ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫
Sharenews24

‘দুই লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা সিস্টেম থেকে বের হয়ে গেছে’

২০২৫ মে ২১ ২২:২১:৪৯
‘দুই লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা সিস্টেম থেকে বের হয়ে গেছে’

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর জানিয়েছেন, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাওয়ায় দেশের সামষ্টিক অর্থনীতি সংকটে পড়েছে। একসময় রিজার্ভ ৪৮ বিলিয়ন ডলারে থাকলেও তা কমে বর্তমানে ২০ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত নেমে আসে, যার ফলে প্রায় দুই লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা অর্থনৈতিক সিস্টেম থেকে বের হয়ে গেছে। এই অর্থ এখন দেশের বাইরে, ফলে তারল্য সংকট ও ব্যাংকিং খাতে আমানত প্রবৃদ্ধি হ্রাস পেয়েছে।

বুধবার (২১ মে) রাজধানীর একটি হোটেলে ‘বাংলাদেশে আর্থিক খাতের উন্নয়ন’ শীর্ষক এক সেমিনারে এসব কথা বলেন গভর্নর। সেমিনারটি যৌথভাবে আয়োজন করে পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট (পিআরআই), বাংলাদেশ ব্যাংক এবং ইন্টারন্যাশনাল গ্রোথ সেন্টার (আইজিসি)।

গভর্নর বলেন, দেশের অর্থনীতি বর্তমানে দুর্ঘটনাকবলিত অবস্থায় রয়েছে এবং তা পুনর্গঠনে দরকার অর্থনৈতিক বিপ্লব। এই পরিবর্তন আনতে হলে রাজনৈতিকভাবে “জুলাই বিপ্লব” শক্তিশালী করা প্রয়োজন এবং অর্থনৈতিক বৈষম্য দূর করতে হবে।

তিনি বলেন, “যত বেশি আনুষ্ঠানিক খাতে আর্থিক কর্মকাণ্ড পরিচালিত হবে, ততই রাজস্ব আয় বাড়বে। এজন্য নগদবিহীন লেনদেন বা ক্যাশলেস ট্রানজেকশন বাড়ানোর ওপর জোর দিতে হবে।”

তিনি জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অর্থনীতি পুনর্গঠনের চেষ্টা করছে এবং কিছুটা ইতিবাচক অগ্রগতি হয়েছে। তবে পুরোপুরি পুনরুদ্ধার সম্ভব হবে পরবর্তী রাজনৈতিক সরকারের নেতৃত্বে। গভর্নরের প্রত্যাশা, তারা একটি আংশিকভাবে পুনর্গঠিত অর্থনীতি ভবিষ্যতের সরকারের হাতে তুলে দিতে পারবেন।

রিজার্ভ পুনর্গঠনকে এখনকার প্রধান লক্ষ্য হিসেবে চিহ্নিত করে গভর্নর বলেন, প্রবাসী আয়, রপ্তানি এবং বৈদেশিক অর্থায়নের মাধ্যমে ধীরে ধীরে অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করতে হবে। বর্তমানে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২৭ বিলিয়ন ডলার, যা শিগগিরই ৩০ বিলিয়নের ঘরে পৌঁছাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, “ক্যাশলেস অর্থনীতির দিকে এগিয়ে যাওয়ার মাধ্যমে আমরা আর্থিক অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করতে চাই।” বর্তমানে ২০ হাজার এজেন্ট ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করছে, যা শিগগিরই ২৬ হাজার ছাড়াবে। এর ফলে বিশেষ করে ক্ষুদ্রঋণ খাতে বড় পরিবর্তন আসবে বলে তিনি মনে করেন।

এ অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর হাবিবুর রহমান, পিআরআই চেয়ারম্যান জায়দি সাত্তার, প্রিন্সিপাল ইকোনমিস্ট আশিকুর রহমান, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান নাসিরউদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান বিভাগের পরিচালক আনিস উর রহমান এবং পিআরআই নির্বাহী পরিচালক খুরশীদ আলম।

সেমিনারে পিআরআই প্রকাশিত এক গবেষণায় উঠে আসে যে, দেশের ব্যাংকিং খাতে ঋণ ও আমানতের বড় একটি অংশ অল্পসংখ্যক ব্যক্তির হাতে কেন্দ্রীভূত। ব্যাংক ঋণের ৭৫ শতাংশ মাত্র এক শতাংশ অ্যাকাউন্টধারী এবং আমানতের ৪২ শতাংশ শূন্য দশমিক এক শতাংশ অ্যাকাউন্টধারীর দখলে। এর মধ্যে ৭৮ শতাংশ ঋণ গেছে ঢাকা ও চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীদের কাছে।

মামুন/

পাঠকের মতামত:

অর্থনীতি এর সর্বশেষ খবর

অর্থনীতি - এর সব খবর



রে