ঢাকা, সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫
Sharenews24

স্ত্রীর সঙ্গে বাবার পরকী'য়া, পিতার বিরুদ্ধে পুত্রের মামলা

২০২৫ অক্টোবর ১৩ ০৯:৪৩:০৬
স্ত্রীর সঙ্গে বাবার পরকী'য়া, পিতার বিরুদ্ধে পুত্রের মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকার জুরাইন এলাকার বাসিন্দা ইব্রাহিম তার স্ত্রী রুবিনা বেগম এবং বাবা নূর হোসেনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেছেন। তার অভিযোগ, বিদেশ থেকে ফেরার পর তিনি দেখতে পান তার বাবা এবং স্ত্রীর মধ্যে "অসামাজিক কার্যকলাপ" চলছে।

ইব্রাহিম জানান, তিনি ২০০৮ সালে রুবিনা বেগমকে বিয়ে করেন এবং তাদের ১৮ বছরের শান্তিপূর্ণ সংসার ছিল। তাদের তিন সন্তান রয়েছে। পরিবারের আর্থিক সচ্ছলতার জন্য, ইব্রাহিম ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে সৌদি আরবে একটি পোল্ট্রি কোম্পানিতে ড্রাইভিংয়ের কাজ নিয়ে যান। সেখানে ১৫ মাস কাজ করার পর চলতি বছরের এপ্রিলে তিনি দেশে ফেরেন।

দেশে ফিরে আসার কিছুদিন পর, ইব্রাহিম তার স্ত্রীর আচরণে পরিবর্তন লক্ষ্য করেন। একপর্যায়ে চলতি বছরের ১১ এপ্রিল সকালে ঘুম থেকে উঠে রান্নাঘরে গিয়ে তিনি তার স্ত্রী রুবিনা বেগম এবং বাবা নূর হোসেনকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখতে পান। এই ঘটনা দেখার পর তার বাবা দ্রুত পালিয়ে যান। ইব্রাহিম তার স্ত্রীকে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন যে নূর হোসেন তার শ্বশুর এবং বাবার সমতুল্য, এমন ঘটনা কীভাবে ঘটতে পারে। ইব্রাহিম তার বাবাকে তার বয়স (৬৪-৬৫) এবং স্ত্রীর বয়স (৩২-৩৩) উল্লেখ করে বলেন, "এটা হয় না।"

সন্দেহের সত্যতা যাচাই করতে ইব্রাহিম তার স্ত্রীর ফোন কল তালিকা পরীক্ষা করেন এবং তার বাবার সাথে অস্বাভাবিক সংখ্যক কল ও দীর্ঘ কথোপকথনের প্রমাণ পান। তিনি পরিবারের সদস্যদের বিষয়টি জানান, কিন্তু কোনো সমাধান না পেয়ে উল্টো তার বাবা তাকে ঢাকার বাইরে গিয়ে চাকরি করতে এবং মাসে একবার বাড়িতে আসতে বলেন। পরবর্তীতে তার বাবা নূর হোসেন রুবি না বেগমকে তার কাছ থেকে সরিয়ে নেন এবং জানান যে তাকে ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়।

ইব্রাহিম জানান, তার বাবা নূর হোসেন একসময় বিচারপতির গাড়িচালক ছিলেন এবং মুক্তিযোদ্ধার পরিচয় দিয়ে এলাকায় প্রভাব বিস্তার করতেন। তিনি অভিযোগ করেন, তার বাবার এমন সমস্যা আগেও একাধিকবার হয়েছে, কিন্তু তার প্রভাব এবং প্রমাণের অভাবে কেউ তাকে আইনের আওতায় আনতে পারেনি।

ইব্রাহিম বিদেশ থেকে শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের জুরাইন শাখায় প্রায় ১০ লাখ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার পাঠিয়েছিলেন, যা তার স্ত্রী রুবি না বেগম নিয়ে চলে গেছেন বলে তিনি জানান। প্রায় ৯ লাখ টাকা তার স্ত্রীর কাছে ছিল।

কোনো সমাধান না পেয়ে ইব্রাহিম ঢাকা চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে গোয়েন্দা পুলিশকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। তবে মামলার খবর জানার পর তার বাবা নূর হোসেন এবং স্ত্রী রুবি না বেগম আত্মগোপন করেছেন।

ইব্রাহিম বর্তমানে মামলার নথি হাতে নিয়ে আদালতের বারান্দায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন, ক্লান্তি ও ভরসাহীন দৃষ্টিতে। তবে তার বিশ্বাস, আইনের পথেই একদিন তিনি ন্যায়বিচার পাবেন। ইব্রাহিম জানিয়েছেন, যদি তার বাবা ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চান, তবে তিনি ক্ষমা করে দেবেন এবং মামলা তুলে নেবেন। তিনি বলেন, তার বাবা যদি ভুলগুলো স্বীকার না করেন, তাহলে তাকে আইনের আওতায় আনতেই হবে। তার সতেরো বছরের সংসার, তিন ছেলেমেয়ের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ নষ্ট করে ফেলার কারণে তিনি মামলা করতে বাধ্য হয়েছেন।

মুসআব/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে