও স্বাধীনভাবে বার্তাগুলোর সত্যতা যাচাই করতে পারেনি, তবে একটি ফরেনসিক বিশ্লেষণ বলেছে বার্তাগুলো বিকৃত নয় বলে মনে হয়।

বার্তাগুলোতে এক রুশ কমান্ডারকে শোনা যায় যিনি বারবার হত্যার আদেশ দিচ্ছেন। তার নাম বা পদবি নিশ্চিত করা যায়নি। তবে বার্তায় ‘আরতা’ ও ‘বেলি’ নামে দুই সৈন্যের ডাকনাম উল্লেখ আছে।

ড্রোন ফুটেজ ও রেডিও বার্তার সময়মত মিল রয়েছে—বিশেষ করে ১২টা ২২ মিনিটে কমান্ডারের প্রথম আদেশ, ‘কে কমান্ডার? তাকে ধরো, বাকিদের মেরে ফেলো।’

চার মিনিট পর তিনি আবার বলেন, ‘তুমি করো এটা। কমান্ডারকে ধরো, অন্যদের গুলি করো।’ ১২টা ২৮ মিনিটে আবার আদেশ, ‘তাড়াতাড়ি করো! সিনিয়রকে ধরো, বাকিদের শেষ করো।’

ভিডিওতে দেখা যায় এক রুশ সেনা এগিয়ে এসে একজন ইউক্রেনীয় সৈন্যকে খুব কাছ থেকে গুলি করে। এরপর রেডিওতে শোনা যায়, ‘তাদের শেষ করেছ? আমি জানতে চাই... শেষ করেছ?’

ভিডিওতে আরেকজন ইউক্রেনীয় সৈন্যকে, যিনি সম্ভবত কমান্ডার, তাকে দাঁড়াতে ও বডি আর্মার খুলে ফেলতে দেখা যায়, তারপর তাকে নিয়ে যাওয়া হয়। সঙ্গে সঙ্গে রুশ কমান্ডার ড্রোন দেখার পর আশঙ্কা প্রকাশ করেন এবং পিছু হটার নির্দেশ দেন।

এই পুরো ঘটনার মিল রয়েছে স্যাটেলাইট ইমেজ ও নভোডারিভকা গ্রামে সংঘটিত সংঘর্ষের ভূখণ্ডের সঙ্গে। মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রমাণ সংগ্রহকারী সংস্থা সেন্টার ফর ইনফরমেশন রেজিলেন্স ও মাক্সার টেকনোলোজিসের উপাত্তের সঙ্গে তা সামঞ্জস্যপূর্ণ।

এই ঘটনার মাধ্যমে আবারও প্রকাশ পাচ্ছে ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধাপরাধ ও আন্তর্জাতিক আইন ভাঙার বাস্তবতা, যা নিয়ে এখন আন্তর্জাতিক তদন্তের দাবি আরও জোরালো হয়েছে।

মুয়াজ/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

আন্তর্জাতিক এর সর্বশেষ খবর

আন্তর্জাতিক - এর সব খবর



রে