নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সম্প্রতি চীন সফরে গিয়ে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সাতটি রাজ্যে ব্যবসায়িক সম্ভাবনা নিয়ে কথা বলেছেন। তিনি উল্লেখ করেছেন, ভারতের পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত সেভেন সিস্টার্স নামে পরিচিত সাতটি রাজ্য সম্পূর্ণরূপে স্থলবেষ্টিত। তাদের কাছে সমুদ্রের সঙ্গে যোগাযোগের কোনো সুযোগ নেই। আমরা এই অঞ্চলের জন্য সমুদ্রের একমাত্র অভিভাবক।

ড. ইউনূসের এই বক্তব্য ভারতের নীতিনির্ধারক এবং রাজনীতিবিদদের মধ্যে বিতর্কের সৃষ্টি করেছে এবং অনেকেই এ বক্তব্যকে একটি হুমকি হিসেবে গণ্য করছেন। যদিও দিল্লি আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি। তবে প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সঞ্জীব সান্যাল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে প্রশ্ন তুলেছেন, ‘ভারতের সাতটি রাজ্যের স্থলবেষ্টিত হওয়ার তাৎপর্য আসলে কী?’

বাংলাদেশে নিযুক্ত সাবেক ভারতীয় হাইকমিশনার বীণা সিক্রি ড. ইউনূসের মন্তব্যকে ‘অবাক করা’ বলে অভিহিত করেছেন এবং বলেছেন, উত্তর-পূর্বাঞ্চল ভারতীর অবিচ্ছেদ্য অংশ। তিনি উল্লেখ করেন, ‘উত্তর-পূর্ব ভারতের বঙ্গোপসাগরে প্রবেশের বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে আমাদের একাধিক আনুষ্ঠানিক চুক্তি রয়েছে।’

ভারতের প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞ প্রফুল্ল বকশি মন্তব্য করেছেন, বাংলাদেশ, চীন ও পাকিস্তান বর্তমানে ভারতীয় রাজ্যগুলোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ শিলিগুড়ি করিডর দখল করে নেওয়ার চেষ্টা করছে। তিনি বাংলাদেশকে সতর্ক করে বলেন যে, তারা ভেবে নাকিতে তাদের শ্বাসরোধ করতে পারে।

অ্যাসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমান্ত বিশ্বশর্মা বলেন, ‘ড. ইউনূসের বক্তব্য আপত্তিকর এবং তীব্রভাবে নিন্দনীয়।’ তিনি আরও মন্তব্য করেন, ‘এটি ভারতের কৌশলগত চিকেনস নেক করিডরের দুর্বলতা তুলে ধরেছে।’

ভারতের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসও ড. ইউনূসের বক্তব্যকে ‘খুব বিপজ্জনক’ বলে অভিহিত করেছে এবং বলেছে, কেন্দ্রীয় সরকার উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সুরক্ষা বিষয়ে যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছে না।

কংগ্রেসের গণমাধ্যম বিভাগের প্রধান পবন খেরা বলেন, ‘বাংলাদেশ ভারতকে ঘিরে ফেলতে চীনকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছে, যা আমাদের নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক।’

তথ্যসূত্র: দ্য উইক, টাইমস অব ইন্ডিয়া ও দ্য হিন্দু