ঢাকা, শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫
Sharenews24

যে কারণে বিয়ে করেননি নরেন্দ্র মোদি

২০২৫ এপ্রিল ১৯ ১১:২৪:৪০
যে কারণে বিয়ে করেননি নরেন্দ্র মোদি

নিজস্ব প্রতিবেদক: ভারতের হিন্দু পুনরুত্থানবাদী সংগঠন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ (আরএসএস)-এর প্রচারকদের জন্য বিয়ে নিষিদ্ধ। কট্টর হিন্দুত্ববাদী এই সংগঠনটির অন্যতম প্রাক্তন প্রচারক ভারতের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তাঁর মতো আরও বহু রাজনৈতিক ব্যক্তি জীবনের এক সময় ছিলেন আরএসএসের পূর্ণকালীন কর্মী বা ‘প্রচারক’। তবে পরবর্তীতে অনেকেই সংসার জীবন বেছে নিয়েছেন।

এই তালিকায় সর্বশেষ নাম যুক্ত হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির সাবেক সভাপতি দিলীপ ঘোষের। শুক্রবার সন্ধ্যায় তিনি দলীয় সহকর্মী রিঙ্কু মজুমদারকে বিয়ে করেন। এরপরই শুরু হয় আলোচনা—আরএসএস প্রচারকদের জন্য বিয়ে নিষিদ্ধ হলে তিনি কীভাবে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হলেন?

আরএসএসের নিয়ম অনুযায়ী, একজন প্রচারককে তাঁর সম্পূর্ণ সময় সংগঠনের কাজে ব্যয় করতে হয়। পরিবার গঠনের জন্য সময় বের করলে তা সংগঠনের নীতির পরিপন্থী হয়ে দাঁড়ায়। তাই প্রচারকদের জন্য বিয়ে নিষিদ্ধ।

বাংলা, ওড়িশা, সিকিম ও আন্দামান-নিকোবর অঞ্চলের সহ-ক্ষেত্র প্রচার প্রমুখ ড. জিষ্ণু বসু বলেন, “একজন প্রচারককে পুরো সময়টাই সঙ্ঘের কাজে দিতে হয়। আলাদা করে পরিবারকে দেওয়ার মতো সময় তাঁর হাতে থাকে না। তাই দ্বিতীয় সরসঙ্ঘচালক মাধব গোলওয়ালকরের সময় থেকেই এই নিয়ম চালু রয়েছে।”

তিনি আরও জানান, প্রচারকের দৈনন্দিন খরচ চলে সঙ্ঘের অর্থায়নে। কিন্তু কাউকে যখন রাজনীতিতে পাঠানো হয়, তখন তার খরচ বহন করে সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দল। সে অবস্থায় তিনি আর প্রচারক থাকেন না।

এই নিয়ম অনুযায়ী, ২০১৫ সালে দিলীপ ঘোষকে যখন বিজেপির পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়, তখন থেকেই তিনি আর প্রচারক নন। এরপর তিনি বিধায়ক এবং সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন ও সরকারিভাবে ভাতা পেয়ে থাকেন।

বিজেপির বর্তমান রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, “সঙ্ঘ থেকে যাদের সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদক করে পাঠানো হয়, তারা আর প্রচারক থাকতে পারেন না। তাই দিলীপদার বিয়েতে কোনো নিয়মগত বাধা ছিল না।”

আরএসএসের অনেক প্রভাবশালী নেতা এক সময় প্রচারক ছিলেন, যেমন অটল বিহারী বাজপেয়ী, লালকৃষ্ণ আদবাণী ও নরেন্দ্র মোদি। বাজপেয়ী ও মোদি বিয়ে না করলেও, আদবাণী সংসার জীবন বেছে নেন। তবে তার আগে তিনি প্রচারকের দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ান।

নরেন্দ্র মোদির বিয়ের প্রসঙ্গেও জানা যায়, তিনি ১৭ বছর বয়সে যশোদাবেনের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তবে বহু বছর ধরে তাঁরা আলাদা থাকেন এবং মোদি আর কখনও বিয়ে করেননি।

ড. জিষ্ণু বসু বলেন, “পশ্চিমবঙ্গে এমন ঘটনা বিরল হলেও মহারাষ্ট্র বা ওড়িশার মতো রাজ্যে শত শত উদাহরণ রয়েছে। অনেকেই একসময় প্রচারক ছিলেন, পরে সংসার জীবনে ফিরেছেন।”

সঙ্ঘঘনিষ্ঠ বিজেপি নেতারা জানান, পশ্চিমবঙ্গেও অন্তত দুইজন পরিচিত প্রচারক পরে সংসার জীবন বেছে নিয়েছেন—তাঁরা হলেন কৈলাশ বিজয়বর্গীয় এবং অরবিন্দ মেনন।

কেএইচ/

পাঠকের মতামত:

আন্তর্জাতিক এর সর্বশেষ খবর

আন্তর্জাতিক - এর সব খবর



রে