ঢাকা, শনিবার, ১৬ আগস্ট ২০২৫
Sharenews24

ফ্যাসিস্ট সরকার মোবাইল ফোনে আড়ি পাততে যা করেছিল

২০২৫ আগস্ট ১৬ ০০:১৮:৩৯
ফ্যাসিস্ট সরকার মোবাইল ফোনে আড়ি পাততে যা করেছিল

নিজস্ব প্রতিবেদক: ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার নাগরিকদের ব্যক্তিগত তথ্য চুরি এবং মোবাইল ফোনে আড়ি পাতার জন্য দেড় হাজার কোটি টাকারও বেশি খরচ করে বিভিন্ন নজরদারি সরঞ্জাম কিনেছিল। ২০১৬ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে পুলিশ, র‌্যাব এবং ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশনস মনিটরিং সেন্টার (এনটিএমসি) যৌথভাবে এসব সরঞ্জাম কেনে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশের নিরাপত্তার নামে কেনা এই প্রযুক্তিগুলো বিরোধী মত দমনে ব্যবহৃত হতো।

দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং বহিঃশত্রুর আক্রমণ ঠেকাতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোবাইল ফোনে আড়ি পেতে থাকে, যা স্বাভাবিক। তবে, এই প্রযুক্তির অপব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাবেক সরকার আইএমএসআই ক্যাচার, জিপিএস ট্র্যাকার, স্যাটেলাইট যোগাযোগ বিশ্লেষণ যন্ত্র এবং ‘ম্যান-ইন-দ্য-মিডল’ টুলের মতো বিভিন্ন অত্যাধুনিক প্রযুক্তি কিনেছিল। এসব যন্ত্র কেনার পেছনে দেড় হাজার কোটি টাকার বেশি ব্যয় হয়েছে বলে জানা গেছে।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর তানভীর হাসান জোহা বলেন, রাষ্ট্রের নিরাপত্তার জন্য এমন যন্ত্রের প্রয়োজন আছে, তবে এর ব্যবহারে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা থাকতে হবে। তিনি মনে করেন, যখন কোনো ফোন নম্বরকে নজরদারির আওতায় আনার কারণগুলো জবাবদিহিতার মধ্যে আনা হবে, তখন কেউ চাইলেই যে কাউকে হয়রানি করতে পারবে না। তিনি বলেন, “আমাদের গোয়েন্দাবৃত্তিকে একাডেমিকভাবে এবং জবাবদিহিতার আওতায় আনা উচিত।”

সমাজ ও অপরাধ বিশেষজ্ঞ ড. তৌহিদুল হক বলেন, রাষ্ট্রযন্ত্রের অপব্যবহারের কারণে নিরাপত্তা নিশ্চিত তো হয়ইনি, বরং মানুষের মত প্রকাশের স্বাধীনতা খর্ব হয়েছে। তিনি বলেন, নিরাপত্তা ও সঠিক কাজ সম্পন্ন করার—কোনোটিই পরিপূর্ণভাবে হয়নি। আমরা চাই, এই ভুলগুলোর যেন আর পুনরাবৃত্তি না ঘটে। কোনো সাধারণ মানুষ যেন হয়রানির শিকার না হয়, এবং আড়ি পাতার নামে বিপরীত মতাদর্শের মানুষ বা রাজনৈতিক দলকে যেন হয়রানি করা না হয়।

তানভীর জোহা আরও মনে করেন, সাবেক সরকারের আমলে যত গুম-খুনের ঘটনা ঘটেছে, তার দায় এনটিএমসি এড়াতে পারে না। তিনি বলেন, "বিগত সরকারের সময় যত গুম-খুন হয়েছে, সেগুলো যদি তদন্ত করা হয়, তাহলে এনটিএমসি তার দায় থেকে বের হয়ে আসতে পারবে না।" বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসব প্রযুক্তি কেনার পেছনে রাজনৈতিক সুবিধা দেওয়ার মতো অনিয়ম ঘটেছে এবং এর সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করা না গেলে মানবাধিকার হুমকির মুখে পড়বে।

মারুফ/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে