ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৯ জানুয়ারি ২০২৫
Sharenews24

HMP ভাইরাস: আসলেই ভয়ঙ্কর নাকি শুধুই গুজব? জানুন সব তথ্য

২০২৫ জানুয়ারি ০৯ ১৮:৩০:০৩
HMP ভাইরাস: আসলেই ভয়ঙ্কর নাকি শুধুই গুজব? জানুন সব তথ্য

নিজস্ব প্রতিবেদক: করোনা মহামারি এবং লকডাউনের পর, বিশ্বে নতুন একটি ভাইরাসের আতঙ্ক ছড়াচ্ছে—এইচএমপি ভাইরাস (Human Metapneumovirus)। বর্তমানে চীনের কিছু অঞ্চলে এই ভাইরাস নিয়ে গুরুতর সতর্কতা জারি করা হয়েছে এবং শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে অনেক রোগী হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে।

এইচএমপি ভাইরাস কী?

এইচএমপি ভাইরাস কোভিড-১৯-এর মতো একটি RNA ভাইরাস, যা শ্বাসযন্ত্রে আক্রমণ করে। তবে এটি কোভিড-১৯-এর ভাইরাস পরিবারের সঙ্গে সম্পর্কিত নয়। সাধারণত এটি সর্দি, কাশি, জ্বর এবং শ্বাসকষ্টের মতো উপসর্গ সৃষ্টি করে। বিশেষ করে শিশু, বৃদ্ধ এবং ক্যান্সার চিকিৎসাধীন রোগীদের মধ্যে এই ভাইরাস গুরুতর শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ সৃষ্টি করতে পারে।

এটি কি কোভিড-১৯-এর মতোই ভয়ঙ্কর?

এইচএমপি ভাইরাস কোভিড-১৯-এর মতো শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ ঘটায়, তবে এটি কোভিডের মতোই বিশ্বব্যাপী মহামারী তৈরি করবে কি না, তা এখনো স্পষ্ট নয়। বিশ্বব্যাপী প্রাথমিক রিপোর্টে দেখা গেছে, এ ভাইরাসের বিস্তার বাড়ছে, তবে এখনও এই ভাইরাসের প্রভাব কোভিড-১৯-এর মতো ব্যাপক নয়।

HMP ভাইরাসের লক্ষণ এবং উপসর্গ:

১. সর্দি, কাশি ২. জ্বর ৩. শ্বাসকষ্ট ৪. ক্লান্তি

বিশেষ করে শিশু এবং বৃদ্ধদের মধ্যে শ্বাসকষ্টের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তবে, সাধারণত হালকা উপসর্গ থাকলে অনেকেই ঘরে বসেই সেরে উঠতে পারেন।

বিশ্বব্যাপী পরিস্থিতি:

২০২৪ সালে চীনে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা বাড়ছে। সম্প্রতি মালয়েশিয়াতেও এই ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। ভারতে সম্প্রতি দুজন শিশু এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে।

এইচএমপি ভাইরাস এবং কোভিড-১৯: মিল এবং পার্থক্য:

যদিও এইচএমপি ভাইরাস এবং কোভিড-১৯ উভয়ই শ্বাসযন্ত্রে আক্রমণ করে, তবে তাদের মধ্যে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পার্থক্যও রয়েছে। কোভিড-১৯ একটি করোনা ভাইরাস, যা শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে, যেমন ফুসফুস, হৃদপিণ্ড এবং কিডনি। অন্যদিকে, এইচএমপি ভাইরাস সাধারণত শ্বাসযন্ত্রের রোগ সৃষ্টি করে এবং তার লক্ষণ বেশি স্বাভাবিক হয়, তবে এর বিস্তার এবং প্রভাব কম গুরুতর।

কেন আতঙ্কিত হওয়ার দরকার নেই?

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, এই ভাইরাসটি এতটা বিপজ্জনক নয় যতটা কোভিড-১৯ ছিল। এটি মোকাবেলা করতে স্বাস্থ্যকর্মীরা যথাযথ সতর্কতা অবলম্বন করছেন এবং জনসচেতনতা তৈরি করা হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার জন্য কোনো বড় ধরনের লকডাউনের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি।

তবে, যেহেতু এটি একটি নতুন ভাইরাস, তাই এর প্রভাব বুঝতে এবং প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। স্বাস্থ্যকর্মীদের পরামর্শ অনুযায়ী, সর্দি, কাশি বা শ্বাসকষ্ট অনুভব করলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

এইচএমপি ভাইরাস নিয়ে যে গুজব ছড়ানো হচ্ছে, তা একটি সতর্কবার্তা হতে পারে, তবে এটি করোনার মতো মহামারী সৃষ্টি করতে যাচ্ছে এমন চিন্তা করার মতো কিছু এখনো পাওয়া যায়নি। তবে, সবাইকে সচেতন থাকা এবং শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ প্রতিরোধে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করা অত্যন্ত জরুরি।

কেএইচ

পাঠকের মতামত:

স্বাস্থ্য এর সর্বশেষ খবর

স্বাস্থ্য - এর সব খবর



রে