ঢাকা, সোমবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
Sharenews24

ব্যাংক পরিচালনায় পরিবার সদস্যের সীমা তুলে দেওয়ার দাবি

২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৮ ০৮:৪২:১১
ব্যাংক পরিচালনায় পরিবার সদস্যের সীমা তুলে দেওয়ার দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক: ব্যাংক কোম্পানি আইন সংশোধনীর খসড়া নিয়ে নিজেদের অবস্থান জানিয়েছে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস (বিএবি)। আজ (৭ সেপ্টেম্বর) কেন্দ্রীয় ব্যাংকে পাঠানো এক চিঠিতে সংগঠনটির চেয়ারম্যান আব্দুল হাই সরকার বেশ কিছু প্রস্তাবনা তুলে ধরেন। এর মধ্যে রয়েছে শেয়ারহোল্ডারদের অংশগ্রহণ বাড়ানো, পরিচালনা পর্ষদের বিধিনিষেধ শিথিল করা এবং শেয়ার ধারণ সীমা বৃদ্ধি করা।

বিএবি মনে করে, ব্যাংকের কার্যকারিতা, ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা ও প্রবৃদ্ধির ধারা বিবেচনা করে পরিচালনা পর্ষদের কাঠামো ভিন্নভাবে নির্ধারণ করা উচিত। এতে সফল ব্যাংকগুলো পুরস্কৃত হবে এবং দুর্বল প্রতিষ্ঠানগুলোকে কঠোর নজরদারির মাধ্যমে উন্নতির পথে আনা সম্ভব হবে।

পরিচালকদের মেয়াদ ও পারিবারিক সদস্যসংখ্যা

বর্তমান আইনে একজন পরিচালক সর্বোচ্চ ১২ বছর দায়িত্ব পালন করতে পারেন এবং তিন বছরের বিরতির পর পুনরায় নিয়োগ পাওয়ার সুযোগ থাকে। খসড়া সংশোধনীতে এ মেয়াদ ৬ বছর করার প্রস্তাব থাকলেও বিএবি এটিকে ‘অত্যন্ত কঠোর’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে ৯ বছর করার দাবি তুলেছে। তাদের মতে, অভিজ্ঞ পরিচালকদের ধারাবাহিকতা বিনিয়োগকারীদের আস্থা ও কৌশলগত নেতৃত্বের জন্য অপরিহার্য।

একইভাবে, বর্তমানে এক পরিবার থেকে সর্বোচ্চ তিনজন সদস্য পরিচালনা পর্ষদে থাকতে পারেন। নতুন খসড়ায় তা কমিয়ে দুইজন করার প্রস্তাব দেওয়া হলেও বিএবি এই সীমা শিথিল বা পুরোপুরি বাতিলের দাবি জানিয়েছে। সংগঠনটি আরও প্রস্তাব করেছে, ‘পরিবার’ এর সংজ্ঞা কেবল স্বামী/স্ত্রী ও নির্ভরশীলদের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা হোক, যেমনটি ভারত, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কায় প্রচলিত।

শেয়ার ধারণ ও ভোটাধিকার

বিদ্যমান আইনে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান সর্বোচ্চ ১০% শেয়ার ধারণ করতে পারে। বিএবি এই সীমা বাড়িয়ে ২৫% বা তার বেশি করার দাবি করেছে। তাদের মতে, এতে শেয়ারহোল্ডারদের মালিকানা, দায়িত্ববোধ ও সুশাসন বাড়বে।

অন্যদিকে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রস্তাবিত বিধান অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান ৫% এর বেশি শেয়ার রাখলেও তারা সর্বোচ্চ ৫% ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবে। বিএবি এই প্রস্তাবের তীব্র বিরোধিতা করে এটি বাতিলের সুপারিশ করেছে।

অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব

স্বাধীন পরিচালক: খসড়া সংশোধনীতে পরিচালকের সংখ্যা ১৫-এ নামিয়ে আনতে এবং তাদের মধ্যে ৫০% স্বাধীন পরিচালক রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। তবে বিএবি বিদ্যমান নিয়ম বহাল রাখার পক্ষপাতী। তাদের মতে, অর্ধেক স্বাধীন পরিচালক হলে শেয়ারহোল্ডারদের নিয়ন্ত্রণ দুর্বল হবে এবং প্রবৃদ্ধির বদলে শুধু নিয়মনিষ্ঠা অগ্রাধিকার পাবে।

অন্য ব্যাংকে শেয়ার ধারণ: খসড়ায় একই ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে একাধিক ব্যাংকে উল্লেখযোগ্য শেয়ার ধারণে নিষেধাজ্ঞা আনা হয়েছে। কিন্তু বিএবি বলছে, এটি দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ নিরুৎসাহিত করবে, তাই বিধানটি বাতিল করা দরকার।

খেলাপি হলে পরিচালক পদ: বর্তমানে খেলাপি হলে পরিচালককে এক বছরের জন্য পুনরায় নিয়োগ নিষিদ্ধ করা হয়। প্রস্তাবিত সংশোধনীতে এ সময়সীমা তিন বছর করার কথা বলা হয়েছে। বিএবি বরং এটি ছয় মাসে নামিয়ে আনার পক্ষে।

পরিচালকদের নিয়োগ: অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বীমা বা নিয়ন্ত্রিত কোম্পানির পরিচালকরা যাতে একই সঙ্গে ব্যাংকের পরিচালক হতে পারেন—সে সুযোগ তৈরি করার দাবিও তুলেছে বিএবি।

সালাউদ্দিন/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

অর্থনীতি এর সর্বশেষ খবর

অর্থনীতি - এর সব খবর



রে