ঢাকা, শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০২৫
Sharenews24

যে কারণে বিএনপিতে গুরুত্বহীন লুৎফুজ্জামান বাবর

২০২৫ জুলাই ১৮ ১৫:০১:৫৩
যে কারণে বিএনপিতে গুরুত্বহীন লুৎফুজ্জামান বাবর

নিজস্ব প্রতিবেদক : ২০০১-২০০৬ সালে বিএনপি সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দাপটের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন লুৎফুজ্জামান বাবর। জেলের গায়ে চুল তুলে, চোখে চশমা পরে তিনি ছিলেন নিজের মন্ত্রণালয়ের পূর্ণমন্ত্রীর থেকেও শক্তিশালী এক ব্যক্তি। তাঁর বিখ্যাত উক্তি ছিলো, “উই আর লুকিং ফর শত্রুজ।”

২০০৭ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকার এবং পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগ শাসনের সময় দীর্ঘদিন কারাগারে ছিলেন বাবর। দুর্নীতি, হত্যা ও অস্ত্র মামলায় আসামি ছিলেন তিনি। বিশেষ করে ‘দশ ট্রাক অস্ত্র’ ও ‘একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা’ মামলায় মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছিলেন। তবে গত বছর সরকার পতনের পর সব মামলায় খালাস পান।

প্রায় ১৭ বছর পর ১৬ জানুয়ারি কারামুক্তি পেয়েও বিএনপির কেন্দ্রীয় স্তরের কোনো নেতৃত্ব বাবরকে বরণ করেননি। শুধু নিজ এলাকা নেত্রকোণা থেকে অগণিত কর্মী-সমর্থক তাঁকে স্বাগত জানিয়েছিলেন। গত ৭ মে লন্ডন থেকে দেশে ফেরেন বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, সেদিন বাবর গুলশানে তাঁর বাসায় উপস্থিত ছিলেন, কিন্তু কেন্দ্রীয় কোনো নেতা তাঁকে বাসার ভেতরে ডাকেননি। অনেকের ভিড়ে শুধু একবার সালাম জানাতে পেরেছিলেন।

১৯৯১, ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে নেত্রকোণা-৪ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়া বাবরকে ২০০৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি মনোনয়ন দেয়নি। তিনি জেলখানা থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছিলেন। ২০১৮ সালে দণ্ডপ্রাপ্ত থাকায় নিজে প্রার্থী হতে পারেননি, তবে তাঁর স্ত্রীকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছিল।

কারামুক্তির পর অনেকেই ভাবেছিলেন বাবর রাজনীতিতে ফিরে শক্ত অবস্থান নেবেন, কিন্তু তা হয়নি। এখন তিনি বিএনপির কেন্দ্রীয় কিংবা জেলা কমিটিতে কোনো পদে নেই, শুধু প্রাথমিক সদস্য।

দলীয় শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা বলছেন, ২০০৭ সালের সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ‘মাইনাস টু’ ফর্মুলা অনুযায়ী বিএনপি ও আওয়ামী লীগ থেকে খালেদা জিয়া ও শেখ হাসিনাকে বিদায় করার উদ্দেশ্যে দুটি সংস্কারপন্থী গ্রুপ গঠিত হয়। বিএনপির সংস্কারপন্থী গ্রুপের নেতা ছিলেন মহাসচিব আব্দুল মান্নান ভুঁইয়া। এই গ্রুপের বেশিরভাগ সদস্য সশস্ত্র বাহিনীর গোয়েন্দা চাপের ফলে সংস্কারপন্থী হয়েছেন, কিন্তু বাবর নিজ উদ্যোগেই সংস্কারপন্থী হন। তিনি ঘনিষ্ঠজনদের বলতেন, কেন খালেদা জিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয় না এবং গ্রেপ্তারের সময় সেনাগোয়েন্দাদের কাছে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্যও করেন।

তত্ত্বাবধায়ক আমলে বাবরের এই আচরণ বিএনপির হাইকমান্ড ভুলতে পারেনি। তাই ২০০৮ সালে তাঁকে দল থেকে দূরে রাখা হয়। যদিও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে স্থানীয় কর্মী-সমর্থকদের সমর্থন পান, কেন্দ্রীয় কমিটিতে স্থান হারিয়ে ফেলেন তিনি।

মুয়াজ/

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে