ঢাকা, শনিবার, ১১ অক্টোবর ২০২৫
Sharenews24

শেয়ারবাজারে ৬ হাজার ৭৯৮ কোটি টাকার রহস্যময় বিনিয়োগের তদন্ত

২০২৫ অক্টোবর ১১ ১৮:৫৪:৫৬
শেয়ারবাজারে ৬ হাজার ৭৯৮ কোটি টাকার রহস্যময় বিনিয়োগের তদন্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের শেয়ারবাজারে কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির মাধ্যমে প্রায় ৬ হাজার ৭৯৮ কোটি টাকার বিনিয়োগের তথ্য পেয়েছে বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। অভিযোগ রয়েছে, ব্যাংক থেকে অনিয়মিত ঋণ নিয়ে এই বিপুল অঙ্কের টাকা শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করা হয়েছে। ওই বিনিয়োগের অর্থ দিয়ে শেয়ারমূল্য কৃত্রিমভাবে বাড়িয়ে কারসাজি করার আশঙ্কা করছে আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থাটি।

বিএফআইইউ এই অনুসন্ধান প্রতিবেদন পাঠিয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)-এর কাছে। বিষয়টি গভীরভাবে তদন্তের জন্য বিএসইসি চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষা এবং বাজারে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে কমিটিকে ৬০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।

তদন্তে দেখা গেছে, ব্যাংকের এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা থাকাকালীন সময়ে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে নামে-বেনামে ও অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ঋণ নেওয়া হয়। পরবর্তীতে সেই ঋণের অর্থ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে খোলা একাধিক হিসাবে জমা করে তা শেয়ারবাজারে বিনিয়োগে ব্যবহার করা হয়। এ প্রক্রিয়ায় ব্যাংকিং ও ট্রাস্টি প্রতিষ্ঠানকে অপব্যবহার করা হয়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।

সরকার পরিবর্তনের পর এসব ঋণ ও বিনিয়োগ সংক্রান্ত মামলায় সংশ্লিষ্ট কয়েকজন গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে রয়েছেন। একই সঙ্গে শেয়ারবাজার থেকে আজীবনের জন্য অবাঞ্ছিত (পারসনা নন গ্রাটা) ঘোষণা করা হয়েছে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে।

তদন্তে চিহ্নিত আটটি প্রতিষ্ঠান হলো— অ্যাবসলুট কনস্ট্রাকশন অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, অ্যাপোলো ট্রেডিং, বেসিকমকো হোল্ডিংস, জুপিটার বিজনেস, নিউ ঢাকা ইন্ডাস্ট্রিজ, ক্রিসেন্ট, ট্রেডনেক্সট ইন্টারন্যাশনাল ও সেন্ট্রাল ল্যান্ড অ্যান্ড বিল্ডিং। এসব প্রতিষ্ঠানকে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ ও পরিচালনা পর্ষদে প্রভাব বিস্তারের সঙ্গে জড়িত বলে প্রাথমিকভাবে শনাক্ত করা হয়েছে।

তদন্তে আরও দেখা গেছে, বেক্সিমকো গ্রুপের একাধিক প্রতিষ্ঠান শেয়ারবাজারে কৃত্রিমভাবে শেয়ারদর বাড়িয়ে কারসাজি করেছে। এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে মোট ৪২৮ কোটি টাকার জরিমানা করা হয়েছে। এর মধ্যে অ্যাপোলো ট্রেডিং, জুপিটার বিজনেস, ক্রিসেন্ট এবং ট্রেডনেক্সট ইন্টারন্যাশনালকে পৃথকভাবে জরিমানা করা হয়েছে।

বিএসইসির এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, জরিমানা আরোপের পর প্রতিষ্ঠানগুলো পুনর্বিবেচনার আবেদন করে। পরবর্তীতে কিছু প্রতিষ্ঠান আদালতে রিট দায়ের করে স্থিতাবস্থা আদায় করায় জরিমানার অর্থ আদায় প্রক্রিয়া বিলম্বিত অবস্থায় রয়েছে।

অন্যদিকে, বেক্সিমকো গ্রুপের কর্মকর্তারা তদন্ত ও জরিমানা বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বিনিয়োগসংক্রান্ত সিদ্ধান্তগুলো অতীতে সরাসরি গ্রুপের প্রধান ব্যক্তি নিজেই নিয়ন্ত্রণ করতেন। সরকারের পরিবর্তনের পর থেকে শেয়ার ও বন্ড বিক্রি করতে না পারায় গ্রুপের কয়েকটি প্রতিষ্ঠান পুঁজিসঙ্কটে পড়েছে।

সালাউদ্দিন/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে