ঢাকা, সোমবার, ৫ মে ২০২৫
Sharenews24

অবশেষে বন্ধ হলো স্কাইপি

২০২৫ মে ০৫ ১৯:৩২:০৫
অবশেষে বন্ধ হলো স্কাইপি

নিজস্ব প্রতিবেদক: ইন্টারনেটভিত্তিক যোগাযোগ ব্যবস্থায় এক যুগান্তকারী পরিবর্তন আনার মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী লাখো মানুষের কাছে পরিচিত হয়ে উঠেছিল স্কাইপি। ২২ বছরের দীর্ঘ যাত্রা শেষে অবশেষে আজ, ৫ মে ২০২৫, স্কাইপি আনুষ্ঠানিকভাবে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।

স্কাইপি, যা একসময় ছিল বিনামূল্যে ভয়েস এবং ভিডিও কল করার অন্যতম প্রধান মাধ্যম, এখন ইতিহাসের অংশ হতে যাচ্ছে। এর মালিক প্রতিষ্ঠান মাইক্রোসফট জানিয়েছে, স্কাইপির বন্ধ হওয়ার পর মাইক্রোসফট টিমস (Microsoft Teams) অ্যাপ্লিকেশনটি তাদের প্রধান যোগাযোগ মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হবে।

২০০৩ সালে যাত্রা শুরু করা স্কাইপি মুহূর্তেই পৃথিবীজুড়ে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। এটি শুধু ব্যক্তিগত যোগাযোগের মাধ্যম ছিল না, বরং পেশাদার ও আন্তর্জাতিক ব্যবসায়িক যোগাযোগের জন্যও ব্যবহৃত হতো। এর মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে থাকা মানুষরা সহজেই একে অপরের সঙ্গে যুক্ত হতে পারতেন।

২০১০ এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে স্কাইপির মাসিক সক্রিয় ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৩০ কোটি ছাড়িয়ে গিয়েছিল। ফেইসটাইম বা জুম আসার আগেই স্কাইপি পৃথিবীজুড়ে যোগাযোগের ধারণাকে বদলে দিয়েছিল।

২০১১ সালে মাইক্রোসফট স্কাইপিকে ৮.৫ বিলিয়ন ডলারে কিনে নেয় এবং এর পরবর্তী সময়ে এটি মাইক্রোসফটের যোগাযোগ কৌশলের মূল অংশ হয়ে ওঠে। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপ, জুম এবং মাইক্রোসফটের নিজের Teams অ্যাপের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পায়, ফলে স্কাইপি ধীরে ধীরে জনপ্রিয়তা হারাতে থাকে।

২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে মাইক্রোসফট ঘোষণা করেছিল যে, তারা ২০২৫ সালের ৫ মে স্কাইপি বন্ধ করে দেবে এবং এটি নতুন যোগাযোগ প্ল্যাটফর্ম Teams-এ একীভূত করবে। মাইক্রোসফট বলছে, তাদের উদ্দেশ্য হলো পরিষেবাগুলোকে আরও সহজ এবং কার্যকরীভাবে সংযুক্ত করা, যাতে Teams-এ সবধরনের যোগাযোগ ও সহযোগিতা নিয়ে কাজ করা যায়।

এখন থেকে স্কাইপি ব্যবহারকারীরা Microsoft Teams ব্যবহার করে তাদের আগের চ্যাট, কন্টাক্ট এবং হিস্টোরি অ্যাক্সেস করতে পারবেন। Teams-এ স্কাইপির পুরানো ই-মেইল এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে লগ ইন করলেই এই রূপান্তরটি সম্পন্ন হবে।

স্কাইপি ব্যবহারকারীদের জন্য মাইক্রোসফট একটি সময়সীমা নির্ধারণ করেছে, যার মধ্যে তারা নিজেদের চ্যাট, কন্টাক্ট এবং ফাইল ডাউনলোড করে নিতে পারবেন। এই ডেটা ডাউনলোডের সময়সীমা থাকবে জানুয়ারি ২০২৬ পর্যন্ত। এরপর স্কাইপির সমস্ত ডেটা সার্ভার থেকে স্থায়ীভাবে মুছে ফেলা হবে।

স্কাইপি শুধু একটি অ্যাপ নয়, এটি ছিল একটি যুগের অংশ। বিশেষ করে করোনা মহামারি শুরুর আগে পর্যন্ত এটি ছিল রিমোট কমিউনিকেশন বা দূরবর্তী যোগাযোগের জন্য সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য প্ল্যাটফর্ম। আজ, স্কাইপির বিদায়ের দিনে অনেকেই স্মৃতিচারণ করছেন এই প্রযুক্তি সঙ্গীর প্রতি।

স্কাইপি তার যাত্রায় পৃথিবীজুড়ে কোটি কোটি মানুষের জীবনে এক বিশাল প্রভাব ফেলেছিল। এটি যোগাযোগের একটি নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছিল এবং বিশ্বের অনেক প্রান্তের মানুষের মধ্যে সেতুবন্ধন গড়েছিল।

মুয়াজ/

পাঠকের মতামত:

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এর সর্বশেষ খবর

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি - এর সব খবর



রে