ঢাকা, সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫
Sharenews24

যুক্তরাজ্যের সঙ্গে বৈঠক করে পাচার হওয়া অর্থ ফেরানোর উদ্যোগ

২০২৫ মার্চ ১৮ ১৯:১৬:৪৭
যুক্তরাজ্যের সঙ্গে বৈঠক করে পাচার হওয়া অর্থ ফেরানোর উদ্যোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশ সরকার পাচার হওয়া অর্থ এবং সম্পদ ফেরানোর জন্য যুক্তরাজ্যের সাহায্য চাইছে। সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী, শেখ হাসিনার শাসনামলে দেশের ব্যাংকিং সিস্টেম এবং অন্যান্য খাত থেকে পাচার হওয়া প্রায় ৭৫ থেকে ১০০ বিলিয়ন ডলার ফেরত আনার লক্ষ্যে একটি রোডম্যাপ তৈরি করা হচ্ছে।

বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রীসহ সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা যুক্তরাজ্য সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে, যাতে ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ দেশে অবৈধভাবে পাচার হওয়া অর্থের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করে। এর আওতায়, পাচারকারীদের বিরুদ্ধে আর্থিক ও ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে সাহায্য চাওয়া হয়েছে।

এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ. মনসুর সম্প্রতি লন্ডনে অল-পার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপের সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন এবং তাদের কাছে বাংলাদেশি ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য অনুরোধ করেছেন।

বাংলাদেশ সরকার ইতোমধ্যেই ১১টি ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে পাচারের অভিযোগ তুলেছে। এদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছেন—অ্যারামিট গ্রুপের মালিক সাবেক ভূমিমন্ত্রী সৈয়দুজ্জামান চৌধুরী, এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম এবং নাসা গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা নজরুল ইসলাম মজুমদার। এরা সকলেই বিভিন্ন ব্যবসায় জড়িত, বিশেষ করে গার্মেন্টস এবং ব্যাংকিং খাতে।

বাংলাদেশের গভর্নর জানিয়েছেন, "যুক্তরাজ্য হলো প্রথম দেশ, যাদের সাহায্য আমরা চাইছি। যদি যুক্তরাজ্যের আইনি ব্যবস্থায় কিছু ইতিবাচক হয়, তাহলে বিশ্বব্যাপী এর প্রতিক্রিয়া হবে।" বাংলাদেশের সরকার আশা করছে, যুক্তরাজ্যের সরকার এই অর্থ ফেরত আনার প্রক্রিয়ায় সহায়তা করবে, এবং পরবর্তীতে অন্যান্য দেশগুলোও একই ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণে আগ্রহী হবে।

এ বছরের শেষ নাগাদ, বাংলাদেশের সরকারের পরিকল্পনা হলো, ১১টি অগ্রাধিকার মামলার অন্তত ৫০ শতাংশ সম্পদ পুনরুদ্ধার করতে এবং ওই গোষ্ঠীগুলোর সব সম্পদ জব্দ করতে সক্ষম হবে। এর সাথে, বাংলাদেশের একটি বিশেষ আইনও তৈরি করা হবে, যা পাচার করা সম্পদ পুনরুদ্ধারের প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করবে।

এর আগে, ২০১০ এবং ২০১৫ সালে বাংলাদেশ বিশ্বব্যাংকের চুরি হওয়া সম্পদ পুনরুদ্ধার উদ্যোগের আওতায় যুক্তরাজ্যের অনুরোধে ১৫ লাখ ডলারের বেশি সম্পদ ফেরত দিয়েছিল। এছাড়াও, ২০০৭ সালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর কাছ থেকে ২৩ কোটি টাকা যুক্তরাজ্যে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছিল।

এখন বাংলাদেশের সরকার আশা করছে, বিশেষ করে যুক্তরাজ্যের সহযোগিতায়, পাচার হওয়া বিপুল পরিমাণ অর্থ ফেরত আনা সম্ভব হবে, যা দেশের আর্থিক স্থিতিশীলতা এবং জনগণের কল্যাণে ব্যবহৃত হবে।

মুসআব/

পাঠকের মতামত:

আন্তর্জাতিক এর সর্বশেষ খবর

আন্তর্জাতিক - এর সব খবর



রে