ঢাকা, শনিবার, ১৯ জুলাই ২০২৫
Sharenews24

মশার মহামারি: মশারি মিছিলে গর্জে উঠলো নাগরিকরা

২০২৫ মার্চ ০১ ১৮:৩৭:১৯
মশার মহামারি: মশারি মিছিলে গর্জে উঠলো নাগরিকরা

নিজস্ব প্রতিবেদক: খুলনা নগরীতে মশার উপদ্রব চরম আকার ধারণ করেছে। বছরের প্রথম ২ মাসেই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন দুজন। এছাড়া, খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছেন আরও ১২ জন। কিন্তু, নির্বিকার প্রশাসনের কাছে এ পরিস্থিতি দেখে, খুলনার নাগরিক সমাজ তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করেছে এক অভিনব প্রতিবাদে—এটি ছিল ‘মশারি মিছিল’।

শনিবার (১ মার্চ), খুলনা নগরীর হাদিস পার্ক থেকে শুরু হয়ে মশারি মিছিলটি বাংলাদেশ ব্যাংক মোড় ঘুরে আবার হাদিস পার্কে গিয়ে শেষ হয়। মিছিলে অংশ নেন স্থানীয় বাসিন্দা, পরিবেশকর্মী, শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। এ সময় মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা ‘মশার রাজত্ব চলবে আর কত?’, ‘আমরা করব কী, মশা যদি না মরে?’ এবং ‘সিটি করপোরেশন, জবাব দাও!’ সহ নানা স্লোগান দেন। অনেকেই মাথার ওপর মশারি ধরে, কেউ আবার গায়ে জড়িয়ে মিছিলে অংশ নেন।

মিছিলে অংশ নেওয়া নাগরিক সমাজের সদস্যরা অভিযোগ করেছেন, খুলনার বিভিন্ন এলাকায় মশার উপদ্রব ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। তারা জানান, মশা নিধন কার্যক্রম অপ্রতুল, নিয়মিত লার্ভিসাইড স্প্রে করা হয় না, জলাবদ্ধতা ও অপরিচ্ছন্ন ড্রেনের কারণে মশা বংশবিস্তার করছে।

এ বিষয়ে, নাগরিক সমাজের সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট বাবুল হাওলাদার বলেন, “মশারি মিছিল মূলত প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য আয়োজন করা হয়েছে। যদি আমাদের এই প্রতিবাদে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়, তবে নগরবাসী উপকৃত হবে।”

নাগরিক নেতা মাহবুবুর রহমান মুন্না বলেন, “দৌলতপুর, খালিশপুর, শিববাড়ি, গল্লামারী, বসুপাড়া, মুজগুন্নীসহ বিভিন্ন এলাকায় মশার উৎপাত ব্যাপকভাবে বেড়েছে। সন্ধ্যা নামতেই অসহনীয় হয়ে উঠছে মশার উপদ্রব।”

১৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা শরিফুল ইসলাম সেলিম জানান, “গরমের শুরুতেই মশার উপদ্রব বেড়ে স্বাভাবিক জীবন ব্যহত হচ্ছে। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আশপাশে প্রচুর ঝোপঝাড় থাকায় সেখানে মশার নিরাপদ আবাস গড়ে উঠেছে। মাঝেমাঝে সিটি করপোরেশনের মশা নিধন কার্যক্রম দেখা গেলেও তা পর্যাপ্ত নয়।”

খুলনা সিটি করপোরেশনের প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মো. আব্দুল আজিজ জানিয়েছেন, “আমরা মশা নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি। নিয়মিত ফগিং কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে এবং প্রতিটি ড্রেনে ওষুধ ছিটানো হচ্ছে।”

এদিকে, খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক মো. মিজানুর রহমান বলেছেন, “গরমের শুরু থেকেই মশাবাহিত রোগে আক্রান্ত হয়ে রোগীরা হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। কর্তৃপক্ষ যদি দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা না নেয়, তবে ডেঙ্গুর প্রকোপ আরও বাড়তে পারে এবং জনস্বাস্থ্য বিপর্যয়ের মুখে পড়তে পারে।”

সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে খুলনায় কয়েকশ ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়, যাদের অনেকেই মারাত্মক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হন। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তথ্য অনুযায়ী, গত বছর ৭০৭ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হন, এর মধ্যে পাঁচজনের মৃত্যু হয়। এছাড়া, অন্যান্য সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল মিলিয়ে মোট ভর্তি রোগী সংখ্যা ১,৩৩৩ জন, এর মধ্যে মৃত্যু হয় ১৭ জনের।

আদনান/

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে