ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
Sharenews24

মিনারুলের চল্লিশা নিয়ে ক্ষোভ ঝাড়লেন শায়খ আহমাদুল্লাহ

২০২৫ সেপ্টেম্বর ১৮ ০৯:৪৩:১২
মিনারুলের চল্লিশা নিয়ে ক্ষোভ ঝাড়লেন শায়খ আহমাদুল্লাহ

নিজস্ব প্রতিবেদক: ঋণের বোঝা সইতে না পেরে রাজশাহী জেলার পবা উপজেলার বামনশিকর গ্রামের মিনারুল ইসলাম তার স্ত্রী ও দুই সন্তানকে হত্যার পর নিজেও আত্মহত্যা করেছেন। এই হৃদয়বিদারক ঘটনা সারাদেশে শোকের ছায়া ফেলেছে। মিনারুলের মৃত্যুর ৪০ দিন পর তার পরিবারের পক্ষ থেকে "চল্লিশা" বা চেহলামের আয়োজন করা হয়।

মিনারুলের পরিবার প্রায় এক লাখ টাকা ধারদেনা করে এই চল্লিশার আয়োজন করে। এতে প্রায় ১২০০ মানুষ অংশ নেন। বাড়ির সামনে ও পেছনে দুটি প্যান্ডেল তৈরি করে খাবারের ব্যবস্থা করা হয়। খাবারের তালিকায় ছিল ভাত, ডাল, মাছ ও মুড়িঘণ্ট। মিনারুলের বাবা রুস্তম আলী জানান, গ্রামবাসীরা তাদের সামর্থ্য অনুযায়ী সহায়তা করেছেন। তিনি আরও বলেন, জমি বিক্রি করে হলেও তিনি এই ঋণ পরিশোধ করবেন।

এই ঘটনার পর বিশিষ্ট ইসলামী ব্যক্তিত্ব শায়খ আহমাদুল্লাহ নিজের ফেসবুকে একটি পোস্টের মাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি উল্লেখ করেন, "ঋণের ভারে যিনি আত্মহত্যা করলেন, ঋণ করে তার চল্লিশা করা হলো।" তিনি আরও বলেন যে, আত্মীয়-স্বজনদের উচিত ছিল নিজেদের টাকা তুলে লোকটির ঋণ পরিশোধ করা, কিন্তু তারা তা করেননি। উল্টো মৃতের পরিবারকে চাপে ফেলে ঋণ করে হলেও চল্লিশা করতে বাধ্য করেছে।

শায়খ আহমাদুল্লাহ এই ঘটনাকে "দীন শিক্ষার অভাব এবং দীন সম্পর্কে অজ্ঞতা যে কতটা নির্মম হতে পারে, এই ঘটনা থেকে তা আমরা নতুন করে উপলব্ধি করলাম" বলে মন্তব্য করেন। তিনি প্রশ্ন তোলেন, "ঋণে জর্জরিত ওই মানুষটির চল্লিশা যারা খেলেন, খাবার কীভাবে তাদের পেটে নামল, ভেবে বিস্মিত হচ্ছি।" তিনি আরও যোগ করেন যে, "ইসলাম অত্যন্ত মৌলিক ও প্রাকৃতিক ধর্ম। ইসলাম যতগুলো আর্থিক ইবাদত আবশ্যক করেছে, সবাই সামর্থ্যবানদের জন্য।" তিনি মনে করেন, ইসলামের ভেতর চল্লিশা নামের যে কুসংস্কার আমরা ঢুকিয়েছি, অনেক এলাকার সেটার ওপর মাসাশা, এমনকি ঋণ কিরা জমি বিক্রি করে হলেও তা পালন করতে হয়।

শায়খ আহমাদুল্লাহ আরও বলেন যে, মানুষ দু'টি ভুল করছে: একদিকে তারা গোঁড়ামির কারণে মৃত ব্যক্তির ঋণ পরিশোধের দায়িত্ব না নিয়ে চল্লিশার মতো অপ্রয়োজনীয় কাজে অর্থ ব্যয় করছে, যা মৃত ব্যক্তির পরিবারের উপর আরও বোঝা সৃষ্টি করছে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, "আমরা যারা মুসলিম আছি, তারা না বুঝে না জেনে ইসলামের নামে এ ধরনের বিদআতে লিপ্ত হচ্ছি এবং এর ফলস্বরূপ একদিকে গুনাহগার হচ্ছি, অন্যদিকে অন্য মানুষের উপর জুলুম চাপিয়ে দিচ্ছি।" তিনি ধর্মীয় শিক্ষার সঠিক প্রয়োগের উপর জোর দেন, যাতে সমাজে কুসংস্কার ও সংকীর্ণতা দূর হয়।

জাহিদ/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে