ঢাকা, মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫
Sharenews24

সূরা আল ইমরান এর সংক্ষিপ্ত তাফসীর

২০২৫ অক্টোবর ২১ ০৯:২০:৩৯
সূরা আল ইমরান এর সংক্ষিপ্ত তাফসীর

নিজস্ব প্রতিবেদক: সূরা আলে ইমরানের শুরুতে আয়াতসমূহকে দুই ভাগে ভাগ করেছেন: 'মুহকাম' (স্পষ্ট বিধানযুক্ত) এবং 'মুতাশাবিহ' (প্রাজ্ঞ আলেম ব্যতীত অন্য কারো পক্ষে বোঝা কঠিন)। তিনি বলেছেন যে, মুহকাম আয়াতসমূহকে অনুসরণ করা উচিত।

আল্লাহ তাআলা এবং আলেমগণ সাক্ষ্য দেন যে, তিনি ব্যতীত কোনো সত্য উপাস্য নেই। আলেমদের এই সাক্ষ্যকে দলিল হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, যা আলেমদের মর্যাদাকে ফুটিয়ে তোলে।

আল্লাহ তাআলা রাজত্বের মালিক। তিনি যাকে ইচ্ছা রাজত্ব দেন এবং যার কাছ থেকে ইচ্ছা রাজত্ব কেড়ে নেন।

আল্লাহকে ভালোবাসার প্রমাণ হিসেবে রাসূল (সা.)-কে অনুসরণ করার কথা বলা হয়েছে। রাসূল (সা.)-এর সুন্নাহ অনুসরণ করাই আল্লাহর প্রতি ভালোবাসার প্রমাণ।

সূরা আলে ইমরানের ৩৫ নম্বর আয়াতে ঈসা (আ.)-এর নানী মারইয়ামের মায়ের ঘটনা দিয়ে শুরু হয়েছে। তিনি আল্লাহর কাছে মান্নত করেছিলেন যে তার গর্ভের সন্তানকে আল্লাহর পথে উৎসর্গ করবেন। যদিও তার মেয়ে হয়েছিল, আল্লাহ তাকে ছেলের চেয়েও বেশি মর্যাদা দিয়েছেন।

৯৬ নম্বর আয়াতে মক্কার বাইতুল্লাহ (কাবা)-এর নির্মাণ ইতিহাস তুলে ধরা হয়েছে। এটি পৃথিবীতে আল্লাহর ইবাদতের জন্য নির্মিত প্রথম ঘর, যা বরকতময় ও হেদায়েতের উৎস। এর মধ্যে ইব্রাহিম (আ.)-এর পদচিহ্নসহ অনেক সুস্পষ্ট নিদর্শন রয়েছে।

হজকে ফরজ করার বিষয়ে আল্লাহ তাআলা অত্যন্ত আবেগপূর্ণ ভাষায় বলেছেন যে, মানুষের উপর আল্লাহর অধিকার হলো এই ঘরের উদ্দেশ্যে সফর করা অর্থাৎ হজ করা, যদি সে পথ চলার সামর্থ্য রাখে।

১০৪ নম্বর আয়াতে ঈমানদারদের আল্লাহকে যথাযথভাবে ভয় করতে এবং মুসলিম না হয়ে মৃত্যুবরণ না করার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে।

আল্লাহর রজ্জুকে (কোরআন ও সুন্নাহ) মজবুতভাবে আঁকড়ে ধরতে এবং বিচ্ছিন্ন না হতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ঐক্যবদ্ধ থাকা মুসলিমদের জন্য ফরজ।

দাওয়াতের গুরুত্ব তুলে ধরে বলা হয়েছে যে, মুসলিম উম্মাহর মধ্যে একদল মানুষ থাকবে যারা মানুষকে কল্যাণের পথে আহ্বান করবে, সৎকাজের আদেশ দেবে এবং অসৎকাজে বাধা দেবে। এই কারণেই মুসলিম উম্মাহ শ্রেষ্ঠ।

সূরা আলে ইমরানের ১৩৯ নম্বর আয়াতে উহুদের যুদ্ধের ঘটনার প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে। বদর যুদ্ধের এক বছর পর সংঘটিত এই যুদ্ধে মুসলিমরা প্রাথমিকভাবে বিজয়ী হলেও, একটি নির্দেশ অমান্য করার কারণে তাদের চরম পরাজয়ের সম্মুখীন হতে হয়েছিল। তবে চূড়ান্তভাবে তারা পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যাননি।

১৪৬ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে যে, উহুদের যুদ্ধে মুসলিমদের কষ্ট ও মানসিক যন্ত্রণা সত্ত্বেও আল্লাহ তাদের সান্ত্বনা দিয়েছেন, কারণ তাদের শত্রুরাও একই ধরনের আঘাত পেয়েছিল।

১৩৩ থেকে ১৩৬ নম্বর আয়াতে মুত্তাকিদের চারটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করা হয়েছে: সুখে-দুঃখে আল্লাহর পথে ব্যয় করা, রাগ দমন করা, মানুষকে ক্ষমা করা এবং কোনো অশ্লীল কাজ বা নিজেদের প্রতি অবিচার করার পর আল্লাহকে স্মরণ করে ক্ষমা চাওয়া। এই বৈশিষ্ট্যগুলো থাকলে আল্লাহ তাদের ক্ষমা ও জান্নাত দান করেন।

সর্বশেষ ১৮৫ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, "প্রত্যেক প্রাণীকে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে। আর কিয়ামতের দিন তোমাদেরকে তোমাদের কর্মের পূর্ণ প্রতিদান দেওয়া হবে। সেদিন যাকে জাহান্নাম থেকে দূরে রাখা হবে এবং জান্নাতে প্রবেশ করানো হবে, সে-ই হবে প্রকৃত সফলকাম। আর দুনিয়ার জীবন ছলনাময় ভোগ ছাড়া আর কিছুই নয়।" এই আয়াতটি দুনিয়ার জীবনের ক্ষণস্থায়ীত্ব এবং পরকালের সাফল্যের গুরুত্বের বিষয়ে জোর দেয়।

মুয়াজ/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

ধর্ম ও জীবন এর সর্বশেষ খবর

ধর্ম ও জীবন - এর সব খবর



রে