ঢাকা, বুধবার, ১৩ আগস্ট ২০২৫
Sharenews24

ট্রাম্পকে পক্ষে নিয়ে ভারতকে যেভাবে কাবু করেছে পাকিস্তান

২০২৫ আগস্ট ১৩ ০৭:৩৯:৪৩
ট্রাম্পকে পক্ষে নিয়ে ভারতকে যেভাবে কাবু করেছে পাকিস্তান

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক নেতৃত্বে পাকিস্তান সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনিরের উষ্ণ সংবর্ধনা এবং ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে পাকিস্তানের ঘনিষ্ঠতা ভারতের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। চলতি গ্রীষ্মে মুনির দ্বিতীয়বারের মতো যুক্তরাষ্ট্র সফর করেছেন, যেখানে তিনি সামরিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করার পাশাপাশি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গেও ব্যক্তিগত মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেন। একজন সরকারপ্রধান না হয়েও ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে মুনিরকে যে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে, তা অনেক বিশ্লেষকের কাছে বিস্ময়কর।

সম্পর্কের নতুন মোড়

আগে ধারণা করা হয়েছিল, ট্রাম্প ক্ষমতায় ফিরলে ওয়াশিংটন ও ইসলামাবাদের সম্পর্ক খারাপ হবে। অতীতে ট্রাম্প পাকিস্তানকে 'মিথ্যা ও প্রতারণা'র অভিযোগে অভিযুক্ত করেছিলেন। কিন্তু এখন পরিস্থিতি সম্পূর্ণ বিপরীত। যুক্তরাষ্ট্র ও পাকিস্তানের কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নত হচ্ছে, যা ভারতের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। একসময় ট্রাম্প এবং নরেন্দ্র মোদির মধ্যে ঘনিষ্ঠতা থাকলেও বর্তমানে নয়াদিল্লি ওয়াশিংটনের কাছে কিছুটা উপেক্ষিত বলে মনে হচ্ছে।

এশিয়া প্যাসিফিক ফাউন্ডেশনের সিনিয়র ফেলো মাইকেল কুগেলম্যান এ সম্পর্ককে 'নতুন রেনেসাঁ' হিসেবে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, "পাকিস্তান খুব ভালোভাবেই জানে কীভাবে প্রচলিত নিয়ম ভেঙে চলা একজন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কাজ করতে হয়।"

ভূরাজনীতি ও অর্থনীতির প্রভাব

এই বিপরীত কূটনৈতিক গতিপ্রকৃতি আঞ্চলিক ভূরাজনীতিতে গভীর প্রভাব ফেলছে। এর প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে বাণিজ্য ক্ষেত্রেও, যেখানে যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানের ওপর ১৯% শুল্ক আরোপ করেছে, সেখানে ভারতের ক্ষেত্রে তা ৫০% পর্যন্ত বেড়েছে। এ ছাড়া, পাকিস্তান তাদের বিশাল তেলভান্ডার উন্নয়নের জন্য ট্রাম্পের সঙ্গে একটি চুক্তি করেছে, এবং আরও কিছু বিনিয়োগ চুক্তি নিয়ে আলোচনা চলছে। অর্থনৈতিক সংকটে থাকা পাকিস্তানের জন্য এটি একটি বড় আশার খবর।

বিশ্লেষকদের মতে, পাকিস্তানের এই বাড়তি প্রভাবের পেছনে মূল কারণ হলো তাদের শীর্ষ জেনারেলদের সক্রিয় 'তোষামুদে কূটনীতি'। এর মধ্যে সন্ত্রাসবিরোধী সহযোগিতা, ট্রাম্প-ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সংযোগ এবং জ্বালানি, খনিজ ও ক্রিপ্টোকারেন্সি নিয়ে চুক্তি অন্তর্ভুক্ত। ইসলামাবাদ মনে করছে, আফগানিস্তানে ন্যাটো জোটের বিরুদ্ধে তালেবানকে সহায়তার অভিযোগ কাটাতে ট্রাম্পের মন জয় করা এখন সবচেয়ে জরুরি।

যুদ্ধবিরতি এবং নোবেল প্রস্তাব

মে মাসে ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষের পর ট্রাম্প যুদ্ধবিরতি স্থাপনে সহায়তা করেছেন বলে দাবি করেছে ইসলামাবাদ। এমনকি তারা ট্রাম্পকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন দেওয়ারও প্রস্তাব করেছে। অন্যদিকে, ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি প্রকাশ্যে ট্রাম্পের শান্তি-প্রচেষ্টার ভূমিকা অস্বীকার করেছেন, যা দিল্লি ও ওয়াশিংটনের মধ্যে সম্পর্ককে আরও জটিল করে তুলেছে। পাকিস্তানের সাবেক রাষ্ট্রদূত হুসেইন হাক্কানির মতে, "ট্রাম্প কিছু সাফল্যের গল্প খুঁজছিলেন, আর পাকিস্তান তাঁকে তা দিতে পেরে আনন্দিত।"

সিরাজ/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

আন্তর্জাতিক এর সর্বশেষ খবর

আন্তর্জাতিক - এর সব খবর



রে