ঢাকা, শুক্রবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২৪
Sharenews24

৫০ বছর পর প্রথম নতুন অ্যাজমা চিকিৎসা আবিষ্কার

২০২৪ নভেম্বর ২৯ ২১:৫৪:১০
৫০ বছর পর প্রথম নতুন অ্যাজমা চিকিৎসা আবিষ্কার

নিজস্ব প্রতিবেদক: চিকিৎসা পেশায় নিয়োজিত গবেষকেরা ৫০ বছর পর এই প্রথম অ্যাজমা আক্রান্ত রোগীদের জন্য ইনজেকশনের মাধ্যমে নতুন একটি চিকিৎসা আবিষ্কারের দাবি করেছেন।

গবেষকেরা বলছেন, এই ইনজেকশনটি রোগীর শরীরের একটি বিশেষ ধরনের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে নিয়ন্ত্রণ করে, যা অ্যাজমা ও ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ (সিওপিডি) রোগে সক্রিয় হয়ে ওঠে।

বৃহস্পতিবার বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নতুন ওই ওষুধটির নাম বেনরালিজুমাব। বর্তমানে এই ইনজেকশনটি রোগীদের গুরুতর অবস্থার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হচ্ছে।

তাঁরা আশা করছেন, এই ওষুধটি যুক্তরাজ্যে প্রতিবছর প্রায় ২০ লাখ অ্যাজমা আক্রমণের চিকিৎসায় নিয়মিতভাবে ব্যবহার করা যেতে পারে।

লন্ডনের কিংস কলেজের গবেষক দলটি এই ওষুধকে ‘গেম-চেঞ্জার’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। তাঁদের মতে, এটি অ্যাজমা ও সিওপিডি রোগীদের চিকিৎসায় বিপ্লব ঘটাতে পারে।

গবেষণায় তাঁরা দেখেছেন, অ্যাজমা বা সিওপিডি আক্রমণ সব রোগীর ক্ষেত্রে একইভাবে ঘটে না। এটি নির্ভর করে শরীরের কোন প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা অতি সক্রিয় হচ্ছে।

বেনরালিজুমাব ‘ইওসিনোফিল’ নামে একটি বিশেষ শ্বেত রক্তকণিকা লক্ষ্য করে কাজ করে। ইওসিনোফিল ফুসফুসে প্রদাহ সৃষ্টি ও ক্ষতি করে।

গবেষকরা বলছেন, প্রায় অর্ধেক অ্যাজমা আক্রমণ ও এক-তৃতীয়াংশ সিওপিডি আক্রমণের জন্য দায়ী এই ইওসিনোফিল।

নতুন ওষুধটির একটি পরীক্ষায় ১৫৮ জন রোগীকে তিন মাস পর্যবেক্ষণ করেছেন গবেষকেরা। এই রোগীদের নিরাময়ের ক্ষেত্রে প্রচলিত স্টেরয়েড ব্যবহার করে ব্যর্থতার হার ছিল ৭৪ শতাংশ।

অন্যদিকে বেনরালিজুমাব ব্যবহার করে ব্যর্থতার হার কমে দাঁড়িয়েছিল ৪৫ শতাংশ।

নতুন চিকিৎসায় রোগীরা হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার ঝুঁকি কম অনুভব করেছেন। অনেকের ক্ষেত্রে পুনরায় চিকিৎসারও প্রয়োজন হয়নি। সর্বোপরি মৃত্যুঝুঁকিও হ্রাস পেয়েছে।

পরীক্ষায় অংশ নেওয়া রোগীদের মধ্যে ৫৫ বছর বয়সী অ্যালিসন স্পুনার জানান, তিনি ছোটবেলা থেকেই অ্যাজমায় ভুগছেন। ইনজেকশন নেওয়ার পর তিনি ‘নাটকীয় পরিবর্তন’ অনুভব করেছেন।

অ্যালিসন স্পুনার বলেন, ‘এটি পুরোপুরি অ্যাজমা দূর করে না। তবে এটি নিরাময়ের সবচেয়ে কাছাকাছি যেতে পারে। এটি একটি আশ্চর্য।’

এদিকে ৭৭ বছর বয়সী জিওফ্রে পয়েন্টিং বলেন, ‘স্টেরয়েডের মতো কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া অনুভব করিনি। বরং রাতে ভালো ঘুম হয়েছে এবং জীবন স্বাভাবিকভাবে চলেছে।’

বেনরালিজুমাব এখনো সাধারণ ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত নয়। আগামী বছর এই ইনজেকশন নিয়ে একটি বড় আকারের পরীক্ষা শুরু হবে।

ইনজেকশনটির পরীক্ষা চলবে দুই বছর। পরবর্তীতে ওষুধটির কার্যকারিতা ও খরচ বিবেচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে ব্রিটিশ অ্যাজমা চিকিৎসক ডা. সামান্থা ওয়াকার বলেছেন, ‘এই গবেষণার ফলাফল চমৎকার। তবে দুঃখজনক বিষয় হলো—৫০ বছরে এটি প্রথম নতুন চিকিৎসা।’

আরিফ/

পাঠকের মতামত:

স্বাস্থ্য এর সর্বশেষ খবর

স্বাস্থ্য - এর সব খবর



রে