ঢাকা, শনিবার, ১৬ আগস্ট ২০২৫
Sharenews24

এসি ল্যান্ডের এলআর ফান্ডে কোটি টাকার গোপন লেনদেন

২০২৫ আগস্ট ১৬ ০৭:৩৯:১৩
এসি ল্যান্ডের এলআর ফান্ডে কোটি টাকার গোপন লেনদেন

নিজস্ব প্রতিবেদক: টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলায় প্রতিবছর গড়ে সাত হাজারেরও বেশি জমির নামজারি বা খারিজ হয়। প্রতিটি খারিজে সরকারি ফি নির্ধারিত ১ হাজার ১৭০ টাকা হলেও বাড়তি নেওয়া হয় আরও ২ হাজার টাকা। ওই অর্থ জমা হয় উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) বা এসি ল্যান্ড কার্যালয়ের এলআর (লোকাল রিলেশনস) ফান্ডে। শুধু গত বছরেই এ খাতে আদায় হয়েছে দেড় কোটির বেশি টাকা।

প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, মির্জাপুরের ১৪ ইউনিয়ন ও একটি পৌর এলাকায় প্রতিবছর সাত থেকে সাড়ে সাত হাজার নামজারি সম্পন্ন হয়। এর মধ্যে ১২টি ইউনিয়নে রয়েছে উপসহকারী ভূমি কর্মকর্তার কার্যালয়, যেগুলো থেকেই এসব টাকা আদায় করা হয়।

তবে অভিযোগ রয়েছে, এলআর ফান্ড ও কন্টিনজেন্সি বিলের টাকা যথাযথভাবে ব্যয় না করে লোপাট করা হচ্ছে। সরকার প্রতি বছর খাতা, কলমসহ আনুষঙ্গিক খরচের জন্য সাড়ে তিন থেকে পাঁচ লাখ টাকা বরাদ্দ দিলেও ইউনিয়ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা বলছেন, এই বরাদ্দ তাদের হাতে পৌঁছায় না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন উপসহকারী ভূমি কর্মকর্তা জানান, এসি ল্যান্ড অফিসের কোনো প্রত্যক্ষ খরচ নেই। বরং ইউনিয়ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের কাছ থেকে জোর করে টাকা আদায় করা হয়। তাদের ভাষায়, ‘ওনারা শুধু টাকা নেন, আমরা রাতদিন খাটাখাটনি করি।’

একজন কর্মকর্তা অভিযোগ করেন, দুই বছর ধরে দায়িত্বে থাকলেও কন্টিনজেন্সি বাবদ কোনো অর্থ পাননি। তিনি বলেন, ‘ওপরে বসেই টাকা খেয়ে ফেলে।’ এ প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, ‘আমাদের ওপরে তো উপজেলা অফিসই।’

এলআর ফান্ডের অর্থ কী কাজে ব্যবহৃত হয় জানতে চাইলে আরেক কর্মকর্তা বলেন, ‘এই টাকা শুধু পকেটেই যায়, ইউনিয়ন ভূমি অফিস এর কোনো অংশ পায় না।’ তিনি আরও জানান, নামজারি থেকে যে অতিরিক্ত টাকা নেওয়া হয়, সেখান থেকেই ইউনিয়ন অফিসের খরচ মেটানো হয়।

অভিযোগ করলেও কোনো প্রতিকার পাওয়া যায় না জানিয়ে এক কর্মকর্তা বলেন, ‘আমাদের এসিআর (বার্ষিক গোপনীয় প্রতিবেদন) তো এসি ল্যান্ড লেখেন। তাই অভিযোগ করার সাহস পাই না।’

তবে মির্জাপুরের এসি ল্যান্ড মাসুদুর রহমান এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘এসি ল্যান্ড অফিসে কোনো এলআর ফান্ড নেই। এলআর ফান্ডের নামে কোনো টাকা নেওয়া হয় না। ইউনিয়ন পর্যায়ে কন্টিনজেন্সি খরচের বরাদ্দ নিয়মিত পৌঁছে দেওয়া হয়।’

এ বিষয়ে টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘অভিযোগের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করা হবে। তদন্তে প্রমাণ মিললে দায়ীদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

মারুফ/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে