ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৮ মে ২০২৫
Sharenews24

এলসির নিশ্চয়তা পাচ্ছে না ইসলামী ব্যাংক

২০২৫ মে ০৮ ০৯:৩৯:০৯
এলসির নিশ্চয়তা পাচ্ছে না ইসলামী ব্যাংক

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো কোনো একটি বাণিজ্যিক ব্যাংকের সঞ্চিতি ঘাটতি ৭০ হাজার কোটি টাকায় পৌঁছেছে! ইসলামী ব্যাংকের গোপন রাখা প্রভিশন ঘাটতির বিষয়টি বাংলাদেশ ব্যাংকের ২০২৪ সালের পরিদর্শনে ফাঁস হয়।

ব্যাংকটি এতদিন দাবি করে আসছিল তাদের খেলাপি ঋণ ৩২ হাজার কোটি টাকার মতো, অথচ এখন দেখা যাচ্ছে প্রকৃত পরিমাণ ৬৮ হাজার কোটি টাকা—অর্থাৎ মোট ঋণের ৪২%! প্রভিশন ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৬৯,৮১৬ কোটি টাকা, যা তারা ২০ বছর ধরে পূরণ করতে চায়।

বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতের ইতিহাসে এমন ঘটনা আর ঘটেনি—প্রায় ৭০ হাজার কোটি টাকার প্রভিশন ঘাটতিতে পড়েছে দেশের অন্যতম বড় ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড।

শুধু চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ শাখাতেই ৪১,৯৩৭ কোটি টাকার ঘাটতি! এ শাখার আমানত মাত্র ৩,৯২১ কোটি টাকা, অথচ দায় তৈরি হয়েছে ৫৩ হাজার কোটি টাকা। কোথা থেকে এ বিপুল ঋণ বিতরণ, তা নিয়ে উঠেছে হাজার প্রশ্ন।

ইসলামী ব্যাংক এখন বলছে, তারা আগামী ২০ বছরে ধাপে ধাপে ঘাটতি পূরণ করবে। কিন্তু বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি কেবল ব্যাংকের আর্থিক দুর্বলতা আড়াল করার পন্থা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ব্যাংকটির ২০২৪ সালের শেষে প্রয়োজন ছিল ৭৭ হাজার কোটি টাকার প্রভিশন, অথচ তারা রেখেছে মাত্র ৭,৭১৭ কোটি টাকা। বাকি প্রায় ৭০ হাজার কোটি টাকা ঘাটতি এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু।

ডিসেম্বর পর্যন্ত ইসলামী ব্যাংক খেলাপি ঋণ দেখিয়েছিল মাত্র ৩২,৮১৭ কোটি টাকা। অথচ বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শনে উঠে এসেছে আরও ৩২ হাজার কোটি টাকার গোপন ঋণের তথ্য।

খেলাপির এই বিশাল অঙ্ক বৃদ্ধির ফলে ব্যাংকটির ‘নন-ফান্ডেড’ দায়ও এখন ‘ফান্ডেড’ হিসেবে বিবেচনায় এসেছে, যার অর্থ ব্যাংকটির তহবিল আরও চাপে পড়বে।

ব্যাংকে রাখা আমানতের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রভিশন রাখা বাধ্যতামূলক। নিয়ম অনুযায়ী, নিয়মিত ও খেলাপি ঋণের ভিত্তিতে একাধিক স্তরে প্রভিশন রাখতে হয়।

ইসলামী ব্যাংক যে ঘাটতিতে পড়েছে, তা মানে হলো—ব্যাংকের মূলধন দুর্বল, খেলাপি ঋণ বেড়েছে, এবং আমানতকারীদের অর্থ ঝুঁকিতে পড়েছে।

মুসআব/

পাঠকের মতামত:

অর্থনীতি এর সর্বশেষ খবর

অর্থনীতি - এর সব খবর



রে