ঢাকা, শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫
Sharenews24

শীতের রোগবালাই থেকে বাঁচতে জেনে নিন উপায়

২০২৫ ডিসেম্বর ১৩ ১১:৩৫:১৫
শীতের রোগবালাই থেকে বাঁচতে জেনে নিন উপায়

নিউজ ডেস্ক: শীত মৌসুম এলেই বাতাস হয়ে ওঠে শুষ্ক ও ঠান্ডা, আর এই পরিবেশে নানা ধরনের রোগজীবাণু দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার সুযোগ পায়। বিশেষ করে শ্বাসতন্ত্রে সংক্রমণ ঘটানো ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার প্রকোপ এ সময় বেশি দেখা যায়। ঠান্ডাজনিত কারণে শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়ে এবং ঘরের ভেতর বেশি সময় কাটানোর ফলে মানুষের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শ তৈরি হয়, যা সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে।

শীতকালে সবচেয়ে বেশি দেখা যায় ভাইরাসজনিত সংক্রমণ। সাধারণ সর্দি-কাশি মূলত রাইনোভাইরাসের কারণে হয়, যার লক্ষণ হিসেবে হাঁচি, নাক দিয়ে পানি পড়া ও হালকা গলাব্যথা দেখা দিতে পারে। অন্যদিকে ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসে আক্রান্ত হলে উপসর্গ অনেক বেশি তীব্র হয়। এতে উচ্চ জ্বর, শরীরব্যথা, পেশিতে যন্ত্রণা, অতিরিক্ত ক্লান্তি এবং তীব্র কাশি দেখা দেয়, যা দৈনন্দিন জীবনযাত্রাকে ব্যাহত করতে পারে।

এ ছাড়া শিশুদের ক্ষেত্রে রেসপিরেটরি সিনসিশিয়াল ভাইরাস বা আরএসভি একটি বড় ঝুঁকি। এই ভাইরাসের সংক্রমণে ব্রঙ্কিওলাইটিসসহ মারাত্মক শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা দেখা দিতে পারে, যা অনেক সময় হাসপাতালে চিকিৎসার প্রয়োজন তৈরি করে।

ভাইরাসজনিত অসুখের পাশাপাশি শীতকালে ব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রমণও উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। অনেক ক্ষেত্রে সাধারণ সর্দি-কাশি বা গলাব্যথা থেকে নিউমোনিয়া কিংবা স্ট্রেপটোকক্কাস সংক্রমণের মতো জটিল রোগ দেখা দিতে পারে। এসব অবস্থায় অ্যান্টিবায়োটিকসহ চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা গ্রহণ জরুরি হয়ে ওঠে।

শীতকালের সংক্রমণ এড়াতে এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে কিছু সচেতন অভ্যাস গড়ে তোলা প্রয়োজন। নিয়মিত হাত ধোয়া ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতার সবচেয়ে কার্যকর উপায়। খাওয়ার আগে, টয়লেট ব্যবহারের পর, হাঁচি-কাশির পর বা বাইরে থেকে ফিরে সাবান ও পানি দিয়ে হাত ধোয়ার অভ্যাস রোগ ছড়ানো রোধে বড় ভূমিকা রাখে। হাঁচি বা কাশির সময় টিস্যু বা রুমাল ব্যবহার করা এবং তা নির্দিষ্ট স্থানে ফেলে দেওয়া উচিত।

পাশাপাশি সুষম ও পুষ্টিকর খাবার শরীরকে ভেতর থেকে শক্তিশালী করে। ভিটামিন ‘সি’সমৃদ্ধ ফল যেমন লেবু, কমলা ও আমলকী এবং প্রচুর শাকসবজি নিয়মিত খেলে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ে। শীতকালে অনেকেই কম পানি পান করেন, যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর। তাই পানিশূন্যতা এড়াতে নিয়মিত হালকা গরম পানি পান করা জরুরি।

ঠান্ডা থেকে নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে শরীর উষ্ণ রাখা অত্যন্ত প্রয়োজন। বিশেষ করে মাথা, কান ও গলা ঢেকে গরম পোশাক পরা উচিত। ঘরের ভেতরের তাপমাত্রা আরামদায়ক রাখা এবং সরাসরি ঠান্ডা বাতাসে থাকা এড়িয়ে চললে অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকি কমে।

এ সময় ভিড় এড়িয়ে চলাও গুরুত্বপূর্ণ। অসুস্থ অবস্থায় জনসমাগমপূর্ণ স্থানে গেলে সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা বাড়ে। পাশাপাশি শিশু, বয়স্ক ও দীর্ঘমেয়াদি রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ইনফ্লুয়েঞ্জা ও নিউমোনিয়ার টিকা নেওয়া শীতকালীন জটিলতা প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।

এমজে/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

স্বাস্থ্য এর সর্বশেষ খবর

স্বাস্থ্য - এর সব খবর



রে