ঢাকা, রবিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫
Sharenews24

সেন্ট্রাল ফার্মা নিয়ে নিরীক্ষকের ‘গোয়িং কনসার্ন’ শঙ্কা

২০২৫ ডিসেম্বর ১৪ ০৮:০২:২৭
সেন্ট্রাল ফার্মা নিয়ে নিরীক্ষকের ‘গোয়িং কনসার্ন’ শঙ্কা

নিজস্ব প্রতিবেদক: শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর পক্ষ থেকে শাস্তির সম্মুখীন হতে পারে। এর মধ্যে জরিমানা, লেনদেন সুবিধা স্থগিতকরণ বা শেয়ারবাজার থেকে তালিকাভুক্তি বাতিল (ডিলিস্টিং) হওয়ার মতো গুরুতর পদক্ষেপও অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে। কোম্পানির বহিঃনিরীক্ষক প্রতিষ্ঠান আশরাফ উদ্দিন অ্যান্ড কোং ২-২৪-২৫ অর্থবছরের নিরীক্ষা প্রতিবেদনে এই বিষয়ে সতর্ক করেছে।

নিরীক্ষক সংস্থাটি স্পষ্ট করে উল্লেখ করেছে, ওষুধ প্রস্তুতকারক কোম্পানিটি ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) তালিকাভুক্তি ফি এবং সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেড (সিডিবিএল) ফিসহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিধিবদ্ধ ও নিয়ন্ত্রক ফি পরিশোধ করতে ব্যর্থ হয়েছে। নিরীক্ষা প্রতিবেদনে কোম্পানিটির আর্থিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে একটি কঠিন চিত্র তুলে ধরা হয়েছে এবং এটি ‘গোয়িং কনসার্ন’ হিসেবে তার কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার ক্ষমতা নিয়ে "বস্তুগত অনিশ্চয়তা" রয়েছে বলে চিহ্নিত করা হয়েছে।

নিরীক্ষকের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, সেন্ট্রাল ফার্মার নেতিবাচক সংরক্ষিত আয় রয়েছে, যা এর পরিশোধিত মূলধনের প্রায় সমান। কোম্পানিটির ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ বর্তমান দায় মেটানোর জন্য পর্যাপ্ত পরিচালন ক্যাশ প্রবাহ তৈরি করতে নতুন তহবিল সংগ্রহে ব্যর্থ হয়েছে। এই পরিচালন সমস্যাগুলোর পাশাপাশি কোম্পানিটি তার ড্রাগ লাইসেন্স নবায়ন করেনি, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) থেকে উল্লেখযোগ্য কর দাবির সম্মুখীন এবং সীমিত উৎপাদন ক্ষমতার কারণে এটির পণ্য বিক্রির খরচ মোট টার্নওভারের চেয়ে বেশি।

কোম্পানির আর্থিক বিবরণী ঘিরে উল্লেখযোগ্য অস্বচ্ছতা রয়েছে। নিরীক্ষক জানিয়েছেন, ঘোষিত সম্পদের মধ্যে ২৮ কোটি ৬৬ লাখ টাকা অগ্রিম আয়কর ব্যালেন্সের বিপরীতে কোনো সহায়ক প্রমাণপত্র ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ দিতে পারেনি, ফলে তারা এটির সত্যতা যাচাই করতে পারেনি। এছাড়াও, জনতা ব্যাংক থেকে নেওয়া তিনটি ঋণের অবস্থা যাচাই করা যায়নি। ২০২২ সালের জুন মাস থেকে এই ঋণের ব্যালেন্স অপরিবর্তিত রয়েছে। ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ কিস্তির টাকা পরিশোধ করেনি বা সুদের জন্য কোনো সংস্থানও দেখায়নি, এমনকি নভেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত ব্যালেন্স নিশ্চিতকরণের জন্য ব্যাংকের অনুরোধেও কোনো সাড়া মেলেনি।

কোম্পানির রাজস্ব সংক্রান্ত স্বচ্ছতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। নিরীক্ষা নোটে বলা হয়েছে, ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ মাসিক ভ্যাট রিটার্ন দিলেও লেনদেনগুলোর সত্যতা যাচাই করার জন্য খাঁটি বিক্রয় চালান দেখাতে ব্যর্থ হয়েছে। নিরীক্ষক আরও জানিয়েছেন, সমস্ত বিক্রয় নগদ অর্থে করা হয়েছিল এবং পণ্যভিত্তিক কোনো সমন্বয় না থাকায় ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং স্ট্যান্ডার্ডস অনুযায়ী কোম্পানির রাজস্বের নির্ভুলতা এবং পূর্ণতা যাচাই করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে।

আর্থিক অনিয়ম ছাড়াও, কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডিং সংক্রান্ত সিকিউরিটিজ আইন লঙ্ঘন করছে। বর্তমানে স্পন্সর ও পরিচালকদের সম্মিলিত শেয়ারহোল্ডিং পরিশোধিত মূলধনের বাধ্যতামূলক ৩০ শতাংশ থাকার কথা থাকলেও তা মাত্র ৭.৬৭ শতাংশ, যা প্রয়োজনীয়তা থেকে অনেক কম। ২০১৩ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া সেন্ট্রাল ফার্মা ২০২০ অর্থবছর থেকে কোনো ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেনি।

সালাউদ্দিন/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে