ঢাকা, রবিবার, ১৭ আগস্ট ২০২৫
Sharenews24

১০ কোটি ডলার রিজার্ভ চুরির রহস্য ফাঁস!

২০২৫ আগস্ট ১৭ ১০:৫২:০১
১০ কোটি ডলার রিজার্ভ চুরির রহস্য ফাঁস!

নিজস্ব প্রতিবেদক: দীর্ঘ ৯ বছর তদন্তের পর বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির মামলার চার্জশিট চূড়ান্ত হয়েছে। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (সিআইডি) জানিয়েছে, এই সাইবার ডাকাতিতে বাংলাদেশ ছাড়াও অন্তত আরও চার দেশের নাগরিক জড়িত। মামলার চার্জশিট এখন আদালতে জমা দেওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে।

সিআইডি সূত্র অনুযায়ী, এই রিজার্ভ চুরিতে বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, ফিলিপাইন, চীন এবং যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকরা জড়িত ছিল। তদন্তে বাংলাদেশ ব্যাংকের আইটি বিভাগের তৎকালীন কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীর গুরুতর গাফিলতি এবং কোনো কোনো শীর্ষ কর্মকর্তার প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সম্পৃক্ততার প্রমাণ মিলেছে।

সিআইডির এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, আন্তর্জাতিক হ্যাকার চক্র অত্যাধুনিক ম্যালওয়্যার ব্যবহার করে এই চুরি ঘটায়। বাংলাদেশ ব্যাংকের আইটি বিভাগের অসচেতনতার কারণে ওই ম্যালওয়্যারযুক্ত ফাইল খোলা হয়, যার ফলস্বরূপ ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার অবৈধভাবে নিউইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকে স্থানান্তরিত হয়। চার্জশিটে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই)-এর বিস্তারিত প্রতিবেদন অন্তর্ভুক্ত থাকবে, যা বিদেশি নাগরিকদের সম্পৃক্ততার প্রমাণ দেবে। এফবিআই-এর প্রতিবেদন হাতে পেলেই চার্জশিট আদালতে দাখিল করা হবে।

২০১৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারির এই সাইবার ডাকাতি বিশ্বের অন্যতম বড় আর্থিক অপরাধ। হ্যাকাররা প্রায় ১০০ কোটি ডলার চুরি করতে চেয়েছিল, কিন্তু তারা ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার স্থানান্তরে সক্ষম হয়। চুরি হওয়া অর্থের মধ্যে প্রায় ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার ফিলিপাইনে এবং প্রায় ২ কোটি ডলার শ্রীলঙ্কায় পাঠানো হয়। শ্রীলঙ্কা থেকে অর্থ ফেরত আনা সম্ভব হলেও ফিলিপাইনের ক্যাসিনো শিল্পের গোপনীয়তা আইনের কারণে সেখান থেকে অর্থ উদ্ধার জটিল হয়ে পড়ে। এখন পর্যন্ত প্রায় ১ কোটি ৮০ লাখ ডলার উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।

এই ঘটনার তদন্তে সিআইডির পাশাপাশি এফবিআই, ফিলিপাইনের ন্যাশনাল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (এনবিআই) এবং শ্রীলঙ্কার কেন্দ্রীয় ব্যাংক সহযোগিতা করেছে। পরবর্তীতে এই অপরাধের কৌশল ও লেনদেনের ধারা জাতিসংঘকেও জানানো হয়েছে।

২০১৬ সালের ১৫ মার্চ বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা জোবায়ের বিন হুদা মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ও তথ্য ও প্রযুক্তি আইনে এই মামলাটি দায়ের করেন, যা পরে সিআইডির কাছে হস্তান্তর করা হয়। তদন্তে শতাধিক দেশি-বিদেশি সাক্ষীর জবানবন্দি, প্রযুক্তিগত প্রমাণ এবং ড্রিডেক্স ম্যালওয়্যারের কোড পরীক্ষা করা হয়েছে। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, এই হামলার সঙ্গে জড়িত অপরাধীদের শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে এবং চার্জশিট এমনভাবে প্রস্তুত করা হয়েছে যাতে তারা আন্তর্জাতিক পর্যায়েও বিচারের মুখোমুখি হয়।

মিজান/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

অর্থনীতি এর সর্বশেষ খবর

অর্থনীতি - এর সব খবর



রে