ঢাকা, বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫
Sharenews24

ইনশাল্লাহ, আগামী ২৫ তারিখ দেশে ফিরে যাচ্ছি: তারেক রহমান

২০২৫ ডিসেম্বর ১৭ ১১:২৪:৫৪
ইনশাল্লাহ, আগামী ২৫ তারিখ দেশে ফিরে যাচ্ছি: তারেক রহমান

নিজস্ব প্রতিবেদক: দীর্ঘ নির্বাসনের অবসান ঘটিয়ে আগামী ২৫ ডিসেম্বর দেশে ফিরছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বিজয় দিবস উপলক্ষে স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) যুক্তরাজ্য বিএনপি আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি নিজেই এই তারিখ চূড়ান্তভাবে ঘোষণা করেন। এর আগে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তার প্রত্যাবর্তনের বিষয়টি জানিয়েছিলেন।

লন্ডনের দ্য সিটি প্যাভিলিয়ন হলে অনুষ্ঠিত ওই সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে তারেক রহমান বলেন, প্রায় ১৭ থেকে ১৮ বছর ধরে তিনি প্রবাসে অবস্থান করছেন। উপস্থিত নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘দীর্ঘ সময় আপনাদের সঙ্গে ছিলাম। তবে ইনশাল্লাহ, আগামী ২৫ তারিখ আমি দেশে ফিরে যাচ্ছি।’

তার এই ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে মিলনায়তনে উপস্থিত বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে উচ্ছ্বাস ছড়িয়ে পড়ে। মুহূর্তেই করতালি ও স্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে সভাস্থল।

এদিকে দেশে ফেরার দিন লন্ডনের বিমানবন্দরে ভিড় না করার জন্য যুক্তরাজ্য বিএনপির নেতাকর্মীদের প্রতি বিশেষ অনুরোধ জানান তারেক রহমান। তিনি বলেন, বিমানবন্দরে অতিরিক্ত ভিড় বা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হলে তা বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ও দলের সুনামের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। তাই সবাইকে শৃঙ্খলা বজায় রাখার আহ্বান জানান তিনি।

সাম্প্রতিক ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান প্রসঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ফ্যাসিবাদী সরকারের পতন কোনো একটি রাজনৈতিক দলের একক কৃতিত্ব নয়। বরং এটি বাংলাদেশের সর্বস্তরের মানুষের সম্মিলিত আন্দোলনের ফসল।

তিনি বলেন, ছাত্র, শিক্ষক, কৃষক, শ্রমিক, ব্যবসায়ী, পেশাজীবী, নারী-শিশুসহ সব শ্রেণি-পেশার মানুষ রাজপথে নেমে আসায় স্বৈরাচারী সরকার ক্ষমতা আঁকড়ে রাখতে পারেনি এবং দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছে। ২০২৪ সালের গণ-আন্দোলনকে তিনি জনগণের দীর্ঘদিনের সংগ্রামের ধারাবাহিক ফল হিসেবে উল্লেখ করেন।

তবে আন্দোলনের মাধ্যমে বিজয় অর্জন যতটা গুরুত্বপূর্ণ, সেই অর্জন ধরে রাখা তার চেয়েও কঠিন— এমন মন্তব্য করে তারেক রহমান সতর্ক করেন যে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র এখনো থেমে নেই। তিনি বলেন, ১৯৭১ সালের ষড়যন্ত্রকারীরাই ১৯৭৫, ১৯৮১ ও ১৯৯৬ সালে সক্রিয় ছিল এবং আজও তারা নানাভাবে তৎপর। এ অবস্থায় বিএনপির নেতা-কর্মীদের দায়িত্ব হলো দেশের সব মানুষকে সঙ্গে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ থাকা।

আগামী জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, জনগণের সমর্থন পেলে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল সরকার গঠন করতে সক্ষম হবে। সরকার গঠিত হলে জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও জবাবদিহিতা বজায় রাখার অঙ্গীকারও করেন তিনি।

দেশের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, অর্থনীতি, ব্যাংকিং ব্যবস্থা ও শিল্প খাতের গভীর সংকটের কথা উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, ভবিষ্যতে বিএনপির সামনে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে। তবে জাতীয় ঐক্য ও জনগণের সক্রিয় সমর্থনের মাধ্যমেই এসব সংকট মোকাবিলা করা সম্ভব বলে তিনি মনে করেন।

তিনি আরও বলেন, তিনি কোনো কল্পনাবিলাসে নেই; বরং সুস্পষ্ট ও বাস্তবসম্মত পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছেন। জনগণের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি এবং রাষ্ট্র পরিচালনায় কার্যকর পরিকল্পনা উপস্থাপন করাকেই তিনি বিএনপির প্রধান দায়িত্ব হিসেবে দেখছেন।

দলের ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা তুলে ধরে তারেক রহমান বলেন, শিক্ষা খাতে আধুনিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ব্যবস্থা, স্বাস্থ্য খাতে প্রতিরোধমূলক চিকিৎসাভিত্তিক মডেল এবং অর্থনীতিতে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের সহায়তা, যুবকদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও প্রযুক্তিনির্ভর দক্ষতা উন্নয়নে বিএনপি অঙ্গীকারবদ্ধ। এসব উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে ছয় মাসের মধ্যেই জনগণ সুফল পেতে শুরু করবে বলেও আশাবাদ প্রকাশ করেন তিনি।

আলোচনা সভার শুরুতে মহান মুক্তিযুদ্ধ ও চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানের শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করা হয়। একইসঙ্গে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দ্রুত সুস্থতা কামনা করে বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হয়। যুক্তরাজ্য বিএনপির নবগঠিত আংশিক কমিটির আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে এবং সদস্যসচিব খসরুজ্জামান খসরুর সঞ্চালনায় সভাটি সম্পন্ন হয়।

এমজে/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে