ঢাকা, রবিবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
Sharenews24

বিতর্কিত সেলিম প্রধানের ৫ দেশের ৫ বউয়ের পরিচয় প্রকাশ

২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৭ ০৯:৩২:২৪
বিতর্কিত সেলিম প্রধানের ৫ দেশের ৫ বউয়ের পরিচয় প্রকাশ

নিজস্ব প্রতিবেদক : বিতর্কিত ব্যবসায়ী সেলিম প্রধান নামটি বাংলাদেশের অপরাধজগত এবং আন্তর্জাতিক প্রতারণার জগতে এক পরিচিত নাম। নানা বেআইনি কর্মকাণ্ড, বহুমাত্রিক বৈবাহিক জীবন এবং কোটি টাকার ঋণ কেলেঙ্কারিতে জড়িত থাকার অভিযোগে তিনি দীর্ঘদিন ধরে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে।

ব্যক্তিগত জীবন: পাঁচ স্ত্রী, পাঁচ দেশ

সেলিম প্রধানের ব্যক্তিগত জীবনও তার মতোই জটিল। তার রয়েছে পাঁচ জন স্ত্রী, যাদের মধ্যে তিনজন অবস্থান করছেন রাশিয়া, আমেরিকা ও জাপানে, এবং দুজন বাংলাদেশে। সবচেয়ে আলোচিত বিষয় হলো, তার সর্বকনিষ্ঠ স্ত্রী একজন সরকারি কর্মকর্তা — সহকারী কাস্টমস কমিশনার, যিনি বর্তমানে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে কর্মরত।

তার স্থায়ী ঠিকানা ঢাকার মোহাম্মদপুরের নূরজাহান রোডে। পিতার নাম হান্নান প্রধান, তবে নিজের প্রকৃত নাম সেলিম মিয়া হলেও পিতার নামের সঙ্গে মিলিয়ে তিনি সেলিম প্রধান নাম গ্রহণ করেন।

সেলিম প্রধানের বিরুদ্ধে রয়েছে একাধিক অবৈধ ব্যবসা ও অপরাধের অভিযোগ:

চাঁদাবাজি: রাজধানীর পশুখাটালগুলো থেকে চাঁদা আদায়।

ক্যাসিনো ও স্পা ব্যবসা: ঢাকায় বিভিন্ন স্পা ও বিউটি পার্লারে ভিআইপিদের জন্য নারী সরবরাহের অভিযোগ।

আন্তর্জাতিক ক্যাসিনো নেটওয়ার্ক: থাইল্যান্ডের পাতায়ায় রয়েছে তার বিলাসবহুল হোটেল, ডিস্কো বার ও অনুমোদনহীন ক্যাসিনো।

অনলাইন জুয়া: দেশের বাইরে পরিচালিত অনলাইন জুয়ার মাধ্যমে বিপুল অর্থ উপার্জনের অভিযোগ।

পাথর চোরাচালান: সিলেট অঞ্চলে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনের সাথেও তার সম্পৃক্ততা রয়েছে।

ভুয়া কোম্পানি: থাইল্যান্ডে তার নামে সাতটি কোম্পানি এবং যুক্তরাষ্ট্র ও থাইল্যান্ডের চারটি ব্যাংকে কয়েক কোটি টাকার অস্বাভাবিক লেনদেন শনাক্ত হয়েছে।

বিদেশে অপকর্ম ও বহিষ্কার

সবকিছু ছাপিয়ে, সেলিম প্রধান জাপানের টোকিওতে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। তবে সেখানেও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে তাকে কালো তালিকাভুক্ত করে জাপান সরকার, এবং শেষ পর্যন্ত তাকে বহিষ্কার করা হয়।

পরে তিনি আমেরিকায় গিয়ে এক আমেরিকান নারীকে বিয়ে করেন এবং সেই স্ত্রীর মাধ্যমে আবার জাপানে প্রবেশের চেষ্টা চালান, কিন্তু জাপান তাকে প্রবেশে অনুমতি দেয়নি।

গ্রেফতার ও ঋণ জালিয়াতি

বাংলাদেশে ফিরে আসার পর সেলিম প্রধানকে গ্রেফতার করা হয়। যদিও আইনের চোখে ধরা পড়লেও, তাকে বেশিদিন কারাভোগ করতে হয়নি। তার বিরুদ্ধে সবচেয়ে আলোচিত অভিযোগ হলো, তিনি রূপালী ব্যাংক থেকে ১০০ কোটি টাকার ঋণ নিয়েছিলেন, যা জাপানের অর্থায়নে একটি শিল্প গড়ার নামে নেওয়া হয়।

কিন্তু বাস্তবে, সেই অর্থ আত্মসাৎ করে তিনি দেশত্যাগ করেন এবং ঋণটি আজও জমা রয়েছে কাগজে-কলমে, প্রকৃত অর্থে কোনো শিল্প গড়ে ওঠেনি।

সেলিম প্রধানের গল্পটি যেন বাস্তব জীবনের কোনো ক্রাইম থ্রিলার। একজন ব্যক্তি কীভাবে রাষ্ট্রীয় কাঠামো, ব্যাংকিং ব্যবস্থা, আন্তর্জাতিক আইন ও মানবিক মূল্যবোধের সীমা পেরিয়ে এই পর্যায়ে পৌঁছাতে পারে, তার বাস্তব উদাহরণ তিনি। এখন প্রশ্ন হলো—এতকিছু করার পরও, তিনি এখন কোথায়? এবং কবে তার বিচার হবে প্রকৃত অর্থে?

কেএইচ/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে