ঢাকা, শনিবার, ৮ নভেম্বর ২০২৫
Sharenews24

মার্জিন ঋণে কঠোর শর্ত: যারা পাবেন, যারা পাবেন না

২০২৫ নভেম্বর ০৮ ২০:০৭:৫৮
মার্জিন ঋণে কঠোর শর্ত: যারা পাবেন, যারা পাবেন না

নিজস্ব প্রতিবেদক: শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির শেয়ার ক্রয়ে ঋণ সুবিধা বা অর্থায়নের বিষয়ে সরকার নতুন বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। এ বিষয়ে ‘বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (মার্জিন) বিধিমালা, ২০২৫’ শিরোনামে নতুন প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে, যার মাধ্যমে ১৯৯৯ সালের বিদ্যমান মার্জিন বিধিমালা বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে।

তবে, পুরাতন বিধিমালার অধীনে যদি কোনো আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়ে থাকে, সেগুলো সেই বিধিমালার আলোকেই নিষ্পত্তি করা হবে বলে পৃথক এক প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।

নতুন বিধিমালা অনুযায়ী, একজন বিনিয়োগকারী তার নিজস্ব মূলধনের বেশি ঋণ সুবিধা নিতে পারবেন না, অর্থাৎ গ্রাহককে তার ইক্যুইটির বেশি মার্জিন লোন দেওয়া যাবে না। গ্রাহকের ন্যূনতম ইক্যুইটি পাঁচ লাখ টাকা হতে হবে এবং গত এক বছরে গড়ে এই পরিমাণ বিনিয়োগ থাকতে হবে।

পাঁচ লাখ টাকার কম বিনিয়োগ থাকলে মার্জিন সুবিধা পাওয়া যাবে না। যাদের বিনিয়োগ পাঁচ লাখ থেকে ১০ লাখ টাকার মধ্যে, তাদের জন্য মার্জিন অনুপাত হবে ১:০.৫, এবং ১০ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগকারীরা ১:১ অনুপাতে লোন নিতে পারবেন।

নীতিমালা আরও স্পষ্ট করে, বাজারের মূল্য-আয় (পিই রেশিও) অনুপাত যদি ২০-এর বেশি হয়, সেক্ষেত্রেও মার্জিন লোনের অনুপাত হবে ১:০.৫, অর্থাৎ গ্রাহক তার ইক্যুইটির অর্ধেক পর্যন্ত লোন নিতে পারবেন। এছাড়া, বিধিমালায় পরিষ্কারভাবে বলা হয়েছে, কোনো ছাত্রছাত্রী, গৃহিণী ও অবসরপ্রাপ্ত ব্যক্তি মার্জিন লোন নিতে পারবেন না, তবে অর্থসচ্ছল অবসরপ্রাপ্ত বিনিয়োগকারীরা এই সুবিধা পাবেন।

মার্জিন সুবিধা পাওয়ার জন্য শেয়ারবাজারের ‘এ’ ও ‘বি’ ক্যাটাগরির শেয়ার ক্রয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধতা আনা হয়েছে। তবে ‘বি’ ক্যাটাগরির কোম্পানিকে অন্তত ৫ শতাংশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা করতে হবে। লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির শেয়ার ক্রয়ের ক্ষেত্রে মার্জিন অনুপাত নির্ধারণ করা হয়েছে ১:০.২৫, অর্থাৎ সর্বোচ্চ এক-চতুর্থাংশ পর্যন্ত মার্জিন নেওয়া যাবে। আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে, হালনাগাদ অ্যাকচুয়ারিয়াল ভ্যালুয়েশন না থাকলে কোনো অবস্থায়ই লাইফ ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার ক্রয়ে মার্জিন সুবিধা পাওয়া যাবে না।

নতুন বিধিমালায় আরও বলা হয়েছে, যেসব কোম্পানির ফ্রি-ফ্লোট মার্কেট ক্যাপিটালাইজেশন ৫০ কোটি টাকার কম, তাদের শেয়ার ক্রয়ে মার্জিন লোন দেওয়া যাবে না। গ্রাহকের ইক্যুইটি সর্বদা মার্জিন অর্থায়নের ৭৫ শতাংশ বা পোর্টফোলিও মূল্যের ১৭৫ শতাংশ এর নিচে নেমে আসতে পারবে না। এর নিচে নামলে তিন কর্মদিবসের মধ্যে তা সমন্বয় করতে হবে, না হলে লেনদেন স্থগিত থাকবে।

আর যদি ইক্যুইটি ৫০ শতাংশ বা পোর্টফোলিও মূল্য ১৫০ শতাংশ এর নিচে নেমে যায়, তবে প্রতিষ্ঠান কোনো নোটিশ ছাড়াই সিকিউরিটিজ বিক্রি করে (ফোর্সড সেল) হিসাব সমন্বয় করতে পারবে।

নতুন বিধিমালা অনুযায়ী, ১৯৯৯ সালের বিধিমালায় যারা মার্জিন সুবিধা নিয়েছেন, তাদের মধ্যে যেসব শেয়ার এখন মার্জিন অযোগ্য হয়ে পড়বে, সেগুলো ছয় মাসের মধ্যে বিক্রি করে সমন্বয় করতে হবে।

এছাড়া যেসব গ্রাহকের পোর্টফোলিও মূল্য পাঁচ লাখ টাকার কম, তাদের এক বছরের মধ্যে তা পাঁচ লাখে উন্নীত করতে হবে, অন্যথায় সংশ্লিষ্ট মার্জিন অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেওয়া হবে।

সালাউদ্দিন/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে