ঢাকা, শনিবার, ১২ এপ্রিল ২০২৫
Sharenews24

মশিউর সিকিউরিটিজের প্রতারণায় নিঃস্ব বিনিয়োগকারী

২০২৫ এপ্রিল ১০ ১৫:৩৮:০৯
মশিউর সিকিউরিটিজের প্রতারণায় নিঃস্ব বিনিয়োগকারী

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ট্রেক হোল্ডার মশিউর সিকিউরিটিজ লিমিটেড-এর প্রতারণার শিকার হয়ে নিঃস্ব হয়েছেন শতাধিক বিনিয়োগকারী। প্রতিষ্ঠানটির কারসাজির কারণে হারিয়েছেন তারা জীবনের ২৫ বছরের সঞ্চয়, কোটি কোটি টাকা এবং তাদের বিশ্বাস।

বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্ট ফোরামের (সিএমজেএফ) কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীরা তাদের বেদনাদায়ক অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন।

সংবাদ সম্মেলনে কান্নায় ভেঙে পড়েন বিনিয়োগকারী ফারহানা জাফরিন। তিনি বলেন, “আমি আমার চাকরি জীবনের সব সঞ্চিত টাকা—১ কোটি টাকা—মশিউর সিকিউরিটিজে বিনিয়োগ করেছিলাম। আজ আমি নিঃস্ব। একটাও টাকা ফেরত পাইনি।”

বিনিয়োগকারী আবু মাসুদ অভিযোগ করেন, “আমি ৩৬ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছি। কিন্তু তাদের সার্ভারে আমাদের পোর্টফলিও ভুলভাবে দেখানো হতো। সিডিবিএলে আমাদের নম্বরের বদলে নিজেদের নম্বর ব্যবহার করে আমাদের তথ্য গোপন রাখত।”

শাহজাহান আলী জানান, “আমি ৪০ লাখ ১৫ হাজার ৯০০ টাকার চেক দিয়েছিলাম। চেক ডিজঅনার হয়ে গেছে, আজও টাকা পাইনি।”

বিনিয়োগকারীরা সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন, মশিউর সিকিউরিটিজের পক্ষ থেকে তাদের শেয়ার বিক্রি করা হতো এবং জাল সফটওয়্যারে তৈরি করা পোর্টফোলিও পাঠানো হতো, যা মূল পোর্টফোলিওর অনুরূপ হত।

সিডিবিএল কনফার্মেশন মেসেজ যাতে না যায়, সেজন্য গ্রাহকদের মোবাইল নম্বর পরিবর্তন করে নিজেদের নম্বর বসিয়ে দেওয়া হতো।

রেকর্ড ডেটের আগে বেশি দামে শেয়ার বিক্রি করত এবং পরবর্তী সময়ে সেগুলি কম দামে কিনে রেখে, বিনিয়োগকারীরা কোনো লভ্যাংশ পেতেন না।

প্রবাসী বিনিয়োগকারীদের শেয়ার ও ক্যাশ গায়েব করে দেয়া হত।

বিনিয়োগকারীরা জানান, তারা ডিএসই, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ও বাংলাদেশ ব্যাংকে লিখিত অভিযোগ করলেও কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

“বিএসইসি রেগুলেটর হিসেবে আমাদের অর্থ উদ্ধার করতে কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেয়নি। তাদের বিমাতাসুলভ আচরণের জন্য আমরা তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।”

বিনিয়োগকারীদের অভিযোগ অনুযায়ী, প্রতিষ্ঠানটি প্রায় ১৬১ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে।

প্রধান অভিযুক্ত:

শেখ মোগলজান রহমান (মিঠু) – ম্যানেজিং ডিরেক্টর

জিয়াউল হাসান চিসতি (মামুন) – ডিরেক্টর

বিপুল, টুটুল (আইটি জিএম) – পোর্টফোলিও জালিয়াতির মূল হোতা

অবৈধ বিনিয়োগ ও অর্থ পাচারের অভিযোগ

আত্মসাৎ করা অর্থ অবৈধভাবে বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ ও পাচার করা হয়েছে, যেমন:

Hotel Graver Inn, Kuakata

Mazim Agro Ltd

Mazim Trading Corporation

বিলাসবহুল জীবনযাপন, বিদেশে অর্থ পাচার

বিনিয়োগকারীরা সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও অর্থ উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এবং বলেছেন, “আমরা আজ নিঃস্ব। অনেকে কষ্টে মারা গেছেন। এখনই যদি ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, আরও অনেক পরিবার পথে বসবে।”

তারা শাস্তি দাবি করেছেন, “প্রতারকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করতে হবে এবং ডিএসই ও বিএসইসি কর্মকর্তাদের দুর্নীতির বিরুদ্ধে তদন্ত করতে হবে।”

আরিফ/

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে