ঢাকা, মঙ্গলবার, ১ এপ্রিল ২০২৫
Sharenews24

আ. লীগের দাপুটে নেতাদের কারাগারে ‘মলিন’ ঈদ

২০২৫ মার্চ ৩১ ১৫:৪২:১৫
আ. লীগের দাপুটে নেতাদের কারাগারে ‘মলিন’ ঈদ

নিজস্ব প্রতিবেদক: বেশি দিন আগের কথা নয়, মাত্র সাত মাস আগের কথা। রাজকীয় জীবন ছিল তাদের। ঈদে-পার্বনে জমজমাট অবস্থা ছিল তাদের। দলের নেতাকর্মীরা এসে লম্বা সেলামি-শুভেচ্ছা জানাতেন।

কিন্তু রাজনৈতিক পরিবর্তনের ফলে বাস্তবতা সম্পূর্ণ ভিন্ন হয়ে গেছে। গণঅভ্যুত্থানের পর ৫ আগস্ট যারা পালাতে পারেননি, তাদের অনেকের ঠিকানা এখন কারাগারে। পরিবার-পরিজনবিহীন, দাপুটে নেতাদের এবারের ঈদ অনেক নিরানন্দে কাটছে।

মন্ত্রিপরিষদের সাবেক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান একসময় অর্থ ও ক্ষমতার মালিক ছিলেন। কিন্তু এখন তিনি অসহায় হয়ে ঈদ কাটাচ্ছেন কারাগারের অন্ধকারে।

আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আমির হোসেন আমুও কারাগারে ঈদ পালন করছেন। একসময় তার কাছে অনেক শিল্পপতির হাজিরা দিতো। কিন্তু এখন তার বিপুল পরিমাণ অর্থ পুলিশের কাছে উদ্ধার হয়েছে, যা তার প্রভাব হারানোর নিদর্শন।

সাবেক শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদারও কারাগারে জীবনযাপন করতে গিয়ে রাজনীতি থেকে বিদায় নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি আদালতে বলেছেন, তার বয়স ৭৬ বছর এবং তিনি এই অবস্থায় আরও নির্যাতিত হতে চান না।

যে সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক অতীতে দাপুটে অবস্থানে ছিলেন, তিনিও কারাগারের যন্ত্রণা অনুভব করছেন। গেল মার্চ মাসে দুদকের মামলায় হাজিরা দিতে এসে তিনি সাংবাদিকদের বলেছেন, কথা বললেই সমস্যা বেড়ে যায়।

এছাড়া, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, ড. আব্দুর রাজ্জাক, লে. কর্নেল (অব.) ফারুক খান, শাজাহান খান, কাজী জাফরউল্লাহ, ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, এবং দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মন্ত্রী ডা. দীপু মনিরও ঈদ কারাভ্যন্তরেই কাটছে এবং এই অবস্থায় তাদের পাশে কেউ নেই।

এদের পাশাপাশি, আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, জাতীয় কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট বলরাম পোদ্দার, সাবেক এমপি হাজী মোহাম্মদ সেলিম, জাতীয় সংসদের সাবেক চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজ, বিএম ফজলে করিম চৌধুরী, এম এ মালেক, আব্দুর রহমান বদি, সাবেক এমপি ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন, সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, সাবেক মন্ত্রী ও বাংলাদেশ ওয়াকার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, সাবেক সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, সাবেক ভূমিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ, সাবেক খাদ্য উপমন্ত্রী ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু, সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী, সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলাম, সাবেক ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদবিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, সাবেক খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, সাবেক সংসদ সদস্য সাদেক খান, সাবেক এমপি ও হুইপ মাহবুব আরা বেগম গিনি, সাবেক এমপি মাসুদা সিদ্দীক রোজী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত, ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক বেনজীর হোসেন নিশি সহ মিশেষ করে জেলা-উপজেলা পর্যায়ের অসংখ্য নেতা এবার ঈদ কাটাচ্ছেন কারাগারে।

প্রসঙ্গত, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের ফলে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে। এরপর অনেক নেতা পালিয়ে যান দেশের বাইরে এবং যারা আটক রয়েছেন, তারা দুর্নীতি, হত্যা ও অন্যান্য অভিযোগে বিচারাধীন আজ। কারাবন্দী জীবনের গ্লানি নিয়ে নিত্য বসবাস তাদের।

মারুফ/

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে