ঢাকা, মঙ্গলবার, ৫ আগস্ট ২০২৫
Sharenews24

৮ কারণে বাংলাদেশি ইউটিউবারদের আয় কম

২০২৫ আগস্ট ০৫ ১৪:২৯:৪০
৮ কারণে বাংলাদেশি ইউটিউবারদের আয় কম

নিজস্ব প্রতিবেদক: বিশ্বজুড়ে লাখ লাখ কনটেন্ট নির্মাতা ইউটিউবকে ঘিরেই গড়ে তুলেছেন তাদের ক্যারিয়ার। কেউ কেউ আবার ইউটিউব থেকেই গড়ে তুলেছেন কোটি কোটি ডলারের সাম্রাজ্য।

বাংলাদেশেও অনেক নির্মাতা গুণগত মানের ভিডিও তৈরি করছেন এবং লাখো ভিউ পাচ্ছেন। কিন্তু ইউরোপ, আমেরিকা কিংবা মধ্যপ্রাচ্যের নির্মাতাদের তুলনায় তাদের আয় অনেক কম। কেন এই পার্থক্য? এর পেছনে রয়েছে একাধিক বাস্তব কারণ। নিচে তুলে ধরা হলো সেগুলো—

১. সিপিএম (CPM) কম হওয়া

ইউটিউব কনটেন্ট নির্মাতাদের আয়ের বড় উৎস হলো বিজ্ঞাপন। প্রতি ১,০০০ বিজ্ঞাপন ভিউয়ের জন্য যে পরিমাণ অর্থ দেওয়া হয়, তাকে বলে CPM (Cost Per Mille)।বাংলাদেশে CPM গড়ে মাত্র $0.5, অথচ যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া বা ইউরোপে এটি $5–$15 পর্যন্ত হতে পারে।এটি ঘটে কারণ বাংলাদেশে বিজ্ঞাপনদাতাদের সংখ্যা কম, বাজেট সীমিত এবং আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডগুলো বাংলা কনটেন্টে বিজ্ঞাপন দিতে অনাগ্রহী।

২. দর্শকদের ক্রয়ক্ষমতা কম

যেসব দেশে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বেশি, সেখানে বিজ্ঞাপনদাতারাও বেশি অর্থ ব্যয় করেন।বাংলাদেশে জনসংখ্যা বেশি হলেও বেশিরভাগ মানুষের ব্যয়ক্ষমতা সীমিত। ফলে আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডগুলোর আগ্রহ কম এবং ইউটিউব বাংলাদেশি দর্শকদের জন্য কম মূল্যের বিজ্ঞাপনই দেখায়।

৩. ইউটিউব মনিটাইজেশন নীতিতে ভিন্নতা

দেশভেদে ইউটিউবের মনিটাইজেশন কাঠামো ভিন্ন হয়। বাংলাদেশে এখনো অনলাইন বিজ্ঞাপন ব্যবস্থাপনা পুরোপুরি প্রাতিষ্ঠানিক হয়নি।ডিজিটাল মার্কেটিং এখনো সীমিত পরিসরে হওয়ায় ইউটিউবের বিনিয়োগও কম।

৪. স্পনসর ও ব্র্যান্ড ডিলের অভাব

উন্নত দেশে ইউটিউবাররা বড় ব্র্যান্ডের সঙ্গে চুক্তি করে বাড়তি আয় করেন। কিন্তু বাংলাদেশে বেশিরভাগ ব্র্যান্ড এখনো ইউটিউবারদের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসেবে নিতে চায় না বা বাজেট খুব সীমিত রাখে।

৫. ইন্টারনেট গতি ও ভিডিও মান

উন্নত রেজল্যুশনে ভিডিও দেখতে পারলে ইউটিউব মূল্যবান বিজ্ঞাপন দেখায়। কিন্তু বাংলাদেশের অনেক এলাকা এখনো ধীরগতির ইন্টারনেট ব্যবহারে বাধ্য, যার ফলে কম মানের ভিডিও দেখা হয় — এতে বিজ্ঞাপন থেকেও আয় কমে যায়।

৬. ক্লিকবেইট ও ভুল তথ্যভিত্তিক কনটেন্ট

ভিউ বাড়াতে অনেক নির্মাতা ভুল তথ্য বা বিভ্রান্তিকর শিরোনাম ব্যবহার করেন। এতে ইউটিউবের কাছে বাংলাদেশের কনটেন্টের গ্রহণযোগ্যতা কমে, মনিটাইজেশন সীমিত হয়।

৭. উচ্চ সিপিএম নিসে কনটেন্টের ঘাটতি

ফাইন্যান্স, ইনভেস্টমেন্ট, হেলথ, এডুকেশন, রিয়েল-এস্টেট, টেকনোলজি, সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং — এসব বিষয়ের ভিডিওতে ইউটিউব বেশি অর্থ দেয়।কিন্তু বাংলাদেশি নির্মাতাদের অনেকেই এখনও এসব উচ্চমানের নিসে কনটেন্ট তৈরি করছেন না, ফলে সেই সম্ভাবনাও কম ব্যবহৃত হচ্ছে।

৮. আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডের অনাগ্রহ

বাংলা ভাষার কনটেন্টে এখনও আন্তর্জাতিক কোম্পানির আগ্রহ কম। বেশিরভাগ বিজ্ঞাপনই দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর, যাদের বাজেটও সীমিত। এতে ভিডিওতে দেখা যায় কম দামি বিজ্ঞাপন, যার ফলে ইউটিউবারদের আয়ও কম।

বাংলাদেশে ইউটিউব নির্মাতাদের আয়ের সম্ভাবনা বিশাল হলেও কিছু বাস্তব চ্যালেঞ্জের কারণে তা এখনো পূর্ণমাত্রায় কাজে লাগানো যাচ্ছে না। তবে, ‍যাঁরা উচ্চমানের নিসে কনটেন্ট তৈরি করছেন এবং আন্তর্জাতিক দর্শকের কাছে পৌঁছাতে পারছেন, তাঁরা ইউটিউব থেকেই ভালো আয় করছেন।

মুসআব/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এর সর্বশেষ খবর

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি - এর সব খবর



রে