ঢাকা, শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫
Sharenews24

যমুনা সার কারখানার এমডিসহ ৮ কর্মকর্তাকে শোকজ

২০২৫ এপ্রিল ১৯ ২২:০৯:৪২
যমুনা সার কারখানার এমডিসহ ৮ কর্মকর্তাকে শোকজ

নিজস্ব প্রতিবেদক: জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে অবস্থিত দেশের অন্যতম বৃহত্তম সার উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান যমুনা সার কারখানায় (জেএফসিএল) ঠিকাদার নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সহ আটজন কর্মকর্তাকে শোকজ নোটিশ ইস্যু করেছে আদালত।

শনিবার (১৯ এপ্রিল) যমুনা সার কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সভাপতি আবু সালেহ মোহা. মোসলেহ উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, তারা আদালতের কারণ দর্শানোর নোটিশ হাতে পেয়েছেন।

এই বিষয়ে গত ১৭ এপ্রিল, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স এ এন এন্টারপ্রাইজ সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে একটি মামলা দায়ের করে, যেখানে তারা ২৪ মাসের জন্য অস্থায়ী ও অন্তর্বর্তী নিষেধাজ্ঞা চেয়েছে।

মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, যমুনা সার কারখানায় “কাজ নাই, মজুরি নাই” ভিত্তিতে দৈনিক হাজিরা ভিত্তিক শ্রমিক-কর্মচারী নিয়োগের জন্য একটি আউটসোর্সিং দরপত্র আহ্বান করা হয়। এ দরপত্রে অংশ নেয় মোট ১২টি প্রতিষ্ঠান। যাচাই-বাছাইয়ে উপজেলার চরপাড়া এলাকার মেসার্স এ এন এন্টারপ্রাইজের দরপত্রকে প্রাথমিকভাবে গ্রহণযোগ্য বলে বিবেচনা করা হয়, কারণ তাদের কমিশন প্রাক্কলিত দরের সমান (১৬ টাকা) ছিল।

তবে পরবর্তীতে রহস্যজনকভাবে সেই সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে রাজধানীর হাতিরপুলস্থ মেসার্স আল মমিন আউটসোর্সিং সার্ভিসেস লিমিটেডকে কার্যাদেশ প্রদানের প্রক্রিয়া শুরু করা হয়, যাদের কমিশন ছিল বেশি (২৫ টাকা), যা সরকারকে অতিরিক্ত খরচে ঠেলে দেয়।

মামলায় যাদের শোকজ করা হয়েছে:

আবু সালেহ মোহা. মোসলেহ উদ্দিন – এমডি ও দরপত্র কমিটির সভাপতি

দেলোয়ার হোসেন – উপমহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন), সদস্য সচিব

ডা. কামরুজ্জামান – ডুয়েট, যন্ত্র কৌশল বিভাগ

মইনুল ইমরান – মহাব্যবস্থাপক (উৎপাদন)

ইকবাল হোসেন – মহাব্যবস্থাপক (হিসাব ও অর্থ)

আব্দুল হামীম – উপমহাব্যবস্থাপক (বাণিজ্যিক)

এ আর এম রেদুয়ানুর রহমান – জনতা ব্যাংক, তারাকান্দি শাখা

মেসার্স আল মমিন আউটসোর্সিং সার্ভিসেস লিমিটেড – অভিযুক্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান

মেসার্স এ এন এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী রাশেদুজ্জামান লিটন অভিযোগ করেন, তার প্রতিষ্ঠানকে ১ মার্চ ২০২৫ থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৭ পর্যন্ত ২৪ মাসের কার্যাদেশ দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছিল। কিন্তু হঠাৎই সেই সিদ্ধান্ত বদলে বেআইনিভাবে মেসার্স আল মমিন-কে কার্যাদেশ দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়। এরপরই তিনি আদালতের দ্বারস্থ হন।

দরপত্র কমিটির সদস্য সচিব দেলোয়ার হোসেন বলেন, “শুরুতে আমাদের কিছু ভুল ছিল। মেসার্স এ এন এন্টারপ্রাইজ প্রয়োজনীয় লাইসেন্স না দিয়ে বাণিজ্যিক লাইসেন্স জমা দেয়, যেটা আমরা বুঝতে পারিনি। এরপর অভিযোগ জমা পড়ে এবং যাচাই করে আমরা আল মমিনকে গ্রহণ করি।”

তিনি আরও জানান, আদালতের নোটিশ পাওয়ার পর কমিটি বিষয়টি নিয়ে বসে সিদ্ধান্ত নেবে।

যমুনা সার কারখানা দেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্পপ্রতিষ্ঠান। এখানকার নিয়োগ ও অর্থ ব্যয়ের প্রতিটি পদক্ষেপ গুরুত্বপূর্ণ। এমন প্রতিষ্ঠানে দরপত্রে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠায় উদ্বেগ তৈরি হয়েছে, যা বৃহৎ আকারে সরকারি অর্থ অপচয়ের সম্ভাবনা তৈরি করছে।

কেএইচ/

পাঠকের মতামত:

অর্থনীতি এর সর্বশেষ খবর

অর্থনীতি - এর সব খবর



রে