ঢাকা, সোমবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫
Sharenews24

বেক্সিমকো-সিঙ্গার বাদ: বাংলাদেশে যে শেয়ারে বাজি ধরল নরওয়ের সরকারি ফান্ড

২০২৫ ডিসেম্বর ২৯ ২০:১৭:৪৭
বেক্সিমকো-সিঙ্গার বাদ: বাংলাদেশে যে শেয়ারে বাজি ধরল নরওয়ের সরকারি ফান্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক: নরওয়ের সরকারি পেনশন ফান্ড যা বিশ্বের বৃহত্তম সার্বভৌম বিনিয়োগ তহবিল দীর্ঘ ছয় বছর পর বাংলাদেশের শেয়ারবাজারে তাদের বিনিয়োগের পরিমাণ কিছুটা বাড়িয়েছে। যদিও বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস এবং সিঙ্গার বাংলাদেশের মতো বড় কোম্পানিগুলো থেকে তাদের বিনিয়োগ পুরোপুরি প্রত্যাহার করে নিয়েছে, তবুও সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশে তাদের তহবিল অবস্থানের একটি ইতিবাচক পরিবর্তন দেখা গেছে।

নরজেস ব্যাংক ইনভেস্টমেন্ট ম্যানেজমেন্টের তথ্য অনুসারে, ২০২৫ সালের জুন শেষে বাংলাদেশে এই তহবিলের মোট বিনিয়োগ দাঁড়িয়েছে ১৪ কোটি ৬৬ লাখ ২০ হাজার ডলার, যা গত বছর ছিল ১৪ কোটি ১৯ লাখ ৩০ হাজার ডলার। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে বিনিয়োগ বেড়েছে প্রায় ৩.৩ শতাংশ।

তহবিলটির বিনিয়োগের এই চিত্র বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, তারা তাদের পোর্টফোলিওতে বড় ধরনের রদবদল ঘটিয়েছে। ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত তথ্য অনুযায়ী, প্রতিষ্ঠানটি ব্র্যাক ব্যাংকে তাদের ৫ শতাংশ শেয়ার অপরিবর্তিত রেখেছে এবং স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসে অংশীদারিত্ব বাড়িয়ে ২.৩৮ শতাংশে উন্নীত করেছে। সিটি ব্যাংক ও এমজেএল বাংলাদেশে তাদের অবস্থান কিছুটা শক্তিশালী করার পাশাপাশি প্রাইম ব্যাংকে অংশীদারিত্ব ৩.৭৩ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৪.৮৮ শতাংশ করেছে। এছাড়া মারিকো বাংলাদেশে নতুন করে বিনিয়োগ করার পাশাপাশি গ্রামীণফোন, বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবল, অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ এবং ওয়ালটনে তাদের বিনিয়োগ স্থিতিশীল রেখেছে।

বিপরীত দিকে, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস এবং সিঙ্গার বাংলাদেশ থেকে নিজেদের পুরোপুরি গুটিয়ে নিয়েছে এই নরওয়েজিয়ান ফান্ড। বাজার সংশ্লিষ্টদের মতে, বেক্সিমকো ফার্মার ভাইস-চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমানের গ্রেপ্তারের পর কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন নিয়ে তৈরি হওয়া আইনি জটিলতা এবং করপোরেট সুশাসনের অভাব বিদেশি বিনিয়োগকারীদের নিরুৎসাহিত করেছে। অন্যদিকে, সিঙ্গার বাংলাদেশ থেকে সরে যাওয়ার কারণ হিসেবে তাদের উচ্চ ঋণের বোঝা এবং স্থানীয় তীব্র প্রতিযোগিতার কারণে ব্যবসায়িক প্রবৃদ্ধিতে পিছিয়ে থাকাকে দায়ী করা হচ্ছে। দীর্ঘমেয়াদি এবং টেকসই বিনিয়োগের ক্ষেত্রে এই প্রতিকূলতাগুলো বিনিয়োগকারীদের আস্থা কমিয়ে দিয়েছে।

বাজার বিশেষজ্ঞরা নরওয়ের এই বিনিয়োগ বৃদ্ধিকে স্থানীয় শেয়ারবাজারের জন্য একটি ইতিবাচক বার্তা হিসেবে দেখছেন। বিদেশি বিনিয়োগ যখন নিম্নমুখী, তখন এই ধরনের বড় ফান্ডের পুনরায় বিনিয়োগ শুরু করা একটি আশার আলো। তবে বিশ্লেষকরা সতর্ক করেছেন যে, বাংলাদেশের বাজারে উচ্চ মানের এবং বড় মূলধনী শেয়ারের সংখ্যা সীমিত হওয়ায় বিদেশি প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের জন্য পোর্টফোলিও বৈচিত্র্যময় করা বেশ কঠিন। তবুও মুনাফা বিদেশে না নিয়ে তা পুনরায় বাংলাদেশের বাজারেই বিনিয়োগ করার এই ধারাটি দেশীয় অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

এমজে/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে