ঢাকা, রবিবার, ১৭ আগস্ট ২০২৫
Sharenews24

দেড় মাস ধরে লাপাত্তা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি

২০২৪ অক্টোবর ০১ ২১:৫২:৩৪
দেড় মাস ধরে লাপাত্তা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি

নিজস্ব প্রতিবেদক: ছাত্র-জনতার দুর্বার গণআন্দোলনে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের দিন থেকে সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (সুবিপ্রবি) উপাচার্য ড. মো. আবু নঈম শেখকে কর্মস্থলে দেখা যায়নি।

দুই বছরের বেশি সময় আগে নিয়োগ পাওয়া এ উপাচার্যের মোবাইল ফোওেন গত এক সপ্তাহ ধরে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও কোনো সাড়া মিলছে না।

ড. আবু নঈম শেখ বেশিরভাগ সময়ই ঢাকায় অবস্থান করতেন। কয়েক মাস পরপর দুয়েক দিনের জন্য সুনামগঞ্জ যেতেন। তার উদাসীনতা ও অনিয়মের কারণেই প্রতিষ্ঠার চার বছর পরও এখনো স্থায়ী ক্যাম্পাস তৈরি হয়নি। গতি পায়নি বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রমও।

বিশ্ববিদ্যালয়টি তথ্যমতে, ২০২২ সালের ১৪ জুন সুবিপ্রবির প্রথম উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পান তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনির আস্থাভাজন ও ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আবু নঈম শেখ।

ভিসি হিসাবে নিয়োগের পর থেকে ড. আবু নঈম শেখের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ ওঠা শুরু হয়। উপাচার্য হওয়ার পর তিনি আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক উপকমিটির সদস্য নির্বাচিত হন।

একজন উপাচার্য হয়েও তিনি সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নানের বাসায় দলীয় নেতাকর্মীর মতো বসে থাকতেন। সুনামগঞ্জের আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গেও গড়ে তোলেন সখ্যতা।

এলাকায় জনশ্রুতি রয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আবু নঈম হলেও সবকিছু চলত সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নানের এপিএস ও শান্তিগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাসনাত হোসেনের ইশারায়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের জনবল নিয়োগ থেকে শুরু থেকে ঠিকাদারি কিংবা স্থায়ী ক্যাম্পাসের জায়গা দখল পর্যন্ত সবকিছুতেই হাসনাতের পরামর্শ মেনে চলতেন উপাচার্য। তার চাপেই বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় শুরু থেকেই অনিয়মের আশ্রয় নেন অধ্যাপক আবু নঈম।

২০২৩ সালের ২৩ আগস্ট একটি জাতীয় দৈনিকের প্রতিবেদনে বলা হয়, সুবিপ্রবিতে ১০-১৫ লাখ টাকার বিনিময়ে চাকরি দিচ্ছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের একজন প্রভাবশালী নেতা, যেখানে উপাচার্যেরও সায় আছে। ওই প্রতিবেদনের কোনো প্রতিবাদ জানাননি উপাচার্য কিংবা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। অধ্যাপক আবু নঈমের সব অনিয়মে সহযোগিতা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ে রেজিস্ট্রার জিএম শহিদুল আলম। রেজিস্ট্রার নিয়োগে যোগ্যতার চেয়ে নিজের প্রতি আনুগত্য থাকা ব্যক্তিকে বেছে নেন উপাচার্য।

বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগ পরীক্ষা অফিস সহায়ক ও কম্পিউটার অপারেটর পদে লোকবল নিয়োগের জন্য চলতি বছর ১৯ জানুয়ারি এক চিঠিতি নিয়োগ পরীক্ষার ভেন্যু ঠিক করা হয় ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (ডুয়েট)। এ নিয়ে মানববন্ধনসহ নানা আন্দোলন করে জেলার সচেতন মহল।

পরে সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার একটি কলেজে নেওয়া হয় সেই পরীক্ষা। তবে ওই লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের ব্যবহারিক ও মৌখিক পরীক্ষার জন্য আবার ডুয়েটে ডাকা হয়।

এ পরীক্ষায় হিসাবরক্ষক পদে নিয়োগ পান হাসনাত হোসেনের সহোদর মনোয়ার হোসেন। নিয়মবহির্ভূতভাবে লিখিত পরীক্ষা ছাড়াই মনোয়ারকে নিয়োগ দেন উপাচার্য।

শুধু তাই নয়, নিয়োগ পরীক্ষায় যাদের চাকরি হয় তাদের সঙ্গে আগে থেকে যোগাযোগ ছিল হাসনাত ও উপাচার্যের। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন সময় যে নিয়োগ পরীক্ষা হয়েছে, তা হয়েছে কখনো ঢাকায়, কখনো গাজীপুরে আবার কখনো সিলেটে।

অভিযোগ রয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর থেকে যে কয়টি পদে লোক নিয়োগ করা হয়েছে, সেখানেই তিনি করেছেন স্বজনপ্রীতি।

মামুন/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে