ঢাকা, রবিবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
Sharenews24

জমির খতিয়ানে যেকোন ভুল সহজে সংশোধনের সহজ নিয়ম

২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৭ ১৩:২৯:৫৬
জমির খতিয়ানে যেকোন ভুল সহজে সংশোধনের সহজ নিয়ম

নিজস্ব প্রতিবেদক : আপনার জমির নামজারী খতিয়ান বা মিউটেশন খতিয়ানে যদি কোনো ভুল থাকে—যেমন নামের বানানে ভুল, অংশ বসানোর গড়মিল, দাগ নম্বরের অসামঞ্জস্য, বা জমির মালিকানা সংক্রান্ত ভুল—তাহলে এসব ভুলের আইনি প্রতিকার পাওয়া সম্ভব। অনেক সময় দেখা যায়, মূল খতিয়ান হারিয়ে যায় বা কারও দ্বারা জালিয়াতির মাধ্যমে অন্যের নামে জমির খতিয়ান করে নেওয়া হয়। এ ধরনের পরিস্থিতিতে নির্ধারিত প্রক্রিয়া অনুসরণ করে আপনি পুনরায় সঠিকভাবে খতিয়ান সংশোধন বা পুনরুদ্ধার করতে পারেন।

মিউটেশন খতিয়ানে ভুল সংশোধনের প্রক্রিয়া

যদি আপনার জমির মিউটেশন খতিয়ানে কোনো ভুল থাকে, তাহলে আপনি সহকারী কমিশনার (ভূমি) বরাবর একটি সাদা কাগজে আবেদন করতে পারেন। এই আবেদনের সাথে ভুল সংশ্লিষ্ট বিস্তারিত লিখিত বিবরণ এবং ২০ টাকার কোর্ট ফি সংযুক্ত করতে হবে। আবেদন পাওয়ার পর নির্ধারিত শুনানি অনুষ্ঠিত হবে এবং কাগজপত্র সঠিক প্রমাণিত হলে সহকারী কমিশনার (ভূমি) আপনার জমির ভুল সংশোধন করে আগের যথাযথ অবস্থায় ফিরিয়ে দেবেন।

খতিয়ানের মূল কপি হারিয়ে গেলে করণীয়

অনেক সময় খতিয়ানের মূল কপি হারিয়ে যেতে পারে। এক্ষেত্রে প্রথমে আপনাকে নিকটস্থ থানায় গিয়ে একটি জিডি (জেনারেল ডায়েরি) করতে হবে। তারপর জিডির কপি এবং ২০ টাকার কোর্ট ফি সহ একটি সাদা কাগজে আবেদন করে সহকারী কমিশনার (ভূমি) বরাবর হারানো খতিয়ান পুনরুদ্ধারের জন্য আবেদন করতে হবে।

যদি সহকারী কমিশনার (ভূমি) যাচাই-বাছাই শেষে সন্তুষ্ট হন যে খতিয়ানটি সত্যিই হারিয়ে গেছে, তাহলে তিনি নতুন খতিয়ান প্রদানের আদেশ দেবেন। নতুন খতিয়ান পেতে আপনাকে মাত্র ১০০ টাকা পরিশোধ করতে হবে, যার বিনিময়ে একটি ডিসিআর (রসিদ) প্রদান করা হবে।

অন্যান্য জরিপভিত্তিক খতিয়ান হারিয়ে গেলে করণীয়

মিউটেশন খতিয়ান ছাড়াও জমির এসএ (SA), সিএস (CS), আরএস (RS), বিএস (BS) কিংবা অন্য যেকোনো জরিপভিত্তিক খতিয়ান হারিয়ে গেলে বা নষ্ট হয়ে গেলে, সেক্ষেত্রে আপনাকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের রেকর্ড রুমে আবেদন করতে হবে। আবেদনপত্রে খতিয়ান নম্বর এবং মৌজা নম্বর উল্লেখ করতে হবে। এসব তথ্য যাচাই করে রেকর্ড রুম থেকে হারানো খতিয়ানের কপি সরবরাহ করা হয়।

রেকর্ড সংশোধনে করণিক ভুল বা জালিয়াতি হলে করণীয়

রেকর্ডে যদি করণিক ভুল (যেমন, নামের বানান ভুল, দাগ নম্বর বা অংশের গড়মিল, ম্যাপের সাথে অসামঞ্জস্য) বা জালিয়াতির মাধ্যমে তৈরি ভুল থাকে, তাহলে তাও আইনি পথে সংশোধন করা যায়।

এক্ষেত্রে স্টেট অ্যাকুইজিশন অ্যান্ড টেন্যান্সি অ্যাক্ট, ১৯৫০-এর ১৪৩ ধারা এবং প্রজাস্বত্ব বিধিমালা, ১৯৫৫-এর ২৩(৩) ও ২৩(৪) ধারা অনুযায়ী সহকারী কমিশনার (ভূমি) সংশোধনের আদেশ দিতে পারেন। আবেদন পাওয়ার পর তদন্তের মাধ্যমে প্রতিবেদন তৈরি করা হয়। যাচাই-বাছাই শেষে যদি ভুল প্রমাণিত হয়, তাহলে সহকারী কমিশনার বিধি মোতাবেক রেকর্ড সংশোধনের নির্দেশ দেন।

ভূমি মন্ত্রণালয়ের দিকনির্দেশনা ও যোগাযোগ ব্যবস্থা

উল্লেখ্য, এই ধরনের ভুল সংশোধন এবং খতিয়ান সংশ্লিষ্ট আইনি প্রক্রিয়া বিষয়ে ভূমি মন্ত্রণালয় ইতিমধ্যেই একটি গেজেট প্রকাশ করেছে, যা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের জন্য দিকনির্দেশনা হিসেবে কাজ করে।

এছাড়া, আপনি যদি এ সংক্রান্ত বিষয়ে আরও জানতে চান—যেমন কোথায় যাবেন, কাকে আবেদন করবেন, কীভাবে করবেন—তাহলে ভিডিওতে দেওয়া মোবাইল নম্বর ও ইমেইল ঠিকানায় যোগাযোগ করতে পারেন।

খতিয়ান সংশোধন বা পুনরুদ্ধার একটি নির্ধারিত প্রশাসনিক ও আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সম্পন্ন হয়। যথাযথ কাগজপত্র, ফি এবং আবেদন পদ্ধতি অনুসরণ করলে জমির প্রকৃত মালিকানা ফিরে পাওয়া বা সংশোধন করা সম্ভব।

কেএইচ/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে