ঢাকা, শুক্রবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৫
Sharenews24

কুরআনে বর্ণিত তিন নিরাপত্তা বেষ্টনীর তথ্য মেনে নিলেন বিজ্ঞানীরা

২০২৫ অক্টোবর ১৭ ১৫:৩৪:১১
কুরআনে বর্ণিত তিন নিরাপত্তা বেষ্টনীর তথ্য মেনে নিলেন বিজ্ঞানীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক: পবিত্র কোরআনে মানব সৃষ্টির প্রক্রিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা দেওয়া হয়েছে, যা আধুনিক বিজ্ঞানের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ। প্রায় দেড় হাজার বছর আগে পবিত্র কোরআন মানব সৃষ্টির যে তথ্যগুলো দিয়েছে, আজকের আধুনিক বিজ্ঞান তা একে একে সত্য প্রমাণ করছে।

মহান আল্লাহ তায়ালা আল-কোরআনে সুরা মু'মিনুনের ১২ থেকে ১৪ নম্বর আয়াতে মানব সৃষ্টির সাতটি স্তরের কথা ঘোষণা করেছেন:

মাটির সারাংশ: "আর অবশ্যই আমি মানুষকে সৃষ্টি করেছি মাটির উপাদান থেকে।"

বীর্য: "তারপর তাকে শুক্রবিন্দু রূপে স্থাপন করি এক নিরাপদ ভান্ডারে।"

জমাট রক্ত: "পরে শুক্রবিন্দুকে পরিণত করি জমাট বাঁধা রক্তে।"

মাংসপিণ্ড: "অতপর জমাট বাঁধা রক্তকে পরিণত করি গোশতপিণ্ডে।"

অস্থি-পিঞ্জর: "অতপর গোশতপিণ্ডকে পরিণত করি অস্থিতে।"

অস্থিকে মাংস দ্বারা আবৃতকরণ: "অতপর অস্থিকে ঢেকে দিই গোশত দিয়ে।"

সৃষ্টির পূর্ণত্ব বা রুহ সঞ্চারণ: "তারপর তাকে গড়ে তুলি অন্য এক সৃষ্টি রূপে। অতএব, দেখে নিন সর্বোত্তম স্রষ্টা আল্লাহ কত বরকতময়।"

কোরআনে এই শেষের স্তরকে একটি বিশেষ ও স্বতন্ত্র ভঙ্গিতে বর্ণনা করা হয়েছে। এর কারণ হলো, প্রথম ছয় স্তরে সে পূর্ণত্ব লাভ করেনি। শেষ স্তরে এসে সে সম্পূর্ণ এক মানুষে পরিণত হয়েছে। এই স্তরে এসে তার মধ্যে আল্লাহ তায়ালা রুহ সঞ্চার করেছেন।

সুরা জুমারের ৬ নম্বর আয়াতে আল্লাহ তায়ালা মাতৃগর্ভের পরিবেশের কথা আলোচনা করেছেন এবং বলেছেন যে, শিশুরা মাতৃগর্ভে তিনটি পর্দার অন্তরালে অবস্থান করে। আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানও কোরআনে বর্ণিত তিন স্তরের নিরাপত্তার কথা স্বীকার করে নিয়েছে। এই তিনটি নিরাপত্তা বলয়ের নাম হলো:রেহেম বা জরায়ু,গর্ভফুল বা প্লাসেন্টা,মায়ের পেট।

জরায়ুতে রক্তপিণ্ড ছাড়া সন্তানের আকার-আকৃতি কিছুই তৈরি হয় না। প্লাসেন্টা বা গর্ভফুলের কাজ হলো মায়ের শরীরের রক্ত থেকে পুষ্টি সংগ্রহ করে ভ্রূণ বৃদ্ধি ও সংরক্ষণ করা। পাশাপাশি মায়ের ফুসফুসের মাধ্যমে প্রবেশ করা জীবাণু দ্বারা সংক্রমিত হওয়ার হাত থেকেও ভ্রূণকে রক্ষা করে এই গর্ভফুল। আর মায়ের পেট শিশুকে বাহ্যিক আঘাত থেকে রক্ষা করে।

সুরা আবাসার ১৯ থেকে ২০ নম্বর আয়াতে মহান আল্লাহ বলেছেন:"শুক্রবিন্দু থেকে, তিনি তাকে সৃষ্টি করেন, পর তার পরিমিত বিকাশ সাধন করেন, তারপর তার জন্য পথ সহজ করে দেন।"

অর্থাৎ, আল্লাহ তায়ালা স্বীয় ক্ষমতাবলে মাতৃগর্ভে মানুষকে সৃষ্টি করেন। তারপর তিনিই তার অপার শক্তির মাধ্যমে মাতৃগর্ভ থেকে জীবিত ও পূর্ণাঙ্গ মানব শিশুর বাইরে আসার পথ সহজ করে দেন। ফলে শিশুর দেহ সহি-সালামতে বাইরে চলে আসে এবং মায়েরও এতে তেমন কোনো দৈহিক ক্ষতি হয় না। চিকিৎসাবিজ্ঞানও বলছে, সন্তান যখন ভূমিষ্ঠ হওয়ার সময় হয়, তখন ওভারি প্লাসেন্টা থেকে এক ধরনের গ্রন্থির রস নির্গত হয়, যা প্রসবের পথ ও জরায়ুর মুখকে সন্তান জন্মদানের উপযোগী করে দেয়।এভাবেই মানব সৃষ্টির প্রক্রিয়া নিয়ে কোরআন ও আধুনিক বিজ্ঞানের ভাষ্যে বিস্ময়কর মিল খুঁজে পাওয়া যায়। প্রায় দেড় হাজার বছর আগে অবতীর্ণ কোরআনের এসব নির্ভুল বক্তব্যই প্রমাণ করে কোরআন আল্লাহর পক্ষ থেকে অবতীর্ণ এক মহান ঐশী গ্রন্থ, যা আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর নাজিল হয়েছিল।

মুসআব/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

ধর্ম ও জীবন এর সর্বশেষ খবর

ধর্ম ও জীবন - এর সব খবর



রে