ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪
Sharenews24

বাবা ঋণখেলাপি, ছেলেরা শেয়ার কারসাজিতে জড়িত!

২০২৪ ডিসেম্বর ১২ ০৮:০৪:১০
বাবা ঋণখেলাপি, ছেলেরা শেয়ার কারসাজিতে জড়িত!

নিজস্ব প্রতিবেদক: চট্টগ্রাম চেম্বারের সাবেক সভাপতি ও ঋণখেলাপি ব্যবসায়ী মোরশেদ মুরাদ ইব্রাহিম এবং জাতীয় পার্টির সংরক্ষিত আসনের সাবেক মহিলা এমপি মেহজাবিন মোরশেদের বড় ছেলে সামির এস্কান্দর। তিনি জীবন বিমা খাতের কোম্পানি প্রোটেক্টিভ ইসলামী লাইফ ইন্সুরেন্সের চেয়ারম্যান।

শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত আর্থিক খাতের প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ফাইন্যান্স পিএলসির (বিডি ফাইন্যান্স) শেয়ার নিয়ে কারসাজি ও লেনদেনে আইন লঙ্ঘনের দায়ে সামিন এস্কান্দর, তার স্ত্রী ও ছোট ভাইসহ মোট আট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে ৭০ কোটি ৫৬ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এর মধ্যে মোরশেদ মুরাদের পরিবারকে ৩৩ কোটি ১২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।

শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) বিডি ফাইন্যন্সের) শেয়ার নিয়ে কারসাজি ও লেনদেনে আইন লঙ্ঘনের দায়ে প্রোটেক্টিভ ইসলামী লাইফের চেয়ারম্যান সামিন এস্কান্দরসহ মোট আট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে ৭০ কোটি ৫৬ লাখ টাকা জরিমানা করেছে। গত মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত বিএসইসির ৯৩৫তম কমিশন সভায় এই জরিমানা করা হয়।

বিএসইসি জানিয়েছে, ২০২০ সালের ৩ আগস্ট থেকে ২০২১ সালের ২০ এপ্রিল পর্যন্ত সময়কালে বিডি ফাইন্যান্সের শেয়ার নিয়ে সংঘটিত কারসাজি আর বিধিবহির্ভূত লেনদেনের সঙ্গে যুক্ত থাকার প্রমাণের ভিত্তিতে আলোচিত জরিমানা করা হয়। যেসব ব্যক্তি ও বিনিয়োগকারীকে জরিমানা করা হয়েছে, তারা হচ্ছেন-সামির সেকান্দার, তার স্ত্রী আফরা চৌধুরী, তার ছোট ভাই মাহির সেকান্দার, আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েম, আনিকা ফারহিন ও আব্দুল মবিন মোল্লা।

অন্যদিকে লেনদেনে আইন ভঙ্গ করায় যে দুটি প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করা হয়, সে দুটি হচ্ছেÑসিটি জেনারেল ইন্স্যুরেন্স ও আনোয়ার গ্যালভানাইজিং লিমিটেড।

আলোচিত ব্যক্তিদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি জরিমানা করা হয়েছে সামির সেকান্দারকে, যার পরিমাণ ৩২ কোটি ২৫ লাখ টাকা। এর মধ্যে একটি অপরাধে তাকে ২৩ কোটি ২৫ লাখ টাকা এবং অন্য এক অপরাধে ৯ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়।

দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২১ কোটি ৯০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে শেয়ারবাজারের কারসাজির জন্য বিতর্কিত বিনিয়োগকারী আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েমকে। তাকে এক অপরাধে ১৭ কোটি টাকা এবং অন্য এক অপরাধে চার কোটি ৯০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। তিনি ২০১০ সালে শেয়ারবাজার কারসাজি নায়কদের মধ্যেও অন্যতম।

এছাড়া আনিকা ফারহানকে সাত কোটি ৫০ লাখ টাকা, আফরা চৌধুরীকে ৩৫ লাখ টাকা এবং আব্দুল মবিন মোল্লাহকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। আর ঘোষণা না দিয়ে শেয়ার কেনার মাধ্যমে আইন লঙ্ঘন করায় আনোয়ার গ্যালভানাইজিংকে সাত কোটি ১০ লাখ টাকা এবং সিটি জেনারেল ইন্স্যুরেন্সকে ৮৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।

ব্যাংক ও আর্থিক ঋণ আদালত সূত্রে জানা গেছে, মোরশেদ মুরাদ ইব্রাহিম ব্যাংকিং খাতের একজন খেলাপি। বেসিক ব্যাংক, এসবিএলএল, ন্যাশনাল ফাইন্যান্সসহ বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে প্রায় ৮০০ কোটি টাকার ঋণ খেলাপি করেছেন তিনি। এসব খেলাপি ঋণ আদায়ে চট্টগ্রাম আর্থিক ঋণ আদালতে মামলা করেছে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো।

এসব মামলায় মোরশেদ মুরাদ, তার স্ত্রী, সংরক্ষিত আসনের সাবেক মহিলা সংসদ সদস্য মেহজাবিন মোরশেদ, তার মা ও দুই ভাইসহ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। এ ছাড়া ঋণ খেলাপি হওয়ায় সাবেক ফার্মাস ব্যাংকের (বর্তমানে পদ্মা ব্যাংক) পরিচালকের পদ থেকে তাকে অপসারণ করা হয়।

উল্লেখ্য, মোরশেদ মুরাদ ইব্রাহিমের পরিবার প্রোটেক্টিভ ইসলামী লাইফ ইন্সুরেন্সকে শেয়ারবাজারের তালিকাভুক্ত করার জন্য বিএসইসি-তে খসড়া প্রোসপেক্টটাস জমা দিয়েছিল। এর ইস্যু ম্যানেজার ছিল আইসিসি এসেস্ট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি লিমিটেড।

মামুন/

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে